Thursday, March 19, 2020

ইসলামি উক্তি সংকলন


সেরা সেরা কিছু ইসলামিক উক্তি যা প্রত্যেক মুসলিমের পড়া উচিত। নিজের ইমানি শক্তি বাড়াতে উক্তি গুলা নিয়মিত পড়ুন।




আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“সেই ব্যক্তিই অভিশপ্ত যে মরে যায় অথচ তার খারাপ কাজগুলো পৃথিবীতে রয়ে যায়।” — আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“অপরের কষ্ট দূর করার জন্য কষ্ট করার মাঝে রয়েছে মহত্বের প্রকৃত নির্যাস।”
— আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“মৃত্যুকে খুঁজো (অর্থাৎ, সাহসী হও) তাহলে তোমাদেরকে জীবন দান করা হবে।”
— আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে সবর করার চেয়ে পরীক্ষা থেকে সুরক্ষিত থেকে কৃতজ্ঞ হওয়া আমার কাছে বেশি পছন্দের।”
— আবু বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)







উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“কোন ভাই যদি আপনাকে গোপনে কিছু কথা বলে চলে যাবার আগে যদি তা অন্য কাউকে বলতে নিষেধ না করেও থাকেন, তবু কথাগুলো আপনার জন্য আমানাত।
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলতেন:
“এসো আমরা আমাদের ঈমানকে বাড়াই, আর তাই চলো আমরা আল্লাহকে স্মরণ করি।”

​"যিনি ছাড়া কোন রব নেই সেই আল্লাহর কসম, যদি আমার কাছে দুনিয়ার সকল স্বর্ণ এবং রৌপ্য থাকতো, আমি সেগুলোর বিনিময়ে হলেও মৃত্যুর পরে যে ভয়াবহতা রয়েছে তা থেকে বাঁচার চেষ্টা করতাম।”​
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“যারা সবসময় ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে তাদের সাথে উঠাবসা করুন, কেননা তাদের হৃদয় সবচেয়ে কোমল।”
— হযরত উমার (রা) .

এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা চিন্তাভাবনা করছিলেন। হযরত উমার (রা) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কেন তোমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাও?
সে উত্তর দিলো, “আমি তাকে ভালোবাসি না।”
উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, “সমস্ত সংসারের ভিত্তি কি ভালোবাসা হতেই হবে? পারস্পারিক সহানুভূতি আর আনুগত্যের কী হবে?”

“নিজেকে নিয়মিত জাহান্নামের (আগুনের) কথা স্মরণ করিয়ে দিন, কেননা নিশ্চিতভাবেই জাহান্নামের উত্তাপ অত্যন্ত বেশি, গভীরতা অত্যাধিক এবং তার অস্ত্র হলো লোহা।”
— উমার বিন খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আমরা তো মর্যাদাহীন লোক ছিলাম, আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন ইসলামের মাধ্যমে। সুতরাং, আমরা যদি আল্লাহ আমাদেরকে যা দ্বারা সম্মানিত করেছেন তা থেকে দূরে সরে গিয়ে অন্য কোথাও সম্মান খুঁজি তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে পুনরায় অপমানিত করবেন।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আজকের কাজ আগামীকাল করার জন্য রেখে দিবেন না। পরে দেখা যাবে কাজগুলো জমা হয়ে যাবে এবং আপনি কিছুই অর্জন করতে পারবেন না।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আল্লাহকে ভয় করো, কেননা যে তাকে ভয় করে সে কখনো একাকীত্ব অনুভব করে না।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আমি সাদা পোশাক পরিহিত কুরআন তিলাওয়াতকারীর দিকে তাকাতে ভালোবাসি।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“কুরআন তিলাওয়াত করতে দেখে বোকা হয়ে যেয়ো না কারণ তখন আমরা কেবল শব্দগুলো উচ্চারণ করি। বরং, তার দিকে লক্ষ্য করো যে কুরআন অনুযায়ী আমল করলো।”
— হযরত উমার (রা)

“যতক্ষণ তোমার ভাইয়ের বলা কোন কথার ব্যাপারে তোমার কাছে ভালো কোন ব্যাখ্যা আছে ততক্ষণ তা নিয়ে কোন খারাপ ধারণা পোষণ করবে না।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ
“তোমাদের ভালোবাসা যেন নির্বুদ্ধিতায় পরিণত না হয়, তোমাদের ঘৃণা যেন ধ্বংসে পরিণত না হয়।”
তাকে প্রশ্ন করা হলো, “সেটা কীভাবে হয়?”
তিনি উত্তর দিলেন, “যখন তোমরা ভালোবাসো, তোমরা শিশুদের মতন নির্বোধ হয়ে যাও। আর যখন ঘৃণা করো, তখন তোমরা তোমাদের সঙ্গীদের ধ্বংস কামনা করতে ভালোবাসো।”

