৩৫ টি জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামী
উপদেশ
১/ কুফর, শিরক এবং আল্লাহর
অবাধ্যতার যত প্রকার কাজ আছে এর ধারেকাছেও যাবে না।
২/ গীবত এমন একটি পাপ যা থেকে খুব কম মানুষই রেহাই
পায়। সুতরাং সেই অল্প মানুষের অন্তর্ভুক্ত
হও। কারণ আল্লাহর প্রিয় বান্দারা সংখ্যায় অল্পই হয়।
৩/ অধার্মিক বিয়ে করবে না, কারণ কোনো অধার্মিক সঙ্গী ধার্মিকের উপযুক্ত হতে পারে না। বরং এমন কাউকে বিয়ে করো যে তোমাকে আরো বেশি দ্বীনদার হতে সহযোগিতা
করবে।
৪/ শরীরচর্চা এবং জিহাদের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে
সকালের কিছু সময় ব্যয় করবে। এতে মন চাঙ্গা
হবে এবং ভবিষ্যতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণের জন্য শরীর তৈরি হবে।
৫/ কুরআন ও হাদিস পাঠের পাশাপাশি আমাদের পূর্বসুরীদের
জীবনী ও ইতিহাস নিয়মিত পাঠ করবে। উক্ত কাজ ইলম
ও জিহাদের দিকে উৎসাহিত করে। কেউ ইলম গ্রহণ
করে মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশাল খিদমত রেখে যায়, আর কেউ জিহাদে যোগদান করে শহীদ
অথবা গাজী হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে।
৬/ জিহাদ হল মুসলিম ও মুনাফিকের মধ্যে পার্থক্যকারী। কেউ জিহাদে অংশ নেয়, কেউ আর্থিক সহযোগিতা করে,
কেউ জিহাদের প্রচার করে, কেউ জিহাদের দিকে আহ্বান
করে; তারা হচ্ছে মুজাহিদ, মু’মিন এবং মুসলিম। আরেকদল যারা
জিহাদের বিরোধিতা করে, জিহাদ ও মুজাহিদদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে,
মৃত্যুর ভয়ে জিহাদবিমুখ হয়; তারা হচ্ছে মুনাফিক।
৭/ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
প্রতি ভালোবাসা মনে জাগ্রত করবে। কারণ তাঁকে
ভালোবাসা ছাড়া কোনো উম্মাতে মুহাম্মাদী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
৮/ সময় অপচয় আর অর্থ অপচয়, এই দুই অপচয় মানুষকে
ধ্বংস করে।
৯/ ঈদুল আযহার কুরবানিতে ছাগল ভেড়া দিয়ে হলেও একা দেয়া উত্তম,
শরীকে কুরবানি দিয়ে এই ইবাদতকে হালাল হারাম সন্দেহের মধ্যে ফেলতে যাবে না। কারণ যে
তোমার সাথে শরীকে দিচ্ছে তার আয়ের উৎস হালাল নাকি হারাম তুমি জানো না, সেটাই শুনেছ
যেটা সে বলেছে, গোপন কি করেছে সেটা তো জানো না।
১০/ জাহেলী সাহিত্য পড়ার তিনটি কুফল হচ্ছে - এর দ্বারা তুমি
প্রভাবিত হয়ে যেতে পারো, সময় অপচয়ের কারণে গুনাহগার হচ্ছ, অশ্লীলতা বা কুফর শিরক
থাকলে এর জন্যও গুনাহগার হবার সম্ভাবনা থাকে।
১১/ দান করার সময় এই বিষয়টা লক্ষ্য রাখবে যে কিভাবে বা কাকে
দান করলে দানগ্রহীতা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে।
