হিসাব মুযাইয়্যাফের
বাছাই স্ট্যাটাস
ফেসবুকের জনপ্রিয় ফেইক আইডি হিসাব মুযাইয়্যাফ
(যামান মুহাম্মাদ আসাদুয)
আছারি
ধর্মতত্ত্ব-চিন্তা কীভাবে পড়বেন: একটি নমুনা
অনলাইনে ইসলামি ধর্মতত্ত্ব নিয়ে প্রচুর আলাপ হয়। বিশেষ করে
সম্প্রতিকালের “সালাফি
(আছারিয়্যা/হাম্বালিয়্যা)” বনাম
“কালামি
(আশ‘আরিয়্যা-মাতুরিদিয়্যা)” বচসাটি বাঙলাপ্রদেশে খুব মার্কেট
পেয়েছে। দেওবন্দের কিছু তুল্লাব ভাইরা স্বভাবতই কালামি ঘরানার
প্রতিনিধিত্ব/প্রতিরক্ষা করতে গিয়ে মোটামুটি যোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছেন তাদের
প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের দরুন। কিন্তু,
নিখিল বঙ্গ সালাফি (আছারি-কিসিম) ঘরানায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষিত তুল্লাবের
সন্ধান অপ্রতুল। দেখা যাচ্ছে, ইলমি
ধারার বাইরের (যেমন: য়্যুনিভার্সিটি,
কলেজ ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েগুলো অনলাইন বা অফলাইন
থেকে বাজারি-বয়ান কিসিমের লিফলেটীয় তরিকায় “আকিদা” পাঠ নেয়। যদি এটি সহজ ইসলামি
বিশ্বাস-ব্যাবস্থা নিয়ে হতো (যেমন: খোদাবন্দেগী নিয়ে উমার আল-আশকার বা ইবন
জিবরিনের সহজ কিছু আলাপ), তাহলে
সমস্যা ছিলোনা। কিন্তু সমস্যা তখনি হলো,
যখন এই ছেলেমেয়েগুলো ঐ লিফলেটীয় “প্রশিক্ষণ” নিয়েই একদম একাডেমিক তর্কে (ইলমি জাদাল) জড়িয়ে
পড়ে, যেই
আলাপগুলো সাধারণ মানুষের সামনে আসার কথাই ছিলোনা। একাডেমিক তর্কে বিভিন্ন কারণে
নাকচের প্রশ্ন উঠে যা অনেক সময় ‘আইনি
(আক্ষরিক) না, বরং
লুগাউই (সেমান্টিক)। কিন্তু,
লিফলেটীয় ধারার অনেকেই এই নাকচকে ‘আইনি বা আক্ষরিক ধরে নিয়েছেন - ফলাফল:
তাকফির প্রবণতা এবং অযথা অসহিষ্ণুতা। দেখা যাচ্ছে,
এই অসহিষ্ণুতা কালামি ভাইরাও দেখাচ্ছেন। যাই হোক। আছারিয়্যা
কীভাবে পড়া যায় পদ্ধতিগতভাবে, সেটা
নিয়ে আমি একটি নমুনা লিখতে চাচ্ছি যাতে আমিসহ সবাই কিছু হলেও উপকৃত হতে পারি। এই
নমুনা থেকে বাংলাদেশের যেকোন সালাফি ঘরানার মুখলিছ ছেলেমেয়েরা উপকার নিতে পারবে
বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। সাহায্য নিয়েছি উস্তায মাহির,
আব্দ আল-ওয়াহিদ,
আল-আসিরিসহ অন্যান্য কিছু মুতাখাসসিস হতে। আচ্ছা, (ক)
ইবন কুদামার
লুম‘আত
আল-ই‘তিকাদ, ইবন তাইমিয়্যার আল-ওয়াসিতিয়্যা ও আল-তাদমুরিয়্যা, আবু জা’ফার
আহমাদের আল-তাহাউইয়্যা দিয়ে
শুরু করতে হবে। এই
মুতুনগুলো ব্যাখ্যাসহ (শুরুহাত) শেষ না হওয়া পর্যন্ত সামনে আগানো যাবেনা। এগুলোর
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন ক্রমান্বয়ে যেভাবে পড়বেন: ১. সালিহ আলুল-শাইখ ও ইবন উছাইমিনের সকল
শুরুহ/ব্যাখ্যা-মন্তব্য ২.
উস্তাযা কামিলা আল-কাওয়ারির হাশিয়া সহকারে
শারহ আল-কাওয়া‘ইদ
আল-মুছলা পড়া ৩. আল-তাদমুরিয়্যা পড়ার
আগে মানতিক নিয়ে কিছু পড়াশোনা করাটা ওয়াজিব। শুরু করতে পারেন আল-আখদারির মাতন
আল-সুল্লাম আল-মুনাউরাক কিংবা
আল-তাফতাযানির আল-তাহযিব দিয়ে।
সুল্লামের ব্যাখ্যার জন্য
আল-দামানহুরি
ও আব্দ
আল-মালিক আল-সা‘আদি, আর তাহযিবের ব্যাখ্যার জন্য আল-খুবাইসি পড়া
যায়। কেউ যদি আরো ভালো কিছু চায়, তাহলে শারহ
মানতিক আল-মুযাফফার পড়তে
পারে। ৪.
এরপর খুব গুরুত্বের সাথে আল-তাদমুরিয়্যা পড়া শুরু করতে হবে এর ব্যাখ্যা সহকারে
(ক্রমানুযায়ী): - মুহাম্মাদ
আব্দ আল-রাহমান আল-খুমাইসের ব্যাখ্যা
- আব্দ আল-রাহমান বি. নাসির আল-বাররাকের ব্যাখ্যা - ফাখর আল-দিন আল-যুবাইরের ব্যাখ্যা - আহমাদ আল-আবদ আল-লাতিফের ব্যাখ্যা
(আবশ্যক) ৫.
এরপর ইবন আল-কায়্যিমের নুনিয়্যা পড়তে
হবে ইবন উছাইমিন বা ইবন ইসার ব্যখ্যাসহ,
এবং সাথে আব্দ আল্লাহ আল-গুসনের দা‘আওয়া
আল-মুনাউই’ইন
লি শাইখ আল-ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা। ৬.
এখন সময় হয়েছে এ নিয়ে য়্যুসুফ
আল-গাফিসের ব্যাখ্যাগুলো
*সব* পড়ার
এবং শোনার। (আবশ্যক, আবশ্যক, আবশ্যক) ৭. এখন পড়তে হবে মুহাম্মাদ আল-খুমাইসের আল-তাউদিহাত
আল-জালিয়্যা; এটি
আল-তাহাউইয়্যার নিয়ে ইবন আবি-ল ইযযের ব্যাখ্যার উপর সম্প্রসারিত খোলাসা। তুলনা
করার জন্য ইবন আবি-ল ইযযের ব্যখ্যার উপরে
ইবন জিবরিন
ও/বা সাফার
আল-হাওয়ালির আলোচনা
পড়া/শোনা যেতে পারে। ৮.
এরপরে [মাউকিফ
ইবন তাইমিয়্যা মিন (আল-আশা‘ইরা, আল-মু‘তাযিলা, আল-সুফিয়্যা, আল-ফালাসিফা)] - এই বইগুলো পড়তে হবে। সাথে পড়তে হবে আব্দ
আল-কাদির সুফির আল-উসুল
আল-লাতি বানা ‘আলাইহা
আল-মুবতাদি‘আ।
৯. আল-সাফফারিনির
আল-দুররা আল-মুদিয়্যা,
ইবন আবি যাইদ আল-কাইরাওয়ানির আল-রিসালা, ইবন আল-বান্নার আল-মুখতার, আবু আমর আল-দানির রিসালা আল-ওয়াফিয়্যা পড়া। ১০.
এরপরে আল-সাবুনি, আল-আজুরি,
আল-লালিকা’ই, আব্দ আল্লাহ বি. আহমাদ বি. হাম্বালের সকল
লেখনী, এবং
হাফিয আল-হাকামির মা‘আরিজ আল-কাবুল পড়ে শেষ করতে হবে।
(খ) ইবন তাইমিয়্যার দীর্ঘ রচনাগুলো পড়ার আগে
কালামি ধারা নিয়ে কিছুটা হলেও ধারণা নিতে হবে: ১. প্রথমে হাসসান আল-রুওয়াই‘আনের আকিদাত আল-আশা‘ইরা দিরাসা নাকদিয়্যা-র মতো উপক্রমনিকা কিছু পড়তে হবে। ২.
এরপরে আশ‘আরি
মাদ্রাসা হতে সরাসরি কিছু পড়তে হবে:
- বুরহান আল-দিন ইব্রাহিম আল-লাকানির জাউহারাত আল-তাউহিদ, সাথের আল-বাইজুরির ব্যাখ্যা। - মুহাম্মাদ আল-সানুসির উম্ম
আল-বারাহিন, সাথে
আহমাদ বি. ইসা আল-আনসারির ব্যাখ্যা।
- শিহাব আল-দিন আল-মালিকি আল-তিলমিসানির ইদা’আত
আল-দুজুন্না, সাথে
আব্দ আল-গানি আল-নাবুলসির ব্যাখ্যা।
প্রারম্ভের পড়াশোনায় আল-গাযালির কাওয়া‘ইদ
আল-‘আকা’ইদ এবং আল-দারদিরের আল-খারিদা আল-বাহিয়্যা সংযোজন
করা যেতে পারে। পরের ধাপগুলোতে আল-বাইদাউইর
তাওয়ালি‘ আল-আনওয়ার, আল-বাইহাকির আল-ই‘তিকাদ দেখা
যেতে পারে। সংযোজন হিসেবে মুহাম্মাদ বি. ‘আরাফার হাশিয়াত
আল-দাসুকি ‘আলা
উম্ম আল-বারাহিন ও
মুহাম্মাদ আল-সিনবাউইর হাশিয়া
ইবন আল-আমির ‘আলা
শারহ জাউহারাত আল-তাউহিদ পড়া
উচিত। ৩.
এরপর কিছু বিশ্লেষণী লেখাজোকা পড়তে হবে:
- আব্দ আল-রাহমান আল-মাহমুদের আল-কাদা ওয়া আল-কাদর - সাফার আল-হাওয়ালির মানহাজ আল-আশা‘ইরা
(সাথে আহমাদ সালিমের তা‘লিকাত) - আব্দ আল্লাহ আল-গামিদির আল-রাদ্দ
আল-শামিল ‘আলা
উমার কামিল - আব্দ
আল্লাহ আল-কারনির কিছু বই: (হাকিকাত আল-মু‘জিযা, উসুল আল-মুখালিফিন লি আহল আল-সুন্না ফিল
ইমান, আল-খিলাফ
আল-‘আকদি
ফি বাব আল-কাদর, আল-মা‘রিফা ফি আল-ইসলাম) - আব্দ আল-দা‘জানির মানহাজ ইবন তাইমিয়্যা আল-মা‘রিফি ৪. এরপরে পড়তে হবে আবু আল-হাসান আল-আশ‘আরির:
- আল-ইবানা - আল-লুমা‘ - রিসালা ইলা আহল আল-ছুগার - ওনার কিছু রচনাবলী (মাকালাত) (বিশেষ করে আহল আল-হাদিছ নিয়ে) ৫.