“যতদিন আপনার হৃদয় পরিশুদ্ধ থাকবে, ততদিন আপনি সত্য কথা বলবেন।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব

“তোমরা অন্যদের আরবি ভাষা শেখাও কেননা এটা তোমাদের দ্বীনের একটি অংশ।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

আবু আল-আশহাব বলেন:
একদিন উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) একটি ময়লা-আবর্জনার স্তূপ অতিক্রম করার সময় থমকে দাঁড়ালেন, দেখে মনে হচ্ছিলো তার সঙ্গীগণ এতে (দুর্গন্ধে) কষ্ট পাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, “এটা তোমাদের সেই পৃথিবী যার জন্য তোমাদের এত আগ্রহ এবং যার জন্য তোমরা কান্নাকাটি করো।”

“প্রকৃতপক্ষে ইসলামের ভিত্তিগুলো একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত হবে যদি ইসলামে এমন মানুষদের আবির্ভাব হয় যারা কখনো অজ্ঞতাকে চিনতে পারেনি।”
— হযরত উমার (রা)

“সেই মানুষগুলোর মাঝে ভালো কিছু নেই যারা অন্যদের সদুপদেশ দেয় না, এবং সেই মানুষদের মাঝে ভালো কিছু নেই যারা উপদেশ গ্রহণ করতে পছন্দ করে না।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তার খিলাফতকালে গভর্নরদের প্রতি তার লেখা চিঠিতে বলেছিলেন:
“আপনাদের ব্যাপারে যে বিষয়টি আমার চোখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো নামাজ; যে নিয়মিত নামাজ আদায় করে সে তার ঈমানকে সুরক্ষিত করে, কিন্তু যে নামাজকে অবহেলা করে, সে ঈমানের অন্যান্য বিষয়গুলোতে অবহেলা করতে বাধ্য হয়।”

“নিজেকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কথা স্মরণ করিয়ে দাও কারণ তাতে রয়েছে রোগের উপশম, মানুষজনের কথা নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিয়ো না কেননা ওটা হলো রোগ।”
— হযরত উমার (রা)

“একাকী হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো তুমি খারাপ সঙ্গ পরিত্যাগ করেছ। কিন্তু একজন ভালো বন্ধু থাকা একাকীত্বের চাইতে উত্তম।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আমাদের জীবনের সবচাইতে স্বাস্থ্যকর উপাদান হচ্ছে সবর (ধৈর্য)।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“তোমাদের মধ্যে যারা ফাতওয়া দেয়ার ব্যাপারে দুঃসাহসী তারা দুঃসাহসী (পাপ করে) জাহান্নামে যাওয়ার ব্যাপারেও।”
— হযরত উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“কোন মুসলিম ভাইয়ের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসা কোন শব্দের কারণে তার প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সেটির পেছনে ভালো কোনো কারণ খুঁজে পাবেন।”
— হযরত উমার (রা)

উতবান ইবনে মুসলিম (রা) বলেন যে, একবার তিনি ৩০ মাস উমার বিন খাত্তাবের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সঙ্গী ছিলেন। সে সময় উমারকে (রা) বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় এবং তিনি প্রায়ই বলতেন যে, তিনি জানেন না।

“জাহিলিয়াতের প্রকৃতি অনুধাবনে ব্যর্থতা শুরু হলে একে একে ইসলামের বন্ধনী বিচ্ছিন্ন হতে থাকবে।”
— উমার বিন খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আল্লাহর আনুগত্য করা ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে আল্লাহর সাথে একজন ব্যক্তির কোন সম্পর্ক থাকে না।”
— হযরত উমার (রা)

“যারা অন্যদের মন কাড়তে এমন কিছু বিষয় দাবী করে যা তাদের মাঝে নেই, আল্লাহ তাদেরকে অপমানিত করবেন।”
— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)









উসমান ইবনে আফফান (রদিয়াল্লাহু আনহু)

“দুনিয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করা অন্তর হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন,
আখিরাত নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করা অন্তর হলো আলোকিত”
— উসমান ইবনে আফফান (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“অন্তরসমূহ যদি পরিশুদ্ধ হয় তাহলে আল্লাহর গ্রন্থ কুরআনুল কারীমে তাদের তৃষ্ণা কখনো সম্পূর্ণ মিটবে না।”
— উসমান ইবনে আফফান (রাদিয়াল্লাহু আনহু)