১২/ আতর মাখবে, কারণ এটা সুন্নাহ। সুন্নাহর মাধ্যমে আল্লাহর
সন্তুষ্টি অর্জন করা যায় আর সুন্নাহ মাত্রই সুবাসিত করে।
১৩/ পাপ, হারাম থেকে মুবাহ উত্তম। কিন্তু মুবাহ যখন অনেক সময়
কেড়ে নেয়, ফলে আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরে যায় তখন মুবাহ আর উত্তম থাকে না।
১৪/ মানুষ মরে যায়, থেকে যায় শুধু সৎকর্ম। সুতরাং স্থায়ী সৎকর্মগুলো রেখে যাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত হও।
১৫/ যারা সাহাবীদের বিরোধিতা করে তারা ইসলামকেই এক
প্রকার অস্বীকার করে। কারণ সাহাবিদের
মাধ্যমেই কুরআন সংকলিত হয়েছে, হাদিস সংরক্ষিত থেকেছে। তাই উম্মাতে মুহাম্মাদীর শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম সাহাবিদের বিরোধিতাকারীর
সাথে বারা’ করাই মুমিনদের সাথে ওয়ালা ধরে রাখার উপায়।
১৬/ কাউকে গীবত করতে শুনলে কৌশলে কথা ঘুরানোর চেষ্টা
করো নয়তো স্থান ত্যাগ করো। তবু গীবত শুনবে
না, কারণ গীবত শ্রবণ করাও পাপ।
১৭/ মাদ্রাসাহ গুলো হয়তো শতভাগ পারফেক্ট না। কিন্তু তাই বলে সন্তানকে স্কুলে পাঠাবে না। ঘরে বসিয়ে দরকার হলে অক্ষরজ্ঞানহীন মূর্খ বানাও তবু ‘ইংরেজ
কাফিরদের রেখে যাওয়া বীজ’ স্কুল কলেজে পড়াবে না।
১৮/ তুমি কাউকে একটি পাপে উৎসাহিত করলে তার একটি পাপ
মিলে তোমার পাপ হবে দুটি। সে যদি আরও
পাঁচজনকে উৎসাহিত করে, তবে তোমার পাপ হবে সাতটি। আর সেই পাঁচজন যদি আরও পঞ্চাশজনকে উৎসাহিত করে তবে তোমার ঘাড়ে
সাতান্নটি পাপ জমা হবে। তাই সাবধান। পাপ করলেও গোপন রাখো। কাউকে উৎসাহিত
করো না বা এক বিন্দু সমর্থন দিয়ো না।
১৯/ ইসলামী দাওয়াতের প্রসারে যথাসাধ্য অংশগ্রহণ করো। কারণ আল্লাহর দিকে আহ্বান করাই একজন মুসলিমের ফরয আদায়ের পর সর্বপ্রধান
কাজ।
২০/ ইসলামের সাথে সম্পর্কহীন বিষয়কে ইসলামাইজ করা
গেলে সেটা করতে হবে কিন্তু না করা গেলে সেটা থেকে দূরে থাকতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষ বা অনৈসলামী সকল কিছু থেকে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করতে
হবে।
২১/ প্রতি ওয়াক্তে কুরআন তিলাওয়াতের অভ্যাস করবে।
২২/ জাহেলী ভিডিও ভুল করেও দেখবে না। অনেক সময় অনেক কিছু ভাইরাল হয় কিন্তু সেখানে মিউজিক, নারী
ইত্যাদি থাকে। ভাইরাল হওয়ার খুব ভালো কারণ আছে। তবু দেখবে না। উদাহরণঃ তাহসিনেশনের
ভিডিও।
২৩/ মাসনা সুলাসা রুবা’আ সবই
উত্তম যদি তা দ্বীনের জন্য হয়। আর যে বিয়ে
দ্বীনের জন্য হয়না সেটা ওয়াহিদা হলেও উত্তম না। যারা জাহেল অর্থাৎ প্রাক্টিসিং না তাদেরকে দুই বিয়ে, তিন
বিয়েতে উৎসাহিত করবে না। তারা নিজেদের
নফসের খায়েশ পূরণে ইসলামী বিধানকে ব্যবহার করতে চায়।