এটুকু পড়াশোনা হলে সরাসরি আশ‘আরি
আকাবির বা বাঘা-বড় বিশেষজ্ঞদের রচনাবলীতে যাওয়া যাবেনা। তার আগে তাদের চিন্তাধরণ
নিয়ে কিছু পড়াশোনা করতে হবে: - আল-‘আজলানের আরা’
আবিল হাসান আল-সুবকি আল-ই‘তিকাদিয়্যা - আহমাদ আল আব্দ আল-লাতিফের মানহাজ
ইমাম আল-হারামাইন ফি দিরাসা আল-‘আকিদা - আহমাদ আল-গামিদির আল-বাইহাকি ওয়া মাউকিফুহ মিন
আল-ইলাহিয়্যাত - আব্দ
আল্লাহ আল-মুল্লার আল-তাফতাযানি
ওয়া মাউকিফুহ মিনা আল-ইলাহিয়্যাত - মুহাম্মাদ
ইসহাকের মানহাজ
আল-হাফিয ইবন হাজার আল-‘আসকালানি
ফি আল-‘আকিদা - মুহাম্মাদ আল-শায়ি‘য়ের আরা’
ইবন হাজার আল-হাইতামি আল-ই‘তিকাদিয়্যা (গ)
এই পর্যায়ে এসে:
১. ইবন
তাইমিয়্যার বড় বড় রচনাগুলোর সময় হয়েছে:
- মাজমু‘ আল-ফাতাওয়া
হতে নির্বাচিত আকিদা-অংশগুলো - আল-ইসতিগাছা - আল-ফাতওয়া আল-হামাউইয়্যা - আল-ওয়াসিয়্যা আল-কুবরা - শারহ আল-আসবাহানিয়্যা - আল-জাওয়াব আল-সাহিহ - আল-নুবুওওয়াত (আগে ইবন আল-কায়্যিমের শিফা
আল-‘আলিল পড়ুন) - মিনহাজ আল-সুন্না - দার’
তা‘আরুদ
আল-আকল ওয়া আল-নাকল (খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে,
মুতালা‘আ
করতে হবে; এবং
আগে ইবন আল-কায়্যিমের মুখতাসার
আল-সাওয়া‘ইক পড়া
উচিত) - বায়ান
তালবিস আল-জাহমিয়্যা - আল-রাদ্দ
‘আলা
আল-মান্তিকিয়্যিন - আল-ইস্তিকামা - আল-তিস’য়িনিয়্যা এবং
সাথে ইবন কায়্যিম আল-জাউযিয়্যার
সকল রচনা
পরে শেষ করা।
২. এখন আশ‘আরি
ঘরানার বাঘা বাঘাদের রচনাবলী পড়তে পারেন।
(ঘ) এরপর: ১.
আল-সাফফারিনির লাওয়ামি‘ আল-আনওয়ার, আল-যাহাবির আল-মুনতাকা, আবু আল-কাসিম আল-তাইমির আল-হুজ্জা
ফি বায়ান আল-মাহাজ্জা, ইবন
বাত্তা আল-‘উকবারির আল-ইবানা
আল-কুবরা, আবু
উবাইদের কিতাব
আল-ইমান (সাথে
আল-গুফাইসের শারহ), আল-মাকরিযির তাজরিদ
আল-তাউহিদ, আল-‘ইমরানির আল-ইনতিসার, ইবন আল-ওয়াযিরের ইছার আল-হাক্ক (ইত্যাদি) পড়া। ২. তাউহিদ আল-উলুহিয়্যা নিয়ে নাজদি
ঘরানার স্বাদ নিতে মুহাম্মাদ বি. আব্দ আল-ওয়াহহাবের কিতাব আল-তাউহিদ ও কাশফ আল-শুবুহাতের উপর ভিত্তি করে কিছু উলামার ব্যাখ্যা
শুনতে হবে (সালিহ আলু-ল শাইখ, ইবন
‘উছাইমিন, মুহাম্মাদ আল-হাবদান, আল-গুনাইমান, আল-ফাউযান), সাথে আল-দিজির মিনহাত আল-হামিদ, ইবন কাসিমের হাশিয়া,
আল-আলবানির
আল-তাওয়াসসুল। ৩.
এগুলো পড়া হলে: - আব্দ
আল-লাতিফের মিনহাজ
আল-তা’সিস - আল-কুসাইমির সিরা‘
বাইনা আল-ইসলাম ওয়া আল-ওয়াছানিয়্যা, আল-বুরুক আল-নাজদিয়্যা, আল-ফাসল আল-হাসিম - মুহাম্মাদ বাশির আল-হিন্দির সিয়ানাত
আল-ইনসান - আল-সান‘আনির তাতহির আল-ই‘তিকাদ
- শামস আল-দিন আল-আফগানির
জুহুদ উলামা আল-হানাফিয়্যা
- আল-‘আনকারির জুহুদ
আ’ইম্মাত
আল-শাফি‘ইয়্যা
ফি তাকরির তাউহিদ আল-‘ইবাদা - আব্দ আল্লাহ আল-‘আরফাজের জুহুদ আল-মালিকিয়্যা ফি তাকরির তাউহিদ
আল-‘ইবাদা - মুহাম্মাদ মাজদি বি. হামদির আল-ফুরকান ও কিতাব
আল-‘ইবাদা - আহমাদ আল-গুনাইমানের জুহুদ
শাইখ আল-ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা ফি তাউদিহ তাউহিদ আল-‘ইবাদা - আব্দ আল্লাহ আল-হুযাইলের শুবুহাত
আল-মুবতাদি‘আ
ফি তাউহিদ আল-‘ইবাদা - আব্দ আল-রাযযাক আল-‘আব্বাদের আল-কাউল আল-সাদিদ - আল-দিহলাউইর রিসালাত আল-তাউহিদ - আল-মু‘আলিমির রাফ‘ আল-ইশতিবাহ - সুলতান আল-‘উমাইরির তাহকিক আল-ইফাদা - শারিফ হাতিম আল-‘আউনির রচনাবলী
- আব্দ আল্লাহ আল-কারনির
দাওয়াবিত আল-তাকফির
শেষকথা: অবশ্যই
এই নমুনাটি কিছু বর্ধন-কর্তনের যোগ্য ভিন্ন স্বাদের দিরাসা-পদ্ধতি মাথায় থাকলে। এই
নমুনাটি অনেক সরল তালিকা। আরো অ্যাডভ্যান্সড পড়তে চাইলে অন্তত এই তালিকাটি শেষ
করতে হবে। নাহলে খেই হারিয়ে ফেলতে হবে। আর আমি আছারি দিরাসা পদ্ধতি নিয়ে লিখেছি
বলে আমাকে সালাফি কিংবা কালামি কোন ঘরানায় ফালানো অনর্থক হবে। এখানে ব্যাক্তি
মুখ্য না, বিষয়
মুখ্য। শোকরানা।
অভিবাসী ইসলামের আদলে
নয়া উপনিবেশি ইবাদত
এক ভাইয়ের কথায় প্রফ. আবুল ফাদলের একটা দারস শুনলাম তিন
ঘন্টার। দারসের প্রাসঙ্গিক একটা আলাপ লিখতে গিয়ে বড় হয়ে যাওয়ায় নোটে দিয়ে দিলাম। প্রাচ্যবাদী ওয়ায়েজিনরা
একটা মন্ত্র ফুঁকে দিয়েছিলো পৃথিবীতে: “বর্তমান
বিশ্বে ইসলামই সবচে বেশি ক্রমপ্রসারমান ধার্মিক অস্তিত্ব”। অসংখ্য মুসলিম-ই ফুঁকিত হয় এই ওয়াজের
রোশনাইয়ে; ইতিহাস
স্বাক্ষী। সমস্যা হচ্ছে, প্রাচ্যবাদীরা
এটি কোন সমাজতাত্ত্বিক তথ্য হিসেবে পেশ করেনি;
এটি নিতান্তই উপনিবেশি প্রচারকৌশলের অংশ হিসেবে ব্যাবহৃত
হয়েছিলো। ‘ইসলাম
সবচে দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে’ মানে
হচ্ছে, দুনিয়া
যেন এদিকে নজর দেয় নিয়ন্ত্রনী পদক্ষেপ নিতে। এছাড়াও আরেকটি জঘন্য বর্ণবাদী “পর্যবেক্ষন” প্রচার হয়ে গেল যে, মুসলিমদের নাকি জন্মাহার বেশি। জন্মাহার
বেশি, তাই
এটাকে উপনিবেশি ক্ষমতা কাঠামোর নিরবচ্ছিন্ন হামদর্দ থেরাপি দিতে হবে, যাতে বৈশ্বিক ‘সুস্থতা’
বজায় থাকে। সুতরাং,
আফ্রিকা ও ইন্ডিয়ায় গিয়ে পোয়াতিরোধন বড়ি/বেলুন ব্যাবসা, কালো-বাদামীদের উপর বিভিন্ন ড্রাগ-টেস্ট
ও ক্লিনিকাল ট্রায়াল, প্রজনন
নাশক টিকা প্রদান ইত্যাদি ব্যাপারগুলো যেমন করে ‘সুন্দর
পৃথিবী’ বিনির্মানকল্পে
জায়েজ হয়েছিলো, সেগুলোই
আবার নুতন মোড়কে মুসলিম-প্রধান জাতিরাষ্ট্রগুলোতে ‘কাছে
আসার গল্প’ হয়ে
গেলো।
এই যে প্রাচ্যের বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে, বিশেষ করে মুসলিমদের নিয়ে, যেই তাড়না পশ্চিম অনুভব করে, এখান থেকেই রাজনৈতিক-হেজ্যামনিক
ইসলামোফোবিয়ার যাত্রা শুরু। ইসলামোফোবিয়া হচ্ছে ‘কোল্ড-ওয়র’ পরবর্তী পশ্চিমের “উত্তর”-উপনিবেশী
উদ্বেগের জন্মগোত্রীয়তা। এই প্রকল্পের অন্যতম সুবেদার বার্নার্ড লুইস
ইসলামোফোবিয়াকে একাডিমিয়ায় শাস্ত্রকথন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর তার শাগরেদ
ড্যানিয়েল পাইপস লুইসের অপ্রাতিষ্ঠানিক ও ‘রাজনৈতিকভাবে
অ-শ্লীল’ কথাগুলো
ওয়াজ করে বেড়িয়েছে। আবুল ফাদল লুইসের ছাত্র ছিলেন। উনি বলছিলেন যে, কোন এক পার্টিতে মাতাল অবস্থায় লুইস বলে
উঠেন যে তার ‘স্লেইভারি
ইন দ্য মিডল ইস্ট’ লেখা
হয়েছে শুধু এই আতংকেই যে আফ্রো-আমেরিকান জনপদে ইসলাম অনেক গ্রহনযোগ্যতা পাচ্ছিলো; আর ‘সেমাইটস
এন্ড এন্টাই-সেমাইটস’ লিখেছিলেন
যখন দেখা গেলো পশ্চিম জাতিরাষ্ট্রগুলোতে ইসলাম বাজার পেয়ে যাচ্ছে। লুইস একাডেমিক
ভদ্র বয়ান বানান, আর
তার শাগরেদরা সেগুলোর সফল রাজনৈতিকরণ করে বেড়ায়।
যখন পশ্চিম ইসলামোফোবিয়ার শিল্পপ্রকল্প তৈয়ারে মনোনিবেশ করছে, তখন মুসলিমরা পশ্চিমের সেই ‘মানসিক অস্থিরতার’ পরিচর্যা করে যাচ্ছে এটা প্রমাণ করতে যে
“তারা
এই সেক্যুলার দুনিয়ায় কোন হুমকি” নন।
পশ্চিম বারবার মুসলিমদের নিকট প্রতি-ইসলামপন্থী একটি পরিচয় দাবী করে এসেছে ‘তাদের’
সেক্যুলার দুনিয়ায় সমীভূত হতে,
যাতে তারা বিশ্বজনীন সমজাতীয় সভ্যতায় ঠাই করে নিতে পারে। ‘ইসলাম সবচে দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে’ এই মঞ্চ নাটকের পেছনপর্দায়
ধারাবাহিকভাবে এবং একনিষ্ঠভাবে ‘খৃষ্টীয়করণ’ প্রকল্প চালানো হয়েছে। আমাদেরকে বলা হয়
আমরা নাকি ‘ধর্ম-উত্তর’ এক জামানায় আছি; হিপ্সটার মুসলিমরা বুক ফুলিয়ে বলে আমরা
পোস্ট-রিলিজান সভ্যতায় আছি। যদিও আমরা ‘ধর্ম-উত্তর’ যুগে আছি,
তবু কেন যেন মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাঙ্গের ছাতার মতো বাড়তে
থাকে। আমেরিকা ‘সেক্যুলার
রাষ্ট্র’, এটা
তাদের সংবিধান ও পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক উপপাদ্য। অথচ এই ‘সেক্যুলার’ রাষ্ট্রই ফিলিপাইনে গিয়ে ব্যাপক হারে
মিশনারি প্রোজেক্ট বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে। একি ব্যাপার ঘটিয়েছে জাপান, তাইওয়ান,
দক্ষিন কোরিয়া,
ও চীনের সাথেও। চীনের তো এমন অবস্থা যে, সেখানে দিনরাত উইঘুরদেরকে জবাই করা হলেও, খৃষ্টীয় কোন মিশনারি প্রতিষ্ঠানের
কার্যকলাপ বিঘ্নিত করার এক ছটাক স্পর্ধাও প্রকাশ করা হয়না। আফ্রিকার দিকে নাইবা
গেলাম। দেখা গিয়েছে, মুসলিমদের
অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে ‘অন্যের’ ঐতিহাসিক বিবরণকে নিজের করে নেয়াতে।
পশ্চিমের হাটুর নিচে বসে কৈফিয়তমূলক ধর্মচারীতার বাইরে গিয়ে ‘নিজস্ব’
কোন রাজনৈতিক, সমাজতাত্ত্বিক, ও ঐতিহাসিক জিজ্ঞাসা করার কোন ‘ইচ্ছা-শক্তি’ জাগ্রত হতে চায়না। বিশ্বায়ন প্রকল্পের
নামে যে ‘খৃষ্টীয়করণ’ হচ্ছে,
এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ক্ষমতায় আছে – এগুলো কোন বিক্ষিপ্ত ব্যাপার না।
ট্রাম্প খৃষ্টান না হতে পারে, এমনকি
ধার্মিকও না হতে পারে; তার
মানে এই নয় যে, সারা
বিশ্বে পশ্চিম তার প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে এক প্রকারের খৃষ্টীয়তাকে পুঁজি
করছেনা। মিশনারিদের ক্রমাগত ইভাঞ্জেলিকাল প্রচারনায় আমরাও তাদের মতো করে মিশনারি
স্টাইলে ওয়াজ-মিলাদ-কিয়াম করে দ্বিন কায়েম করতে চাই,
দা’ওয়া
করতে চাই।
আমাদের এই ইসলাম অভিবাসী ইসলাম। আমরা এখন নৃতাত্ত্বিক মসজিদ
(সাংস্কৃতিক কেন্দ্র) বানাই – হিন্দি
মসজিদ, পাকিস্তানী
মসজিদ, তাবলিগি
মসজিদ, ব্রেলভি
মসজিদ, ইত্যাদি
ইত্যাদি। আমাদের নুতন প্রজন্ম মানুষের কাছে ‘পরম
সত্যের দাওয়াত’ দিতে
লজ্জা পায়; কারণ, এই ‘ধর্ম-উত্তর’ যুগে নিজের বিশ্বাস-ব্যাবস্থা ছড়িয়ে
দেয়াটা এক ধরণের ‘অভদ্রতা’। অথচ সমাজতত্ত্ব আমাদের বলে দিচ্ছে আমরা
কার্যকরীভাবে কেবল হেজ্যামনিক তাফসিরের আওতায় মধ্য দিয়েই নিজেদেরকে অর্থপূর্ণ করতে
পারছি। আমরা যখন ব্যাস্ত আছি ‘সেক্যুলার
বিধি’ মোতাবেক
নিজেদের অর্থপূর্ণ করতে, তখন
পশ্চিম নিজেই এইসব নীতিমালা মেনে চলেনা,
যাতে করে আমরা ‘শাদা
পুরুষের’ প্রতি
কোন ‘প্রতিরোধ’ না দেখাই। নিয়ম না মেনেই তারা কোটি কোটি
টাকা ঢালছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট মন্দিরগুলোতে
যাতে ঐসব অঞ্চলে ইসলাম কেবল একটি আরব পরিচয় হিসেবে হাজির থাকে। আর আরব প্রমাণ হলেই
খুব সহজেই ইসলামকে বর্ণবাদীয় বয়ানে আনা যায় এবং পৃথিবীর কাছে মুসলিমদের ড্রাকুলা
বর্বর প্রমাণ করা যায়।
যারা য়্যোরোপের ইসলামায়ণ করতে চান, আর কতো?