আলী ইবনে আবু তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“যে ব্যক্তি ধৈর্যধারণ করতে পারবে, সে কখনো সফলতা থেকে বঞ্চিত হবেনা।
হয়তবা সফল হবার জন্য তার একটু বেশি সময় লাগতে
পারে।”
— আলী ইবনে আবু তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তার ছেলেকে উপদেশ দিয়েছিলেন,
“হে আমার সন্তান! আল্লাহকে এমনভাবে ভয় করো যে সমগ্র মানবজাতির ভালো কাজের সমতূল্য সওয়াব নিয়েও যদি তুমি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করো তবু তিনি তা কবুল করবেন না; এবং আল্লাহর ব্যাপারে এমন আশাবাদী হও যে সকল মানুষের করা পাপকাজের সমপরিমাণ পাপ নিয়েও যদি তুমি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করো তবু তিনি তোমায় ক্ষমা করে দিবেন।”

““সবচেয়ে সুখী ব্যক্তিই সেই যাকে আল্লাহ তা’আলা একজন পূণ্যবতী স্ত্রী দান করেছেন।”
— আলী ইবনে আবু তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“যেসব পাপকাজ তোমরা গোপনে করে থাকো সেগুলোকে ভয় করো, কেননা সেসব পাপের সাক্ষী বিচারক স্বয়ং নিজেই।”
— হযরত আলী (রা)

“অতিরিক্ত সমালোচনা করবেন না। অতিরিক্ত সমালোচনা ঘৃণা এবং খারাপ চরিত্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।”
— হযরত আলী (রা)

“কারো অধঃপতনে আনন্দ প্রকাশ করো না, কেননা ভবিষ্যত তোমার জন্য কী প্রস্তুত করে রেখেছে সে সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞানই নেই।”
— হযরত আলী (রা)

“সেই ব্যক্তিই সবচেয়ে জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান যিনি পরম করুণাময় আল্লাহর দয়ার ব্যাপারে আশা ও আত্মবিশ্বাস না হারানোর জন্য মানুষকে উপদেশ দেন।”
— হযরত আলী (রা)

“আপনার গর্বকে ছুঁড়ে ফেলুন, দাম্ভিকতাকে দমিয়ে দিন আর আপনার কবরকে স্মরণ করুন”
— — আলী ইবনে আবি তালিব (রাযিয়াল্লাহু আনহু)

“হে লেখক! তুমি যা লিখছ তার সবই একজন ফেরেশতা নজরদারী করছেন।তোমার লেখালেখিকে অর্থপূর্ণ করো কেননা অবশেষে একদিন সব লেখাই তোমার কাছে ফেরত আসবে এবং তুমি যা লিখেছ তার জন্য তোমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
— হযরত আলী (রা)

“আপনার দ্বারা নেক কাজ সাধিত হলে আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা করুন, এবং যখন অসফল হবেন তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।”
— আলী ইবন আবু তালীব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“হৃদয় থাকা সকল মানুষের বোধ থাকে না, কান থাকা সকল মানুষই শুনতে পায় না, চোখ থাকা সকল মানুষই দেখতে পায় না।”
— আলী ইবনে আবু তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“কল্যাণপ্রাপ্ত তো সেই ব্যক্তি যার নিজের পাপসমূহ তাকে অন্যদের পাপের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ থেকে বিরত রাখে।”
— হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“জ্ঞানের মত সম্পদ আর নেই, অজ্ঞতার মতন দারিদ্র আর নেই।”
— আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“ফুলের মতন হও, যে তাকে দলিত করে তাকেও সে সুগন্ধ বিলায়।”
— আলী ইবনে আবু তালিব

“রেগে যাবার সময়ের এক মূহুর্তের ধৈর্য রক্ষা করে পরবর্তী সময়ের হাজার মূহুর্তের অনুশোচনা থেকে।”
— হযরত আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“জ্ঞানের জন্য যথেষ্ট সম্মানজনক একটি বিষয় হলো, যারা তেমন একটা জ্ঞানার্জন করেননি, তারাও তা দাবী করেন এবং তাদেরকে যখন জ্ঞানী বলে সম্বোধন করা হয়, তারা আনন্দিত হন। অন্যদিকে অজ্ঞতার জন্য এটাই যথেষ্ট লজ্জাজনক যে, একজন অজ্ঞ লোকও তাকে অজ্ঞ বলে সম্বোধন করাকে ঘৃণা করে।”
— আলী ইবনে আবু তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)