২৪/ চালাক চালাক ভাব নিবে না, নিজেকে যত চালাকই মনে করো। বোকারাই নিজেদের
খুব চালাক মনে করে আর ধরা খায়। তাই একজন সাধারণ
সহজ সরল ভাবে চলো, চেহারায় ব্যক্তিত্ব ও গাম্ভীর্য আনো, তাতে সমস্যা নাই। কিন্তু খুব
চালাক,
প্রভাবশালী ইত্যাদি চেহারায় আনবে না, কারণ এগুলো
তোমার মাথা থেকে আসে, চেহারায় না থাকলেও তোমার কাজের মাধ্যমে
নিজেকে বুদ্ধিমান পরিচয় দিতে পারবে।
২৫/ পাপ হল একটি শিকল। এক পাপ করলে সেই শিকলের সাথে অন্যান্য পাপও চলে আসে। তাই শিকল টেনে ধরো আর কেটে ফেলো, আর
তা হল তওবা।
২৬/ আমাদের পুরুষরা ক্রিকেট, গান, মুভি নিয়ে ব্যস্ত আর মহিলারা নাটক, সিরিয়াল। তাই মানুষকে এগুলো থেকে বেঁচে থাকার আহ্বান
জানিয়ে দাওয়াতি কাজে লেগে পড়তে হবে।
২৭/ ঈমানের পরিচর্যার জন্য সর্বদা ইসলামী বিষয়বস্তুর
সংস্পর্শে থাকতে হবে। ইসলামী বই পড়া
তেমন একটি বিষয়। প্রতি সপ্তাহে টার্গেট করে একটি বই কিনবে
এবং পড়ে শেষ করবে।
২৮/ বই শুধু নিজে পড়লেই হবে না। বন্ধু আত্মীয় এবং পরিচিতিদেরকে পড়তে দেয়া বা উপহার দিতে হবে, এটাও
দাওয়াতের অন্যতম মাধ্যম।
২৯/ সোশ্যাল মিডিয়াতে ইসলাম চর্চা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি
করার জন্য সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তাই ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি মাধ্যমে নিয়মিত ইসলামিক পোস্ট
দেয়া, পাঠক সংগ্রহ এবং ফেসবুকের মাধ্যমে ইসলাম প্রচারকে ছোট চোখে
দেখা যাবে না। এতে অংশ নিবে, কারণ
এর প্রভাব অনেক বেশি।
৩০/ জিহাদে গমনের ক্ষেত্রে পরিবারের ব্যাপারে তিনটির
যেকোনো একটি সিদ্ধান্ত নিবে- ক) পরিবার
সহ হিজরত করবে, স্ত্রী সন্তান ও অধিনস্তদের সাথে নিয়ে জিহাদের
ভূমিতে গমন করাই সবচেয়ে উত্তম। খ) যদি
একা জিহাদের জন্য যাও তবে তোমার স্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে যাবে তোমার মৃত্যুর পর সে যেন
বিয়ে করে নেয়। সন্তানদের সুব্যবস্থা করে যাবে, সম্পদ
ও বাসস্থানের ব্যাপারে। গ) স্ত্রীকে
বন্ধন হতে মুক্ত করে যাবে যেন সে কাউকে বিয়ে করে নিতে পারে।
৩১/ অন্য মুসলিম ভাইয়ের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখবে। শুধু মাত্র মাসআলার ভিন্নতার কারণে নিজেদের বিভক্ত করবে না।
৩২/ কাজ করার আগে দেখে নাও বেশি উত্তম কোনটি। উত্তমের মধ্যে সর্বোত্তমটাকে ধরার চেষ্টা করো। জায়েজের পিছনে পোরো না, সুন্নাত ও মুস্তাহাবের পিছনে
পড়।
৩৩/ আলিমদের সুহবতে থাকো।
৩৪/ আল্লাহর পথে থাকো এবং আল্লাহর পথে কাজ করো। এই কাজই সর্বোত্তম কাজ।
৩৫/ কোনো তথ্য প্রচারের আগে জেনে নাও এর সত্যতা।
No comments:
Post a Comment