আপনি যতোই বলবেন আপনি ‘হুমকি’ না,
কোনদিন এতোটুকুন প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট হবে না। আপনাকে শেষাবধি
বলা হবে আপনি তাকিয়্যা করছেন (অর্থাৎ আপনি প্রকৃতিগতভাবে মিথ্যুক)। দাসরা যতোই
মনীবের মতো হতে চাক না কেন, কোনদিন
তা হয়ে উঠতে দেয়া হয়না। এই ‘উঠতে
না দেয়ার’ জন্য
মনীব কিছু নেইটিভ ইনফর্মেন্ট তৈরি
করে যারা আমাদেরকে বোঝাবে ‘প্রতিরোধ’ খারাপ জিনিস, এবং মনীবের বশ্যতাই মুক্তির পয়গাম।
জুহদি জাসের, শিরিন
কুদসি, তাউফিক
হামিদ, সালিম
মানসুর প্রমুখ এই প্রজাতির। খৃষ্টানরা ‘সেক্যুলারাইযেশানের’ দোহাইয়ে নিজেদেরকে এগিয়ে নিচ্ছে, ইহুদীরা পুরাণ যুগের ঐতিহাসিকতাকে পুঁজি
করে নিজেদের এগিয়ে যাচ্ছে, আর
আমরা রোহিঙ্গাদের গণহত্যার সময় নিজেদের মাঝে তাকফির ও গীবত করে বেড়াচ্ছি, অভিবাসী ইসলামে এসাইলাম নিচ্ছি।
An
Elementary Reader of Sufism
This reader is introductory, and
very much relies upon my limited exposure to the topic. I tried not to paint
this with a certain author or any group’s own set of preferences, but my hands
were tied since I couldn’t bring in any Arabic/French resources. I’d recommend
not to project personal biases onto any author before reading their work fully.
It’s totally okay if you disagree with anyone’s opinions as long as you are
able to recognize good scholarship. This reader is tailored for college kids
who don’t have any prior exposure to Sufism, and/or, especially, influenced by
Salafism and western apolitical Sufism. This list primarily focuses on
education and nuancing that understanding. So, if you’re looking forward to
scavenging items for your sectarian polemics, and thenceforth use them to act like
the insecure internet cliche, this isn’t for you. Education requires humility,
and humility never mixes with arrogance. Also, while you read on, you’ll find
contesting opinions between authors – don’t let it confuse you; hold on tight
until you finish them all. Anyways, I grouped the books into bundles; each
bundle has a thematic, pedagogical purpose. Ideally, you shouldn’t skip any of
the books – the list is very small and basic as it is – but, should you do so,
don’t do it with the starred ones. Please maintain the order if you can. (If
anyone has any other suggestions, please mention them in the comments)
- Alexander Knysh – Al-Qushayri’s Epistle on Sufism Abd al-Qadir Isa (Tr. Suraqah Abdul Aziz) – Realities of Sufism [★] Sherman Jackson – Sufism for Non-Sufis?: Ibn Ata Allah al-Sakandari's Taj al-Arus [★]
- Carl Ernst – Sufism: An Introduction to the Mystical Tradition of Islam [★] Annemarie Schimmel – Mystical Dimensions of Islam [★] William C. Chittick – Sufism: A Beginner’s Guide [★] Titus Burckhardt – Introduction to Sufi Doctrine Martin Lings – What is sufism? [★] James Fadiman and Robert Frager – Essential Sufism A. J. Arberry – Sufism: An Account of the Mystics of Islam Seyyed Hossein Nasr – The Garden of Truth [★] Seyyed Hossein Nasr – Islamic Spirituality Foundations
- Alexander Knysh – Islamic Mysticism: A Short History [★] Ahmet T. Karamustafa – Sufism: The Formative Period [★] J. Spencer Trimingham – The Sufi Orders in Islam [★] John Renard – The A to Z of Sufism
- John O'Kane and Bernd Radtke – The Concept of Sainthood in Early Islamic Mysticism: Two Works by Al-Hakim al-Tirmidhi Feryal Salem – The Emergence of Early Sufi Piety and Sunnī Scholasticism: Abdallah b. Al-Mubarak and the Formation of Sunni Identity in the Second Islamic Century
- Ovamir Anjum – Sufism without Mysticism: Ibn al-Qayyim's Objectives in Madarij al-Salikin [★] Arjan Post – A Glimpse of Sufism from the Circle of Ibn Taymiyya [★] Yumna Ozer – Ibn Khaldun on Sufism: Remedy for the Questioner in Search of Answers [★] M. Abdul Haq Ansari – Ibn Taymiyyah and Sufism Mun'im Sirry – Jamal al-Din al-Qasimi and the Salafi Approach to Sufism Muhammad U. Faruque – Sufism contra Shariah? Shah Wali Allah’s Metaphysics of Waḥdat al-Wujud Th. E. Homerin – Ibn Taimīya's al-Ṣūfīyah wa-al-Fuqarāʾ Sohaib Saeed – Reforming Sufism: In the Writings of Two Senior Azharites [★]
- Van Bruinessen and Howell ed. – Sufism and the ‘Modern’ in Islam Sara Sviri – Sufism: Reconsodering Terms, Definitions and Processes in the Formative Period of Islamic Mysticism Elizabeth Sirriyeh – Sufis and Anti-Sufis Mark Sedgwick – Islamic Mysticism and Neo-Sufism [★] Mark Sedgwick – Western Sufism: From the Abbasids to the New Age [★] Mark Sedgwick – Western Sufism and Traditionalism Gregory A Lipton – Secular Sufism: Neoliberalism, Ethnoracism, and the Reformation of the Muslim Other [★] Arthur F. Buehler – Recognizing Sufism: Contemplation in the Islamic Tradition Fait Muedini – Sponsoring Sufism: How Governments Promote “Mystical Islam” in Their Domestic and Foreign Policies [★] Sara Sviri – Sufism: Reconsodering Terms, Definitions and Processes in the Formative Period of Islamic Mysticism Adeel Malik, Rinchan Ali Mirza – Religion, land and politics: Shrines and literacy in Punjab, Pakistan
- Harry S. Neale – Jihad in Premodern Sufi Writings [★] Fait Muedini – Sufism and Anti-Colonial Violent Resistance Movements: The Qadiriyya and Sanussi Orders in Algeria and Libya [★] John Glover – Sufism and Jihad in Modern Senegal: The Murid Order Michael Kemper – Khalidiyya Networks in Daghestan and the Question of Jihad
ʿUthmānī
history for
non-Ottomanist
newbie
I was trying to make some time for
an Ottomanism primer, but a better input was done by Dr. Yakoob Ahmed, whose
research interests primarily focus on Ottomanism. The main themes he’s chosen
are the classical period, Second Empire period, and the Late. Some on Egypt,
after all, it was part of the Empire/devlet; some on Islam, law and ulema; and
then some on modernisation, like Law courts, Mecelle, Educations and clocks.
This list tries to superficially touch on different aspects of the empire. One
can dig down as per their area of interest from this point onward. [Sorry,
neither Dr. Yakoob nor I had the time to bundle them into thematic categories;
also, you need to excuse some typos, and punctuation; bon appetit]
Inalcik, Halil - The Ottoman Empire:
The Classical Age 1300-1600
Wittek, Paul - The Rise of the
Ottomans
Faroqhi,Suraiya - Subjects of the Sultan:
Culture and Daily Life in the Ottoman Empire
Quataert,Donald - The Ottoman
Empire, 1700-1922 (New Approaches to European History)
Imber,Colin - The Ottoman Empire,
1300-1650: The Structure of Power (2nd Edition)
Kafadar, Cemal - Between Two Worlds:
The Construction of the Ottoman State
Zilfi, Madeline C. - The Politics of
Piety: The Ottoman Ulema in the Post-Classical Age (1600-1800).
Atçil, Abdurrahman - Scholars and
Sultans in the Early Modern Ottoman Empire (Cambridge University Press, 2017)
Pamuk, Şevket - The Ottoman Economy
and Its Institutions, 2009
M. Şükrü Hanioğlu - A Brief History
of the Late Ottoman Empire
Wishnitzer, Avner - Reading Clocks,
Alla Turca: Time and Society in the Late Ottoman Empire
Rudolph Peters, “What Does It Mean
to Be an Official Madhhab? Hanafism and the Ottoman Empire,” in The Islamic
School of Law: Evolution, Devolution, and Progress, ed. Peri Baerman, Rudolph
Peters, and Frank E. Vogel (Cambridge, MA: Islamic Legal Studies Program,
Harvard Law School, distributed by Harvard University Press, 2005)
Repp, Richard C. - The Müfti of
Istanbul: A Study in the Development of the Ottoman Learned Hierarchy (London:
Ithaca Press, 1986).
Zilfi, M. - The Politics of Piety:
The Ottoman Ulema in the Postclassical Age, 1600–1800 (Minneapolis: Bibliotheca
Islamica, 1988)
Le Gall, Dina - A Culture of Sufism:
Naqshbandīs in the Ottoman World, 1450–1700 (Albany: SUNY Press, 2005)
Kafadar, C. - “The Question of
Ottoman Decline,” Harvard Middle Eastern and Islamic Review 4 (1997–1998): 30–75
Khaled El-Rouayheb - Islamic
Intellectual History in the Seventeenth Century Cambridge University Press,
2015
Imber, Colin. - Ebu’s-Suʿud: The
Islamic Legal Tradition (Stanford: Stanford University Press, 1997).
Ayoub, Samy. “The Mecelle, Sharia,
and the Ottoman State: Fashioning and Refashioning of Islamic Law in the
Nineteenth and Twentieth Centuries.” Indiana University Press, January 2016.
Darling, Linda T. - A History of
Social Justice and Political Power in the Middle East: The Circle of Justice
From Mesopotamia to Globalization. 1 edition. New York: Routledge, 2012.
Deringil, Selim. - The
Well-Protected Domains : Ideology and the Legitimation of Power in the Ottoman
Empire 1876-1909. London : I. B. Tauris, 1998.
Burak, Guy. - The Second Formation
of Islamic Law: The Ḥanafī School in the Early Modern Ottoman Empire
(Cambridge: Cambridge University Press, 2014).
Fahmy, Khalid. - All the Pasha’s
Men: Mehmed Ali, His Army and the Making of Modern Egypt. New edition edition.
Cairo: The American University in Cairo Press, 2002.
Maʻoz, Moshe. - Ottoman Reform in
Syria and Palestine, 1840-1861; The Impact of the Tanzimat on Politics and
Society. Oxford: Clarendon P., 1968.
Tezcan, Baki - The Second Ottoman
Empire: Political and Social Transformation in the Early Modern World (New
York: Cambridge University Press, 2010).
Kuehn, Thomas. - Empire, Islam, and
Politics of Difference Ottoman Rule in Yemen, 1849-1919. Leiden: Brill, 2011.
Yaycioglu, Ali. - Partners of the
Empire: Crisis of the Ottoman Order in the Age of Revolutions (Stanford:
Stanford University Press, 2016). Blumi, Isa. - Reinstating the Ottomans:
Alternative Balkan Modernities, 1800-1912. Springer, 2011.
Deringil, Selim. - Conversion and
Apostasy in the Late Ottoman Empire. 2012.
Gingeras, Ryan - Fall of the
Sultanate: The Great War and the End of the Ottoman Empire 1908-1922. Oxford:
Oxford University Press. (2016)
Meeker, Michael E. - A nation of
empire. The Ottoman legacy of Turkish modernity. Berkeley: University of
California Press. (2002)
Zürcher, Erik Jan - The Young Turk
legacy and nation building. From the Ottoman Empire to Atatürk's Turkey.
London: I.B. Tauris. (2002)
Zürcher, Erik Jan - Turkey: A modern
history. Fourth edition, new paperback edition. London, New York: I. B. Tauris
(Library of modern Turkey, 27). (2017):
Bein, Amit - Ottoman Ulema, Turkish
Republic: Agents of Change and Guardians of Tradition, Stanford, California :
Stanford University Press, 2011
Campos, Michelle U - Ottoman
Brothers : Muslims, Christians, and Jews in Early Twentieth-Century Palestine,
Stanford, Calif. : Stanford University Press, (2011)
Commins, David Dean - Islamic
Reform: Politics and Social Change in Late Ottoman Syria, New York ; Oxford :
Oxford University Press, 1990
Der Matossian, Bedross - Shattered
Dreams of Revolution : From Liberty to Violence in the Late Ottoman Empire,
Stanford, California : Stanford University Press, 2014
Green, Arnold H - The Tunisian Ulama
: 1873-1915 : Social Structure and Response to Ideological Currents, Leiden :
E.J. Brill, 1978
Hasan Kayalı - Arabs and Young
Turks: Ottomanism, Arabism and Islamism in the Ottoman Empire, 1908-1918
(Berkeley: University of California Press, 1997)
Hanioğlu, M. Şükrü - Preparation
for a Revolution : The Young Turks, 1902-1908, Oxford : Oxford University
Press, 2001
Kansu, Aykut - Politics in
Post-Revolutionary Turkey, 1908-1913, Leiden ; Boston : Brill, 2000
Meyer, James H. - Turks across
Empires : Marketing Muslim Identity in the Russian-Ottoman Borderlands,
1856-1914, Oxford : Oxford University Press, 2014
Findley, Carter V. - Bureaucratic
Reform in the Ottoman Empire : The Sublime Porte, 1789-1922. Princeton Studies
on the Near East. Princeton ; Guildford : Princeton University Press, 1980.
Green, Arnold H. - The Tunisian
Ulama: 1873-1915 : Social Structure and Response to Ideological Currents.
Social, Economic and Political Studies of the Middle East ; Leiden: E.J. Brill,
1978.
Karpat, Kemal H. - The
Politicization of Islam : Reconstructing Identity, State, Faith, and Community
in the Late Ottoman State /. Studies in Middle Eastern History. New York :
Oxford University Press, 2002.
Somel, Selcuk Aksin. - The
Modernization of Public Education in the Ottoman Empire, 1839-1908:
Islamization, Autocracy and Discipline. Leiden ; Boston: Brill, 2001.
Rubin, A. - Ottoman Nizamiye Courts:
Law and Modernity. 2011 edition. New York: Palgrave Macmillan, 2011.
Mardin, Şerif. - The Genesis of
Young Ottoman Thought : A Study in the Modernization of Turkish Political
Ideas. 1st Syracuse University Press ed. Modern Intellectual and Political
History of the Middle East. Syracuse, N.Y. : Syracuse University Press, 2000.
Şeyhun, Ahmet. - Islamist Thinkers
in the Late Ottoman Empire and Early Turkish Republic. Brill, 2014.
Kayalı, Hasan. - Arabs and Young
Turks : Ottomanism, Arabism, and Islamism in the Ottoman Empire, 1908-1918.
Berkeley : University of California Press, 1997.
Fortna, Benjamin C. - Imperial
Classroom : Islam, the State and Education in the Late Ottoman Empire. Oxford :
Oxford University Press, 2002.
Sohrabi, Nader - Revolution and
Constitutionalism in the Ottoman Empire and Iran, New York : Cambridge
University Press, 2011
Abu-Uksa, Wael. - Freedom in the
Arab World Concepts and Ideologies in Arabic Thought in the Nineteenth Century.
[S.l.] : Cambridge University Press, 2016.
Anscombe, Frederick F. State -
Faith, and Nation in Ottoman and Post-Ottoman Lands. New York, NY : Cambridge
University Press, 2014.
কাশ্মীরের আজাদী ও
ভারতীয়
ঔপনিবেশিক শক্তি — সালমান সায়্যিদ হাফি.
রিয়াজুল খালিক:
আপনার কি মনে হয়,
একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র ও “পৃথিবীর
সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র” হিসেবে
ভারতের যে ভাবমূর্তি রয়েছে, সেটি
তাকে ইসলামোফোবিয়া প্রশ্নে যেকোন তদন্ত থেকে নিরাপত্তা দিয়েছে?
সালমান সায়্যিদ:
এখন ১৯৪৭ এর যে কাহিনী বর্ণনা করা হয় তা মূলত একজন “ভালো ভাই”
এবং আরেকজন “খারাপ
ভাই”-য়ের
উপাখ্যান; যেখানে
ব্যার্থ একটি রাষ্ট্র আছে, যা
সবসময়ই পাকিস্তান, এবং
সফল আরেকটি রাষ্ট্র আছে, যা
সবসময়ই ভারত। কিন্তু বর্তমানে দুই রাষ্ট্রে চলমান অবস্থার প্রেক্ষিতের সাথে এই
কেসসার কোন বাস্তবতা নেই। ভারতের এহেন ভাবমূর্তি শুধু তার এলিট একটি শ্রেণীর কাছেই
গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং
অনেক য়্যোরোপীয় এলিটের জন্যও এটি জরুরী;
কারণ, আংশিকভাবে
হলেও এটি ইসলামোফোবিয়া কর্তৃক রূপ পেয়েছে। এই ইসলামোফোবিয়া বয়ানের বক্তব্য হলো:
একজন সফল মুসলিম হওয়ার একমাত্র সম্ভাবনা আছে ভারতেই,
যেখানে সবকিছু সর্বসংহত ও সর্বসুন্দর।
এখানে দুটো বিষয় লক্ষ্যণীয়। এক হলো, জন সংখ্যা নিয়ে কসরত। ভারতের মুসলিম
জনসংখ্যার পরিমানকে প্রায়শই উঠিয়ে আনা হয় দ্বিজাতিতত্ত্ব ও দেশভাগকে অবৈধ প্রমাণ
করতে। আসল ব্যাপার মূলত এটিই; কাশ্মীরের
সংগ্রাম এযাবৎ জাতীয় মুক্তির কোন আন্দোলন হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি এ কারনেই। কেননা, এটাকে এই বিবেচনায় দেখা হয়নি যে, কাশ্মীর হলো পৃথিবীর সবচে ঘন
সেনাবসতিপূর্ণ এলাকা। সত্যি বলতে পৃথিবীর সবচে দীর্ঘ দখলদারিত্বের শিকার হয়ে আসছে
কাশ্মীর। তাই
এখানে একধরণের উপেক্ষা আছে এ ব্যাপারে। যখন মুসলিমরা স্রেফ গো-মাংস খাওয়া কিংবা
অন্য যেকোন মামুলি কারণে হত্যার শিকার হয়,
তখন সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয় বা নাকচ করা হয়। ব্যাপারটা এমন না
যে, নরেন্দ্র
মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এসব ঘটছে,
বরং সাতচল্লিশের পর থেকেই এটা হয়ে আসছে। এবং এসব অপরাধীরা কখনো
কখনো দখলকারী ক্ষমতার এজেন্সিগুলোর বিভিন্ন সহায়তা ও সমর্থন উপভোগ করে থাকে। ভারত
প্রতিষ্ঠাকাল হতে পরিচিত হয়ে এসেছে সেক্যুলার ও গণতান্ত্রীক হওয়ার দাবীর উপর
ভিত্তি করে, যদিও
তারা মুসলিমদের উপর পরিকল্পনামাফিক নৃতত্ত্ব-নিধন যজ্ঞ চালিয়ে আসছে। ভারতের মুসলিম
জনসংখ্যা ক্রমেই আরও বেশি নগরকেন্দ্রিক হয়ে পড়ার পেছনে এধরণের হামলার আংশিক ভূমিকা
আছে। তবু এখন পর্যন্ত মুসলিম নিধনের প্রসঙ্গটি অনুপস্থিত থাকে ভারত শীর্ষক বক্তব্য
ও আলাপ আলোচনায়। সাহসী ভারতীয় বুদ্ধিজীবীরাও কেমন নিশ্চুপ থাকেন এ ব্যাপারে। মজার
ব্যাপার হলো, আমরা
যদি বিগত কয়েক বছরের লৈঙ্গিক অনুপাতের তথ্যের দিকে তাকাই, তাহলে দেখি এটা পাকিস্তানে এটি বেশ
উন্নতি লাভ করেছে, এবং
ভারতে ধ্বসে পড়েছে। কিন্তু কেউ যখন জিজ্ঞাসা করে,
কোন দেশ নারী ইস্যুতে বেশি অগ্রগতি দেখিয়েছে? লোকজন এর উত্তরে বলবে, ‘ভারত’। এসব
ব্যাপার এতোটা ব্যাপকভাবে পরিচিতও হতে পারেনি। খোলাসা হলো, ভারত বৃহত্তর সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক
দেশ হয়ে উঠার ধারণাটি এর প্রাতিষ্ঠানিক ইসলামভীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক মুসলিম
নির্যাতনকে সম্পূর্ণরূপে মুখোশাবৃত করে ফেলতে পারছে সেই সাতচল্লিশ থেকেই।
রিয়াজুল খালিক:
“হিন্দু ভারত” ধারণাটিকে
কিভাবে দেখেন?
সালমান সায়্যিদ:
একটি হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের চিত্রটি পরস্পরবিরোধীতার। ‘ইন্ডিয়া’
নামটি, যা
ভারতীয় জাতীয়তাবাদীরা ব্যবহার করে থাকেন,
সেটি সংস্কৃত থেকে আসেনি। ‘ইন্ডিয়া’ বলতে যা বুঝায় তার সমগ্র ধারণাটি
অনেকাংশেই নির্মিত হয়েছে য়্যোরোপীয় নৃকুলবিজ্ঞান বিশারদদের দ্বারা, যারা মনে করতেন ‘ইন্ডিয়া’
প্রথমত এবং মৌলিকভাবেই হিন্দুদের দেশ। কাজেই এদেশে কোন
অ-হিন্দু, অর্থাৎ
‘মুসলিম’, উপস্থিতিকে ধরে নেয়া হয়েছে বহিরাক্রমণের
ফসল হিসেবে। এই ধারণার মদদ দাতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলো ইংরেজরা, এবং পরবর্তিতে ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ একে সামনে বয়ে নিয়ে গেছে। অর্থাৎ ভারতকে
আবশ্যিকরূপে হিন্দু ধরে নেয়া হয়, এবং
এভাবেই তাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। কিন্তু এটা কোন পরীক্ষালব্ধ বা গবেষণালব্ধ
ভূগোলবিদ্যা নয়, বরং
এগুলো মানুষের কল্পনাপ্রসূত ভূগোলবাসনা।
রিয়াজুল খালিক:
ভারতে ক্রমবর্ধমান ইসলামভীতির সম্ভাব্য পরিণাম কী কী হতে পারে?
সালমান সায়্যিদ:
পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামভীতি এই ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
যে, মুসলিমরা
হলো তাদের দেশের সাম্প্রতিক অভিবাসি। কিন্তু ভারত,
চীন, থাইল্যান্ড
এবং রাশিয়ার মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রে আপনি এ কথা বলতে পারবেন না যে, মুসলিমরা সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে
স্থানান্তরিত হয়েছে; কেননা
এসব রাষ্ট্র তাদেরকে সহই গঠিত হয়েছে।এর মানে হলো,
এগুলো আধুনিক জাতি রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার বহু আগ থেকেই
সেখানে মুসলিম অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিলো। সুতরাং ভারতের একথা বলার সুযোগ নেই যে, মুসলিমরা সাম্প্রতিক সময়ের অভিবাসি; কারণ আজকের ‘ভারত’
তার বর্তমান রূপে (জাতিরাষ্ট্র) অস্তিত্বে আসার বহু পূর্ব
থেকেই মুসলিমরা সেখানে ছিল। এক্ষেত্রে,
ভারতে ইসলামভীতি পশ্চিমের চেয়ে কিছুটা ব্যাতিক্রম ভাবে বিকশিত
হয়েছে। কিন্তু তার মানে এই না যে, পশ্চিমে
ইসলামভীতির যেসব ধারণা প্রচলিত আছে ভারতও সেগুলোর কিছু গ্রহন করবেনা/করেনা। মূলত
ভারতের মত জাতিরাষ্ট্রগুলোতে ইসলামভীতি কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে জাতীয় পরিচয়ের
ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু মুসলিমদের অবস্থান বিষয়ক আলোচনায়। এখানে এসে নেহেরুর ধর্মনিরপেক্ষ প্রকল্প
আর মোদির সাম্প্রদায়িক প্রকল্পের মাঝে মৌলিক কোন পার্থক্য থাকেনা।উভয়েই সংখ্যালঘুর
উপর জাতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠের সাথে “একিভূত” হয়ে যাওয়ার দাবীকে চাপিয়ে দেন, যার অর্থ হলো, তাদের নিজস্ব সামাজিক-সাংস্কৃতিক
জীবনপদ্ধতিকে বিসর্জন দিতে বলা। একটার কর্মপন্থা হলো, ‘সকলেই হিন্দু’ এটা বলার মাধ্যমে সব সংখ্যালঘুকে
সমগোত্রের পর্যায়ে নামিয়ে আনা -- সুতরাং তাদেরকে এখন হিন্দু ব্যতীত অন্যকিছু হওয়া
বন্ধ করতে হবে। অপরটির কর্মপন্থা হলো,
একটা ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো দাঁড় করানো যার নিয়ামক মানদণ্ড (template) হচ্ছে কর্তৃত্বপ্রধাণ
ধর্ম হিন্দুবাদ; এটি
সকলের জন্য উন্মুক্ত। এবং বর্তমান ভারতে সেক্যুলারিজমকে ব্যবহার করাই হয় শুধু
মুসলিমদেরকে পুলিশিং করার জন্য।
রিয়াজুল খালিক:
ভারতে ইদানিং হিন্দু ফ্যসিবাদীরা নিজেদেরকে ক্রমবর্ধমানভাবে
দ্রুতই প্রকাশ করছে; এ
ক্ষেত্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে, বিশেষ করে মুসলমানদের?
সালমান সায়্যিদ:
ভারতে এখন যেটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, সেটা প্রায় অনেকটাই আমেরিকার ‘জিম ক্রো সিস্টেমের’ মতো। আফ্রো-আমেরিকানরা যখন দাসত্ব থেকে
মুক্তি পেলো, তখন
তাদের আর্থ-সামাজিক অধিকারগুলোকে অস্বীকার করার জন্য ধীরে ধীরে একটি বিস্তারিত ও
পরিকল্পিত নিয়ন্ত্রনী কানুন কাঠামো গড়ে উঠেছিল। ভারত খুবই স্তরিত একটি সমাজ। আপনি
যখন শুনবেন সমাজের সাথে সুসম্পৃক্ত একজন মানুষ বলছে যে, সে দিল্লীর কোন রেস্টুরেন্টে বসে খাবার
খেতে আতঙ্কিত বোধ করে, কেননা, লোকজন হয়তো ভাববে সে গরুর মাংস খাচ্ছে, তখন এটা অবশ্যই মুসলমানদের কাজ কর্ম, নিজেদের ব্যাপারে চিন্তা, এবং জন পরিবেশে তাদের অংশগ্রহনের উপর
প্রভাব ফেলবে। এখন এই পরিস্থিতিতে একটাই পথ খোলা থাকে, তা হলো,
দলিত ও অন্যান্য প্রগতিশীল শক্তিগুলোর মতো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর
সাথে ঐক্য গড়ে তুলা। মুসলিম
ও অপরাপর সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যৎ কী,
তা আসলে নির্ভর করে কী ধরণের ভারতের জন্ম নিবে এবং কোন ধরণের
জাতীয় প্রকল্পে তাদেরকে অংশগ্রহন করতে হবে। এছাড়াও,
কেউ দাবীর মুখে ক্ষমতা ত্যাগ করলেও, তার জন্য লড়াই করতে হবে। হাজির
কর্তৃত্ববান দলগুলো দাঁত নখ খিঁচে লড়াই চালিয়ে যাবে ক্ষমতা জিইয়ে রাখার জন্য। এর
পরিবর্তন কেবল তখনই সম্ভব হবে, দৈব
শক্তিবলে হলেও, যদি
চলমান সাবল্টার্ণ সংগ্রামগুলো ভারতের ভবিষ্যৎ পুননির্মাণের স্বপ্নে একটি বৃহত্তর
সংগ্রামে পরিণত হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলগুলো সবসময়ই এ ব্যাপারে সজাগ
দৃষ্টি রাখে যেন ক্ষুদ্র সংগ্রামগুলো কখনোই পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হতে না পারে বা
জোট বাঁধতে না পারে।
রিয়াজুল খালিক:
আচ্ছা, কাশ্মীরের
স্বাধীনতা সংগ্রাম কী কারনে কখনোই এর আঞ্চলিকতাকে অতিক্রম করে যেতে পারেনি?
সালমান সায়্যিদ:
কাশ্মীরের এই প্রতিরোধ আন্দোলন যে আমাদেরকে ভারতীয় পলিসিগুলোর
ব্যার্থতাকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেয়,
এতে কোন সন্দেহ নাই।
ভারত দাবী করে যে,
কাশ্মীরের এই প্রতিরোধ সংগ্রামের পেছনে একমাত্র কারণ হলো “বহিরাগত প্রণোদনাকারীরা”। কিন্তু কথা হলো, কাশ্মীরে বাস্তবেই যদি উদ্বেগজনক
অশান্তিকর পরিস্থিতি না হতো, তাহলে
সেখানে তথাকথিত “বহিরাগত
বিশৃঙ্খলাকারীদের”-ও
কোন সুযোগ থাকত না। এবং আপনারও সেখানে আট লক্ষ নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েনের প্রয়োজন
পড়তো না কেবল “বহিরাগত
বিশৃঙ্খলাকারিদের” মোকাবেলা
করার জন্য। একমাত্র কারণ তাহলে দাড়ায় যে,
স্বয়ং কাশ্মীরের জনগনই এই “বহিরাগত” সমস্যা।
অনেকগুলো কারনেই কাশ্মীরের সংগ্রাম তার আঞ্চলিকতাকে অতিক্রম
করতে পারেনি। প্রথম হচ্ছে, পাকিস্তান
যখনই কাশ্মীর ইস্যুটিকে উত্থাপন করেছে,
তখন সেটা দেখা গিয়েছে ভারত-পাকিস্তানের নিজস্ব বিষয় হয়ে
দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি, এটি
প্রকারান্তরে পাকিস্তানী পলিসির ব্যার্থতাও। কিন্তু এর পাশাপাশি এ কথাও বাস্তব যে, পাকিস্তান যদি কিছুই না করতো, তাহলে কাশ্মীরের অবস্থা বর্তমানের চেয়ে
আরও শোচনীয় হতো। কাশ্মীর সমস্যার এই হলো একটি দিক। আরেকটি সমস্যা হলো, ভারত সবসময়ই কাশ্মীরকে নিজেদের ঘরোয়া
নিরাপত্তা ইস্যু বলে চালিয়েছে। এবং এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ভারত অপরাপর মহা শক্তিধর
রাষ্ট্রগুলোর সংহতি পেয়ে আসছে, যাদের
নিজেদেরও এমন মুসলিম সংখ্যালঘু সমস্যা আছে।
কাশ্মীর বিষয়ে আরেকটি বোধ শক্তি পেয়েছে যে, আইন এখানে কোন ধরণের সুবিচার প্রদানের
পরিবর্তে নিপিড়নের একটি মাধ্যম হিসেবেই দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক যেমনটি ঘটেছিল বৃটিশ
শাসনামলে। এক অর্থে, দখলদারিত্বের
অভিজ্ঞতা কেবল এর নিপীড়নই নয়, বরং
সেটি প্রতিদিনকার প্রতিনিয়ত বাস্তবতা। যুবকেরাই যার সম্মুখে থাকে সবসময়; কমবেশি এটি একটি বৈশ্বিক প্রপঞ্চ।
সংখ্যালঘু কিংবা অরক্ষিত দলগুলোর উপর নির্যাতন ভারতে অস্বাভাবিক কোন বিষয় বলে মনে
করা হয়না। এটিই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। আরেকটু বাড়িয়ে বললে, এই সহিংস দখলদারিত্বও সেখানকার জন্য
স্বাভাবিক বিষয়ই বটে।
রিয়াজুল খালিক:
যদি কখনো গণভোট (plebiscite)
অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে
আপনার কী মনে হয়, কাশ্মীরীরা
কোন দিকে যাবে?
সালমান সায়্যিদ:
যদি ভারত নিশ্চিত হতো যে,
গণভোট অনুষ্ঠিত হলে তারা জয়লাভ করবে, তাহলে সেটা আরও বহু আগেই অনুষ্ঠিত হতো।
তারা জানে এতে তাদের পক্ষে জয়লাভ করা সম্ভব নয়। যদি কাশ্মীর স্বাধীন হয়ে যায়, তাহলে না ভারত না পাকিস্তান, কারো জন্যই সেটি ক্ষতিকর হবেনা। তবে, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে তার
আচরণের অতীত অভিজ্ঞতা অবশ্যই পাকিস্তানকে প্রত্যয়ী করা উচিত কেননা ভারত তার সকল
প্রতিবেশীদের সাথেই সুসম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছে। সুতরাং, এখানে এটা ভাবার কারণ নেই যে, স্বাধীন কাশ্মীরের পাশেও ভারত একটি
আদর্শ প্রতিবেশী হিসেবে আচরণ করবে। অপরদিকে,
কাশ্মীর পাকিস্তানের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন থাকবে, এটা কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব।
ফিলিস্তিনের মতো (উদাহরণস্বরূপ) কাশ্মীরের সংগ্রামের নকশাটা
এতো পরিষ্কার নয়। কেননা, এর
মাধ্যমে ভারতকে একটি ঔপনিবেশিক শক্তি হিসাবে পূনর্মূল্যায়ন করা জরুরী হয়ে পড়বে।
সমস্যাটা মূলত এই পয়েন্টেই জট পাকিয়ে আছে।
রিয়াজুল খালিক:
কাশ্মীরিদের জন্য সামনের পথচলা কেমন হবে?
সালমান সায়্যিদ:
চলমান যেসব চ্যালেঞ্জকে তাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে, সেগুলোকে অবমূল্যায়ণ না করেই তাদেরকে
সামনের পথে চলতে হবে, এবং
আরও সংঘবদ্ধ ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়ার প্রচেষ্টা করতে হবে -- যেন এটি তাদের
দৈনন্দিন লড়াইয়ের অংশে পরিণত হয়। এটা হয়তো তাদেরকে দ্রুত কোন ফল দেবেনা, কিন্তু স্বাধীনতার সম্ভাবনা এই শর্তের
মাঝেই বিদ্যমান। আপনি যদি দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে চান, তাহলে সর্বপ্রথম চিন্তা ও মানসিকতার
দখলদারিত্ব আগে দূর করুন।
আরেকটি উল্ল্যেখযোগ্য প্রসঙ্গ এখানে অনুপস্থিত থাকছে। তা হলো, ভবিষ্যৎ স্বাধীন কাশ্মীরের উপাখ্যাণ বা
রূপরেখা কেমন দেখাবে? আমরা
সকলেই জানি, দখলদারিত্ব, জুলুম-নির্যাতন, এগুলো নিতান্তই অন্যায়। কিন্তু এর
পাশাপাশি এটাও ভাবতে হবে যে, আসলে
কোন ধরণের সমাজে আমরা বসবাস করতে চাই?
আমি মনেকরি এই বিষয়গুলো আলাপ আলোচনায় উঠে আসা দরকার, কারণ,
এর মাধ্যমে মানুষের মনে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশার সঞ্চার ঘটবে।
রিয়াজুল খালিক:
ইদানিং কিছু লোক কাশ্মীরের এই রাজনৈতিক আন্দোলনকে আইসিস বা
আলকায়েদার সাথে সম্পৃক্ত করে ফেলতে চাইছে। আপনার কি মনেহয় কাশ্মীরীরা এ জাতীয়
ধারণার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে?
সালমান সায়্যিদ:
সুস্থ মস্তিষ্কের কোন মানুষ নিজেকে আইসিসের সাথে জড়াতে পারেনা।
কেননা, মুসলিম
আজাদির মূল অর্থবাচকতা কখনোই সম্প্রদায়গত রক্তপাতে পর্যবসিত হতে পারেনা। “আজাদী”
নিশ্চয়ই তাকফীরবাদীতা ও বাথবাদীতার সংমিশ্রণের উর্ধ্বে গিয়ে
আরও সুন্দর ও তাৎপর্য্যময় কিছুর নমুনা পেশ করবে। যেখানে তাকফীরবাদীতা আছে, সেখানে সুন্দর ও উন্নত কোন ভবিষ্যতের
সম্ভাবনা থাকবেনা। তাকফীরবাদীতার সাথে সম্পৃক্ত সবকিছুই সমস্যার সৃষ্টি করবে। আপনি
চিন্তা করলেই এটা বুঝবেন যখন দেখবেন মুসলিম সমাজকে অস্থিতিশীল ও ভেঙে টুকরো করে
ফেলার জন্য তাকফীরী মতবাদকে কিভাবে ব্যাবহার করা হয়েছে। সুতরাং,
কাশ্মীরের সংগ্রামকে আইসিসের সাথে সম্পৃক্ত করা কেবল কাশ্মীরের
অধিকার আদায়ের রাজনৈতিক আন্দোলনের জন্যই ক্ষতিকর না,
বরং পুরো মুসলিম উম্মার ভবিষ্যতের জন্যই ক্ষতিকর!
আশ‘আরি-মাতুরিদি
ধর্মতত্ত্ব
আশ’আরি, মাতুরিদি ও হাম্বালি-আছারি – এই তিন মানহাজ সুন্নি আকিদার
ক্যানোনাইজেশান নির্দেশ করে। আমাদের দেশে প্রধানত হালকা চালের আশ’আরিয়্যা এবং ইবন আব্দ আল-ওয়াহহাবের
নাজদি আকিদা প্রচলিত। নাজদি আকিদায় বিশ্বাসীরা নিজেদের বাদে সবাইকে হয় তাবদি করে, নতুবা তাকফির করে -- অন্তত
তাত্ত্বিকভাবে -- যেটা হয়তো দেশজ আশ'আরিরা
করেনা। আমি এর আগে আছারিয়্যা (তাইমি ঘরানাসহ) নিয়ে বিস্তারিত নোট লিখেছি। আজকে
অ-আছারি ঘরানা নিয়ে লিখবো যাতে আগ্রহী(?)
কেউ উপকৃত হতে পারে এবং নিজেদের অজানাকে দূর করতে পারে।
অনেক শ্রদ্ধেয় বিদ্বান ব্যাক্তি জানতে চেয়েছেন আস্কে, যে,
আকিদা কীভাবে পড়া যায়। অবশ্যই প্রশ্নটা দুভাবে উত্তর দেয়া
যাবে:
ক. সাধারণ ইমান-রুহানিয়্যা চর্চা
খ. তাত্ত্বিক আকাদিমিও পড়াশোনা
শাইখ হাসান আল-শাফি’ই
আল-আযহারির একটা
সিলেবাস আছে এরকম:
--প্রাথমিক:
১. আকিদাত আল-মুসলিম –
মুহাম্মাদ আল-গাযালি (বাংলা,
ইংরেজিতে পাওয়া যায়)
২. আকিদাতুনা –
রাবি আল-জাউহারি
৩. কিসসাত আল-ইমান –
নাদিম আল-জিসর
এই তিনটি বই আছারি,
কালামি দুই ধারার যেকোন কারো জন্যই ভালো বই যারা (ক.)-জাতীয় বই
খুজছেন। আর যারা হালকাভাবে আরো আগাতে চান,
বিশেষ করে আশ’আরি
তরিকায়, তারা
পড়তে থাকুন:
৪. আল-খারিদা আল-বাহিয়্যা ও জাওহারাত আল-তাউহিদ (শারহ ও টিকা
সহকারে)
--মাধ্যমিক:
১. আল-ইরশাদ – ইমাম
আল-হারামাইন
২. শারহ আল-আকাইদ আল-নাসাফিয়্যা – আল-তাফতাযানি
৩. গায়াত আল-মারাম –
আল-আমিদি
৪. আল-তামহিদ –
আল-বাকিল্লানি
--উচ্চ-মাধ্যমিক:
আল-মাওয়াকিফ – আল-ইজি
শা. হাসানের সিলেবাস এখানেই সমাপ্ত।
এখন, সাইদ
ফুদার সিলেবাস
থেকে (যারা আরো সমৃদ্ধভাবে পড়তে চান) আশ’আরি
তরীকার কিছু সংযুক্তি শা. হাসানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করছি:
--প্রাথমিক:
- খারিদার
উপর ইমাম আল-দারদিরের শারহ (বিশেষভাবে দ্রষ্টব্য)
- উম্ম
আল-বারাহিনের উপর ইমাম আল-সানুসির শারহ
- জাউহারার
শারহ হিদায়াত আল-মুরিদ দ্রষ্টব্য
--মাধ্যমিক:
- আল-ইকতিসাদ
– আল-গাযালি
- মা’আলিম –
ফাখর আল-দিন আল-রাযি
- শারহ
আল-আকিদা আল-কুবরা – ইমাম
আল-সানুসি
--উচ্চ-মাধ্যমিক:
- ইমাম
আল-বাইদাউইর ‘তাওালি
আল-আনওয়ারের’ উপর
আল-আস্ফাহানির শারহ
- আল-আরবা’ইন –
ফাখর আল-দিন আল-রাযি
--উচ্চতর:
- শারহ
আল-মাকাসিদ – আল-তাফতাযানি
- শারহ
আল-মাওয়াকিফ – আল-জুরজানি
সাইদ ফুদার সংযুক্তি এখানেই শেষ। বাদ পড়েছে এমন কিছু পরিচিত
কিতাব:
- কাওয়া‘ইদ –
আল-গাযালি
- তুহফাত
আল-মুরিদ – আল-বাজুরি
- আল-ই’তিকাদ –
আল-বাইহাকি
- আল-ইবানা
– আল-আশ’আরি
- আল-মুজাররাদ
– ইবন
ফাউরাক
এখন, আমরা
মাতুরিদি তারিকার দিকে আগাবো।
শা. আল-আসিরি বলেন:
--প্রাথমিক:
১. বাদ’ আল-আমালি
– আল-উশি
২. উমদাত আল-আকিদা –
আল-নাসাফি
--মাধ্যমিক:
১. শারহ আল-নাসাফি –
আল-তাফতাযানি
২. আল-মুসায়ারা –
ইবন আল-হুমাম
--উচ্চ-মাধ্যমিক:
১. তাবসিরাত আল-আদিল্লা –
আল-নাসাফি
২. কিতাব আল-তাউহিদ –
আল-মাতুরিদি
এগুলো শেষে যা সংযোগ করা যেতে পারে:
১. আল-তামহিদ –
আল-কিশি
২. উসুল আল-দিন –
আল-বাযদাউই
৩. শারহ আল-ফিকহ আল-আকবার –
আল-মাগনিসাউই
৪. ইশারাত আল-মারাম –
আল-বায়াদি
৫. তালখিস আল-আদিল্লা –
আল-সাফফার
৬. আকিদাত আল-শাইবানি ও তার শুরুহাত
৭. খিজির বেগ রুমির নুনিয়্যা ও তার শুরুহাত
৮. আল-মুসামারা (মুসায়ারার শরাহ) – ইবন আবি শারিফ
মনে রাখতে হবে,
উছমানি আমলের মূলধারার মাতুরিদি এখন পাওয়া অনেক দুষ্কর। স্বয়ং
বাংলাদেশে আছারিয়্যা-প্রভাবিত আশ’আরিয়্যার
চর্চা হয়। হয়তো কেউ গবেষনা করেছেন/করছেন,
তবে তা জনসম্মুখে নয়। আর,
সেলজুক আমলে
আশ’আরি-শাফি’ই ও মাতুরিদি-হানাফিদের মাঝে বড় ধরণের
ঝগড়া ছিলো সেটা মাথায় রাখা উচিত। একারণেই সরলভাবে বলা উচিত না যে, আশ‘আরি
আর মাতুরিদি একি জিনিস। এই টপিকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে প্রফেসর রুডলফের যেটা
আরবী জানাদেরও পড়া লাযিম: Al-Māturīdī and the Development of
Sunnī Theology in Samarqand।
বড় শিরকে লিপ্ত কোন ব্যাক্তিকে মূর্খতার অজুহাত দেয়ার পেছনে কিছু কারণ আছে।
ক. বড় শিরকের সংজ্ঞা ও ব্যাপ্তি এতো হালকা করে ফেলা যে এটি অযৌক্তিকভাবে প্রশস্ত হয়ে যায়। অর্থাৎ তাউহিদকে এমনভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে টুকরা করা হয়, যে, প্রতিটি টুকরার সাপেক্ষে মানুষকে আলাদা আলাদা করে মুশরিক বলা সম্ভব বা অপরিহার্য হয়ে পরে। ফলে কেউ এক টুকরার সাপেক্ষে মুশরিক, আরেক টুকরার সাপেক্ষে মুসলিম -- অত্যন্ত সমস্যাপূর্ণ কথাবার্তা। দেখা গিয়েছে, আল-সুবকি বা আল-হাইতামির মতো গুরুত্বপূর্ণ উলামাকেও মুশরিক বলা অপরিহার্য হয়ে পরে নাজদি তারিকায়। একারণেই, ‘মুর্খতার অজুহাত’ এখানে খুব কাজে লাগে। নাহলে উম্মতের ৮০% লোককে কাফির-মুশরিক বলে ফেলতে হবে।
খ. ইবন তাইমিয়্যার তাকসিমকে সর্বেসর্বা মনে করা, এবং বাকি গোটা আলিমকুলের কথা আমলে না নেয়া। এবং তাকফির বিষয়ে ইবন তাইমিয়্যার কিছু অস্পষ্ট মাওয়ানিকে ইবন আব্দ আল-ওয়াহহাবের চোখ দিয়ে বিশ্লেষন করা। ফলে শিরক ও তাউহিদ নিয়ে এমন একটা জায়গায় পৌঁছতে হয় যে, এলোপাতারি তাকফির করা ছাড়া উপায় থাকেনা (এদিক দিয়ে আইসিস এবং ইবন আব্দ আল-ওয়াহহাব সৎ ছিলেন; তারা অজুহাত না রেখেই তাকফির করেছে), এবং মুর্খতার অজুহাত দিয়ে খুব শ্যালোভাবে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করার চেষ্টা করে।
মাস’আলা কিন্তু এটা নয় যে ‘শিরক আকবার মুর্খতার কারণে ছাড় পাবে কিনা’, বরং মূল আলাপ হলো: শিরক কাকে বলে।
তাউহিদের বিভাজন কিন্তু নুতন নয়। ইবন আরাবি, ইমাম আল-মাতুরিদি থেকে শুরু করে অনেকেই বিভাজন করেছেন। তবে সেগুলোর মূল বক্তব্য হচ্ছে, আল্লাহ তার যাত বা সত্ত্বাগত, সিফাত বা গুনগত, আফ’আল বা কর্মগত, এবং হুকমগত দিক থেকে কারো ‘অনুরুপ’ নন। কেউ যদি খোদায়ী কোন সত্তা, খোদায়ী সন্তান-সন্ততি, খোদায়ী সহচর ইত্যাদিতে বিশ্বাস করে, কিংবা আল্লাহ ব্যাতিত এমন কোন সত্তাতে যা সর্বজ্ঞানী, পরাক্রমশালী, আল্লাহ্র ইচ্ছা-অনুমতি ছাড়া ওয়াসিলা হিসেবে কাজ করতে পারে, আল্লাহ্র ইচ্ছাকে পাল্টে দিতে পারে – এ ধরণের ব্যাক্তি কাফির ও মুশরিক ব্যাতিত কিছুই নয়। এটা অসম্ভব যে, এই পরিস্থিতিতে কোন ব্যাক্তিকে ‘মূর্খতার অজুহাত’ দেয়া যাবে। আপনি জানেন রাসুল-আল্লাহ সা. তাউহিদের দাওয়াত নিয়ে এসেছেন, অতএব, তাউহিদ বাতিলকারী ঐ বিষয়গুলো যে ‘আল্লাহ্র অনন্যতাকে’ নষ্ট করে দেয় – এটা না বোঝা কখনই অজুহাতযোগ্য নয়।
তাউহিদ দ্বারা এটাও বোঝায় যে, আল্লাহ ইবাদত পাওয়ার দিক থেকেও একমাত্র সত্তা এবং অনন্য। কেউ আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো জন্য সালাত বা হাজ করলে, আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কাউকে খোদা বা প্রভু মনে করে নিকটবর্তী হওয়ার চেষ্টা করলে, আল্লাহ যেটাকে অকাট্যভাবে হালাল/হারাম করেছেন সেটাকে পাল্টাতে চায় এমন কাউকে অনুসরণ করলে (জেনেশুনে যে তারা এগুলো আল্লাহ্র সিদ্ধান্তের বিপরীতে করছেন) এহেন ব্যাক্তি কখনই মূর্খতার অজুহাত পাবেনা। এই বিষয়গুলো যে তাউহিদের সাথে সাংঘর্ষিক তা কোনভাবেই অস্বীকার করা যায়না।
একারণেই শিরক আকবার কখনো ক্ষমাযোগ্য নয় যেটা হয়তো কুফরের অন্যান্য মাস’আলার ক্ষেত্রে সম্ভব। আপনি যদি না বোঝেন আল্লাহ তার যাতের ক্ষেত্রে অনন্য, আপনি ইসলামেই প্রবেশ করতে পারছেন না। আর আপনি যদি ইসলাম গ্রহণ করে অতঃপর শিরক আকবার করেন, এর অর্থ হচ্ছে আপনি তাউহিদের দাওয়াতকে (যা আপনি জানতেন) প্রত্যাখ্যান করেছেন – আপনি আর মুসলিম নন। তবে, এরকম হতে পারে যে, কোন ব্যাক্তি এমন কিছু প্রত্যাখ্যান করলো যা নাবি সা. এনেছেন, কিন্তু সে জানতোনা যে নাবি সা. তা এনেছেন। যেমন, কেউ যদি বেদুইনদের সাথে এমন কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করে যেখানে সে জানতে পারেনি যে রাসুল-আল্লাহ সা. ‘সালাত আদায় ফরজ’ বলেছেন, তাহলে সে অটোম্যাটিক কাফির হবেনা। কারণ সে এমন কিছু প্রত্যাখ্যান করেনি যা, তার জানামতে, রাসুল-আল্লাহ সা. নিয়ে এসেছেন ‘মা’লুম মিন আল-দিন বি আল-দারুরা’ হিসেবে । কিন্তু এই একি উদ্দীপক ‘তাউহিদের’ ক্ষেত্রে খাটবেনা।
কিছু ভাজাপোড়া খাদ্য আকাদেমির পোশাক গায়ে দিয়ে গণ পদ্যে পরিণত হইতে সময় লাগে কম। "There's no such thing as the Islamic world" বা "There's no such thing as Islam" ইত্যাদি লাইনের কথাবার্তা এখন আর সেলফ-হেইটিং 'কাহো না পেয়ার' মজলেমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমেরিকার পলিসি লেভেলে কাজে লাগার যোগ্য অনেক কাজ করে দিচ্ছে আকাদেমিয়াতে আমাদেরই কিছু মুসলিম ভ্রাত/বইন। তাদের বইগুলোতে লজিক এবং ব্রেইনের সদর্প অনুপস্থিতি থাকলেও তারা যথেষ্ট সমাদৃত (প্লাস, তাদের ফেইক ভিক্টিমহুড বা গুরাবানেস তো আছেই -- যেইখানে তারা নাকি খালি (হজর) মুসলিমদের ধাওয়া খান ইসলামের "সত্য" চিত্র তুইলা ধরানোর জন্য)। যাই হোক, এইটার একটা সুন্দর বাট অবভিয়াস ডায়াগনোসিস দিছেন উস্তায দাক্তুর জনাথ্যান ব্রাউন:
“Post 9/11 the establishment (state, government organs, media, major civil society, educational and philanthropic organizations) in the US began promoting ‘moderate Islam/Muslims’ (whether this was planned or not is irrelevant, since it would have been an almost instinctive process). Muslims/Islam had to be politically neutered, uninterested in asserting the very rights their own Western societies guaranteed them, and absolutely had to abandon every sense of fraternal or principled concern for Muslims (or anyone!) elsewhere (So far this is all pretty well established as far as I'm concerned, and I need provide no evidence).
But this was not the whole process. In the little sphere of hyperbole called the academy, where people can exist as contrarian gadflies denying or raging against the very reality that nurtures them and pays them, the above process created its most intense fruit: the ‘academic study of Islam.’ Some Muslims (and non-Muslims who understood ... nay, who had first identified the phenomenon of Orientalism) struggling in the academy worked to point out historical biases in Western scholarship on the Islamic tradition, steadfastly NOT insisting that their own faith commitments be respected or believed by others but asking only that the supposed methods of historical scholarship be applied consistently or that any and all who apply them recognize their own presumptions.
But the post 9/11 ‘moderating’ process cultivated a foil for this unacceptable assertion of integrity. These were Muslim academics who vociferously demanded that their faith be respected, who wouldn't let the Orientalist establishment dictate the path forward or how history was written. But this new school of thought had a built in safety (it had to, otherwise how could it have been allowed to be?), something that would assure it would never pose any threat to the establishment: the Islam they insisted on being respected didn't exist... they themselves admitted, they insisted, it didn't exist. The Islamic world, the umma, none of it existed. And it didn't matter if they produced shoddy scholarship to make this claim; it didn't matter if they poo-pooed the study of classical sources, the need to master languages, read more than a few books, have a minimal respect for chronology, because these were all the rules of the evil, oppressive system that they were raging against. So, in the end they would sit in the academy with nothing to study but themselves, and no one to listen to them but each other. And the methods of those scholars who came before them, whether Muslim or Western, lay in ruins, so that no one could ever do that evil act of asserting something ever again. Except of course all the powerful people who still did...”
আশ’আরি, মাতুরিদি ও হাম্বালি-আছারি – এই তিন মানহাজ সুন্নি আকিদার ক্যানোনাইজেশান নির্দেশ করে। আমাদের দেশে প্রধানত হালকা চালের আশ’আরিয়্যা এবং ইবন আব্দ আল-ওয়াহহাবের নাজদি আকিদা প্রচলিত। নাজদি আকিদায় বিশ্বাসীরা নিজেদের বাদে সবাইকে হয় তাবদি করে, নতুবা তাকফির করে -- অন্তত তাত্ত্বিকভাবে -- যেটা হয়তো দেশজ আশ'আরিরা করেনা। আমি এর আগে আছারিয়্যা (তাইমি ঘরানাসহ) নিয়ে বিস্তারিত নোট লিখেছি। আজকে অ-আছারি ঘরানা নিয়ে লিখবো যাতে আগ্রহী(?) কেউ উপকৃত হতে পারে এবং নিজেদের অজানাকে দূর করতে পারে।
অনেক শ্রদ্ধেয় বিদ্বান ব্যাক্তি জানতে চেয়েছেন আস্কে, যে, আকিদা কীভাবে পড়া যায়। অবশ্যই প্রশ্নটা দুভাবে উত্তর দেয়া যাবে:
ক. সাধারণ ইমান-রুহানিয়্যা চর্চা
খ. তাত্ত্বিক আকাদিমিও পড়াশোনা
শাইখ হাসান আল-শাফি’ই আল-আযহারির একটা সিলেবাস আছে এরকম:
--প্রাথমিক:
১. আকিদাত আল-মুসলিম – মুহাম্মাদ আল-গাযালি (বাংলা, ইংরেজিতে পাওয়া যায়)
২. আকিদাতুনা – রাবি আল-জাউহারি
৩. কিসসাত আল-ইমান – নাদিম আল-জিসর
এই তিনটি বই আছারি, কালামি দুই ধারার যেকোন কারো জন্যই ভালো বই যারা (ক.)-জাতীয় বই খুজছেন। আর যারা হালকাভাবে আরো আগাতে চান, বিশেষ করে আশ’আরি তরিকায়, তারা পড়তে থাকুন:
৪. আল-খারিদা আল-বাহিয়্যা ও জাওহারাত আল-তাউহিদ (শারহ ও টিকা সহকারে)
--মাধ্যমিক:
১. আল-ইরশাদ – ইমাম আল-হারামাইন
২. শারহ আল-আকাইদ আল-নাসাফিয়্যা – আল-তাফতাযানি
৩. গায়াত আল-মারাম – আল-আমিদি
৪. আল-তামহিদ – আল-বাকিল্লানি
--উচ্চ-মাধ্যমিক:
আল-মাওয়াকিফ – আল-ইজি
শা. হাসানের সিলেবাস এখানেই সমাপ্ত।
এখন, সাইদ ফুদার সিলেবাস থেকে (যারা আরো সমৃদ্ধভাবে পড়তে চান) আশ’আরি তরীকার কিছু সংযুক্তি শা. হাসানের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করছি:
প্রাথমিক:
- খারিদার উপর ইমাম আল-দারদিরের শারহ (বিশেষভাবে দ্রষ্টব্য)
- উম্ম আল-বারাহিনের উপর ইমাম আল-সানুসির শারহ
- জাউহারার শারহ হিদায়াত আল-মুরিদ দ্রষ্টব্য
মাধ্যমিক:
- আল-ইকতিসাদ – আল-গাযালি
- মা’আলিম – ফাখর আল-দিন আল-রাযি
- শারহ আল-আকিদা আল-কুবরা – ইমাম আল-সানুসি
উচ্চ-মাধ্যমিক:
- ইমাম আল-বাইদাউইর ‘তাওালি আল-আনওয়ারের’ উপর আল-আস্ফাহানির শারহ
- আল-আরবা’ইন – ফাখর আল-দিন আল-রাযি
উচ্চতর:
- শারহ আল-মাকাসিদ – আল-তাফতাযানি
- শারহ আল-মাওয়াকিফ – আল-জুরজানি
সাইদ ফুদার সংযুক্তি এখানেই শেষ। বাদ পড়েছে এমন কিছু পরিচিত কিতাব:
- কাওয়া’ইদ – আল-গাযালি
- তুহফাত আল-মুরিদ – আল-বাজুরি
- আল-ই’তিকাদ – আল-বাইহাকি
- আল-ইবানা – আল-আশ’আরি
- আল-মুজাররাদ – ইবন ফাউরাক
এখন, আমরা মাতুরিদি তারিকার দিকে আগাবো।
শা. আল-আসিরি বলেন:
প্রাথমিক:
১. বাদ’ আল-আমালি – আল-উশি
২. উমদাত আল-আকিদা – আল-নাসাফি
মাধ্যমিক:
১. শারহ আল-নাসাফি – আল-তাফতাযানি
২. আল-মুসায়ারা – ইবন আল-হুমাম
উচ্চ-মাধ্যমিক:
১. তাবসিরাত আল-আদিল্লা – আল-নাসাফি
২. কিতাব আল-তাউহিদ – আল-মাতুরিদি
এগুলো শেষে যা সংযোগ করা যেতে পারে:
১. আল-তামহিদ – আল-কিশি
২. উসুল আল-দিন – আল-বাযদাউই
৩. শারহ আল-ফিকহ আল-আকবার – আল-মাগনিসাউই
৪. ইশারাত আল-মারাম – আল-বায়াদি
৫. তালখিস আল-আদিল্লা – আল-সাফফার
৬. আকিদাত আল-শাইবানি ও তার শুরুহাত
৭. খিজির বেগ রুমির নুনিয়্যা ও তার শুরুহাত
৮. আল-মুসামারা (মুসায়ারার শরাহ) – ইবন আবি শারিফ
মনে রাখতে হবে, উছমানি আমলের মূলধারার মাতুরিদি এখন পাওয়া অনেক দুষ্কর। স্বয়ং বাংলাদেশে আছারিয়্যা-প্রভাবিত আশ’আরিয়্যার চর্চা হয়। হয়তো কেউ গবেষনা করেছেন, তবে তা জনসম্মুখে নয়। আর, সেলজুক আমলে আশ’আরি-শাফি’ই ও মাতুরিদি-হানাফিদের মাঝে বড় ধরণের ঝগড়া ছিলো। একারণেই সরলভাবে বলা উচিত না যে, আশ’আরি আর মাতুরিদি একি জিনিস। এই টপিকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে প্রফেসর রুডলফের যেটা আরবী জানাদেরও পড়া লাযিম: Al-Māturīdī and the Development of Sunnī Theology in Samarqand।
তারক আল-সালাত বা সালাত বর্জন নিয়ে কিছু মানুষ খুশি হয়। খুশি হয় এই কারণে যে, তারা দেখাতে পারবে যে, হুহ, ইমাম আহমাদও তাকফিরাইছেন, আমাদের তাকফিরি ডাকলে ওনাকেও ডাকতে হবে। অনেক মজার, তাইনা? অ-নাজদিদের লুঙ্গী সব কুলে গেল বলে!!
আবার এদিকে অনেকে সালিহ আল-ফাউযানের অপরিণত তাকফিরের দোহাইয়ে তা হাম্বালি ফিকহ বলে চালিয়ে দিতে সুখ পায়। (কমেন্টে আল-ফাউযানের ফাতওয়া)
মোটেইনা। আমি হাম্বালি মাযহাবের মতকে পরিষ্কার করছি নীচে।
ক.
শা. আল-আলবানি মনে করতেন এটা কুফর না। শা. ইবন উছাইমিন (কা.সি.) বলেছেন 'তারক আল-কুল্লি' বা সম্পূর্ণভাবে সালাত ত্যাগ করলেই কেবল কাফির, নাহলে না। সমস্যা হচ্ছে, ঠিক কতোটুকু ত্যাগ করলে সেটা সম্পূর্ণ, সে বিষয়ে কোন দিক নির্দেষনা নেই। এক সপ্তাহ? শুধু ঈদের সালাত করলে? বা শুধু জুমু'আর সালাত? এই 'তারক আল-কুল্লি' বলতে কী বুঝিয়েছেন সেটা অস্পষ্ট। যদিও প্রয়োগের বেলায় কিছু ফাতওয়াতে শাইখকে যখন বলা হয়েছিল, "একজন নামাজ পড়েনা", তখন তিনি তার ইসলাম বাতিল করে দিয়েছিলেন। যাই হোক, তাত্ত্বিকভাবে, উনার তরীকা অনুযায়ী, কখন তাকফির করা হবে সেটা well-defined না -- যা সমস্যাজনক। ইবন তাইমিয়্যাও রা. কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে, ইতা-র ক্ষেত্রে একটু অন্যরকম যে, এটা এমন কুফর যেটা তাকফিরযোগ্য নয়। কেমন? 'নিফাক ই'তিকাদি' বা 'বিশ্বাসগত নিফাক' -- এখানে মানুষ অন্তরে সুস্পষ্ট কুফর পোষণ করে, কিন্তু মুখে কালিমা পড়ে। যেহেতু কুফরটি গোপন, তাই তাকফির করার সুযোগ নেই। নিফাক ই'তিকাদি যদি প্রকাশ হয়েই যায়, তাহলে সেটি আর নিফাক থাকেনা, প্রকাশ্য কুফর হয়ে যায়। পরিপূর্ণ সালাত ত্যাগের কুফরের জন্য, ইতা-র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এমন কোন 'দাবিত' বা শর্ত পাওয়া যায়না যার মাধ্যমে কুফরটি প্রকাশ হতে পারে। সুতরাং, তাকফির করা যাচ্ছেনা কোনভাবে। এবং ইতার এই মত ওনার নিজস্ব ইজতিহাদ যা চার মাযহাবের কোন মু'তামাদের সাথে মিলেনা।
খ.
ভাবে হাম্বালি, কিন্তু চলনে নাজদি ও শাউকানিপন্থী এরকম আলিমদের মধ্যে অনেকে বলে থাকেন, ইচ্ছা করে এক ওয়াক্ত, হ্যা এক ওয়াক্ত, সালাত ত্যাগ করলেই একজন কাফির হয়ে যাবে। যেমন: আল-ফাউযান, ইবন বায প্রমুখ। যেটা কোনোক্রমেই, কোনভাবেই হাম্বালি অবস্থান নয়। দেখুন।
হাম্বালিদের মধ্যে ইবন কুদামা, ইবন বাত্তা প্রমুখ বলে থাকেন তারক আল-সালাত কুফর নয়। ইবন কুদামা বরং বলেছেন যে, কুফর নয় -- এর উপর ইজমা আছে।
এটা এই মাযহাবের শক্তিশালী একটি ইখতিয়ার।
তবে হাম্বালিদের মুতামাদ হলো, তারক আল-সালাত কুফর, কিন্তু, বিশা-ল কিন্তু, কিছু শর্ত আছে।
১. প্রথমত, সে সম্পূর্ন সালাত পড়া বাদ দিয়ে দিবে, এবং সরকারের কাছে সেটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে কোন ধোঁয়াশা ব্যাতিরেকে।
২. অতঃপর সরকার তাকে ডেকে পাঠাবে। সরকারী কাদি (বিচারক) তখন বলবে ইস্তিতাবা করতে অর্থাৎ তওবা করে সাথে সাথে সালাত আদায় করার প্রতিশ্রুতি দিতে।
৩. সে ইস্তিতাবা করতে রাজি না হলে তিনদিন ধরে তাকে এক নাগারে ইস্তিতাবার আহ্বান জানানো হবে।
৪. এই তিনদিন পরেও যদি সে পড়তে না চায়, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। (১-৪) এ পর্যন্ত শাফি'ই, মালিকি মাযহাবও একি কথা বলে।
৫. এখানে এসে দ্বিমত দেখা গিয়েছে। শাফি'ই ও মালিকি মতে, এই সর্বোচ্চ শাস্তি হবে হাদ হিসেবে (অর্থাৎ ব্যাক্তি মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরণ করেছে), আর হাম্বালিরা বলে রিদ্দা হিসেবে (অর্থাৎ ব্যাক্তি মুরতাদ হিসেবে মারা গিয়েছে)। ব্যাস এটুকুই।
সুতরাং দেখা গেল, হাম্বালিদের এই তাকফিরের ইল্লা (বা কার্যকরণ শর্ত) হলো 'ইনাদ' বা ব্যাক্তির চূড়ান্ত ঐচ্ছিক গোয়ার্তুমী। অর্থাৎ, কোন ব্যাক্তিকে ইসলামি সরকার তিনদিন ধরে একটানা বৈচিত্র উপায়ে (যেখানে তাকে চূড়ান্ত পর্যায়ের persuasion, ভয়ভীতি, আশা ইত্যাদি দেখানো হবে) ইস্তিতাবার আহ্বান জানানোর পরে, সর্বশেষ যদি সে 'ইনাদ' প্রদর্শন করে সালাত পড়বেই-ইই না বলে -- তাহলেই তাকে তাকফির করা যাবে। এটাই ইল্লা, শুধু সালাত বর্জন করাটা ইল্লা না। এবং এই মত হাম্বালিদের মুফরাদাতের অন্তর্ভুক্ত -- জুমহুর এর সাথে একমত না। নাজদি-সালাফিদের তাকফিরের সাথে কোন মাযহাবের কোন দূরতম সম্পর্ক নেই।
গ.
(হানাফি মতে কোন হাদও নেই। এটি শুধু কাবিরা গোনাহ। ইমাম তা'যির দিতে পারে সর্বোচ্চ। রিদ্দা বা হাদের জন্য তারা কোন পোক্ত দালিল পাননি।)
আসল কথা হচ্ছে, তারকের শাস্তি (হাদ বা রিদ্দা যাই হোক) বাস্তবিকভাবে এটা প্রয়োগযোগ্য নয়। ঐতিহাসিকভাবে প্রয়োগ হয়নি। অনেকটা hypothetical deterrant। যদি কেউ স্ব-ইচ্ছায় পাবলিকের সামনে গিয়ে ঘোষনা করে যে, আমি কখনই সালাত আদায় করিনা, বা প্রয়োজন মনে করিনা, বা পড়তে ভাল্লাগেনা, তাহলেই তাকে কোর্টে চালান দেয়া যাবে। নাহলে, এটা ইসলামি সরকারের দায়িত্বে নেই যে, তারা ঘরে ঘরে গোয়েন্দা নিযুক্ত করবে ইবাদত পর্যবেক্ষন করার জন্য। কাজেই এটা খুবি hypothetical। ইবন কুদামা নিজেই বলেছেন যে, ইস্তিতাবার জন্য চূড়ান্ত প্রচেষ্টার পরে মৃত্যুর সম্মুখীন কেউ সালাত আদায় করতে রাজী হয়নি, অথবা সালাত বর্জনের জন্য হাদ কায়েম হয়েছে, এমন কোন কেইস উনি জানেন না এবং এটাই মাশহুর।
বাঙ্গালি হিসেবে আমি আশাবাদী। আমার প্রিয়জনদের অনেকেই ঘরে থাকতে পারেন না। আমার শ্রদ্ধেয় পরহেজগার আত্মীয় বুকে বুলেট নিয়েছেন। আমাদের মা-বাবা চোখ মুছে বলে দিয়েছেন ঘরে না আসতে। আমি আশাবাদী কারণ আমি ক্লান্ত। আমি আশাবাদী কারণ আমি আমার বোকামীর রাজনীতিতে বারবার ব্যার্থ হবার পরেও সেটা নিয়ে চলা ছাড়া অন্য কিছু বিবেচনা করার ধৈর্য্য আমার নেই। আমি আশাবাদী কারণ বোকামীর মাসুল দেয়া আমার জন্য এক ধরণের জিহাদ, গান্ডু হয়ে মরা শাহাদাত, গান্ডু হয়ে বেঁচে থাকা গাজীয়ত। আমি আশাবাদী কারণ আমি মনে করি সিস্টেমটা এক ধরণের আমলকি -- হয়তো তিতকুটে ভাব কেটে এক সময় একটু মিষ্টি আসবে।
আমি আশাবাদী কারণ আমি মনে করি না আল্লাহ সিস্টেম পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখেন যদি আমরা নন-সিস্টেম্যাটিক রাজনীতি করি।
গণতন্ত্র নিয়ে
প্রচুর আলাপ হয় বিভিন্ন প্রকারের নির্বাচনের আগে। শীতকালীন সকালের আড্ডার মতো। ধর্মতত্ত্ব থেইকা শুরু কইরা
সুদানের ভূগোল সবই। তয় সুখের কথা হইলো, পক্ষে বিপক্ষের সবাই-ই মোটামুটি useless। সবাই equally losers। সো, বিবাদের কারণ দেখিনা। পরস্পরের গালে চুমু খেয়ে, হালকা...মানে...পানি খেয়ে, লেপের নীচে ডাইভ দেন।
ইমাম শিহাব
আল-দিন আল-মারজানি আল-কাযানি আল-হানাফির একটা গুরুত্বপূর্ন পুস্তিকা হলো 'নাযুরাত
আল-হাক ফি ফারদিয়্যাতি আল-ইশা ওয়া ইন লাম য়াগিব আল-শাফাক'। হানাফি
মাযহাবের (এবং অন্য যেকোন মাযহাব) যেকোন তালিবের এটা অন্তত একবার হলেও পড়া উচিত। বই লেখার
প্রেক্ষাপট ছিল ইশার সালাতের ওয়াক্ত নিয়ে
(যখন সূর্য অস্ত যায়না)। কিন্তু ছোট এখানেই তিনি উসুল, আকিদা, ও ফিকহের অনেক ইন্টারেস্টিং ব্যাপার এনেছেন যা
ভাবনার খোরাক যোগাবে। আমার কাছে
দার আল-ফাতহের কপি আছে যেটা উরখান আনজাকার আর আব্দ আল-কাদির য়ালমায তাহকিক করেছেন।
No comments:
Post a Comment