আয়েশা (রা)

এক ব্যক্তি আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো, “আমি কখন জানতে পারবো যে আমি দ্বীনদার?”
তিনি উত্তর দিলেন, “যখন আপনি উপলব্ধি করবেন যে আপনি একজন গুনাহগার।”
সে জিজ্ঞাসা করলো, “আর আমি কখন বুঝবো যে আমি একজন গুনাহগার?”
আয়েশা (রা) উত্তর দিলেন, “যখন আপনি মনে করবেন আপনি একজন দ্বীনদার।”,

​আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন:
“আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনদিন কোন ভৃত্য অথবা কোন মহিলার গায়ে হাত তোলেননি।”










আব্দুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)

মৃত্যুশয্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেছিলেনঃ
“গ্রীষ্মের উত্তপ্ত দিনগুলোতে সাওম পালন করা এবং রাতের বেলা সলাতে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া এই পৃথিবীর আর কোন কিছুকে ছেড়ে যেতে আমি দুঃখবোধ করি না।”

হযরত উমারের যুগে যখন সকল সাহাবীর ভাতা নির্ধারিত হয়, তখন ইবনে উমারের ভাতা নির্ধারিত হয় আড়াই হাজার দিরহাম। পক্ষান্তরে উসামা ইবন যায়িদের ভাতা নির্ধারিত হয় তিন হাজার দিরহাম। ইবন উমার পিতা উমার (রা) -এর নিকট এ বৈষম্যের প্রতিবাদ করে বলেন, কোন ক্ষেত্রেই যখন আমি তার থেকে এবং আপনি তার পিতা থেকে পিছিয়ে নেই, তখন এই বৈষম্যের কারণ কি? উমার (রা) বলেন, সত্যই বলেছ। তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পিতাকে তোমার পিতা থেকে এবং তাঁকে তোমার থেকে বেশি ভালোবাসতেন। জবাব শুনে ইবন উমার (রা) চুপ হয়ে যান।

“লোকে বিদ’আতে কিছু ভালো খুঁজে পেলেও প্রতিটি বিদ’আতই পথভ্রষ্টতা।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)

"আল্লাহর শপথ! যদি আমি না খেয়ে সারাদিন রোযা রাখি, সারারাত না ঘুমিয়ে সলাতে দাঁড়িয়ে থাকি, আমার সমস্ত সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করি; এরপর যদি যারা আল্লাহকে মেনে চলেন এমন মানুষদের প্রতি অন্তরে ভালোবাসা না রেখে এবং যারা আল্লাহর অবাধ্য তাদের প্রতি অন্তরে ঘৃণা না রেখে মারা যাই ; সেই কাজগুলো আমাকে একটুও উপকৃত করবে না।”
— আবদুল্লাহ বিন উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)

সত্য কথা বলতে আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কখনো ভয় পেতেন না।
একবার হাজ্জাজ খুতবা দিচ্ছিলেন। ইবন উমার তাকে লক্ষ্য করে বললেন:
“এই লোকটি আল্লাহর দুশমন। সে মক্কার হারামের অবমাননা করেছে, বাইতুল্লাহ ধ্বংস করেছে এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের হত্যা করেছে।”

ইবনে উমারের জীবনীতে আমরা দেখতে পাই, তাঁর আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত স্বচ্ছল ছিল। হাজার হাজার দিরহাম একই বৈঠকে ফকীর-মিসকীনদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন। কিন্ত তার নিজের ঘরের আসবাবপত্রের মোট মূল্য একশ দিরহামের বেশি ছিলনা। মায়মূন ইবন মাহরান বলেন, “আমি ইবন উমারের ঘরে প্রবেশ করে লেপ, তোষক, বিছানাপত্র ইত্যাদির দাম হিসাব করলাম। সব মিলিয়ে একশ দিরহামের বেশি হলনা।” তিনি এমনই সরল ও অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন। নিজের কাজ তিনি নিজ হাতে করতেন। নিজের কাজে অন্য কারো সাহায্য গ্রহণ তাঁর মনঃপু









আব্দুল্লাহ বিন মাস’উদ

“জঘন্য পাপগুলোর একটি হলো যখন একজন মানুষ তার অপর ভাইকে বলে, “আল্লাহকে ভয় করো” এবং সে তার জবাবে বলে, “তোমার নিজেকে নিয়ে চিন্তা করো।”
— আব্দুল্লাহ বিন মাস’উদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ার আগেই তা অর্জন করো, আর জ্ঞান হারিয়ে যায় যখন আলেমগণ ইন্তেকাল করেন। তোমরা জানো না যে কখন তা তোমাদের কাজে লাগবে।”
— আব্দুল্লাহ বিন মাস’উদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আল্লাহ যা আগে থেকেই নির্ধারিত রেখেছেন সে ব্যাপারে ‘যদি এমনটি না হতো’ বলার চেয়ে উত্তপ্ত লাল কয়লা ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত কামড়ে ধরে থাকাও আমার কাছে অনেক প্রিয়।”
— আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

​হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) জীবিত ছিলেন উসমান (রা) এর খিলাফতকাল পর্যন্ত । তিনি যখন অন্তিম রোগ শয্যায়, তখন উসমান (রা) একদিন তাকে দেখতে গেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ
– আপনার অভিযোগ কীসের বিরুদ্ধে?
— আমার পাপের বিরুদ্ধে।
– আপনার চাওয়ার কিছু আছে কি?
— আমার রবের রহমত বা করুণা।
– বহুবছর যাবত আপনার ভাতা নিচ্ছেন না, তা কি আবার দেয়ার নির্দেশ দেব?
— আমার কোন প্রয়োজন নেই।
দিনশেষে রাত্রি নেমে এলো, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ তার রফীকে আলা-শ্রেষ্ঠতম বন্ধুর সাথে মিলিত হলেন। খলীফা উসমান তাঁর জানাযার নামায পড়ান এবং হযরত উসমান ইবন মাজউনের (রা) পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

“আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কাজ করে যদি আপনি লোকজনকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করেন তাহলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন না।”
— আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“ভালো কাজকে যিনি বীজ হিসেবে বুনেছেন সম্ভবত তার ফসল হবে আশা,
খারাপ কাজকে যে বীজ হিসেবে বুনেছে সম্ভবত তার ফসল হবে অনুতাপ।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে মাস’উদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলা হয়েছিলো,
“আমরা কিয়াম আল-লাইল আদায় করতে পারছি না।”
তিনি উত্তর দিলেন, “তোমাদের নিজেদের পাপকাজগুলো থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখ।”

​"নিশ্চয়ই একজন লোকের কোন কাজ ছাড়া অযথা বসে থাকা দেখতে আমি ঘৃণা করি​,​ যখন ​সে ​​দুনিয়ার জীবনের জন্য কোন কাজ করছে না, এমনকি আখিরাতের জন্যও ​কিছু করছে না।​”
— আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)








আবু দারদা রাঃ

“আমি এমন তিনটি জিনিস ভালোবাসি লোকে যা ঘৃণা করে : দারিদ্র, অসুস্থতা এবং মৃত্যু। আমি এদের ভালোবাসি কেননা দারিদ্র হচ্ছে বিনয়, অসুস্থতা হলো গুনাহের মোচন এবং মৃত্যুর ফলাফল হলো আল্লাহর সাথে সাক্ষাত লাভ করা।”
— আবু দারদা (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“কোন দরজায় যখন কেউ কড়া নাড়ে, তখন দরজাটি তার জন্য খুলে যাওয়ার খুব কাছে থাকে।
যে ব্যক্তি অনেক দু’আ করতে থাকে তখন তার দু’আ কবুল হবার দ্বারপ্রান্তে থাকে।”
— আবু দারদা আল আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“শরীরের সম্পদ হচ্ছে সুস্বাস্থ্য।”
— আবু দারদা আল-আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আপনি ততদিন পর্যন্ত ‘আলিম (স্কলার) হতে পারবেন না যতদিন পর্যন্ত আপনি মুতা’আল্লিম (ছাত্র) হতে না পারছেন এবং আপনি ততদিন পর্যন্ত মুতা’আল্লিম (ছাত্র) হতে পারবেন না যতদিন আপনার যেটুকু ‘ইলম (জ্ঞান) আছে তদনুযায়ী ‘আমল (কাজ) না করছেন।”
— আবুদ দারদা আল-আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)

“আমি সিজদারত অবস্থায় আমার ৭০ জন দ্বীনী ভাইয়ের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করি, আমি তাদের সবার নাম এবং তাদের পিতার নাম উল্লেখ করি।”
— আবু দারদা আল-আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)








আল হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

আল হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
“মন্দের মূল তিনটি এবং শাখা ছয়টি।
মূল তিনটি হলো —
১) হিংসা-বিদ্বেষ,
২) লোভ-লালসা এবং
৩) দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা।
আর শাখা ছয়টি হলো —
১) নিদ্রা,
২) পেট ভরে খাওয়া,
৩) আরাম-আয়েশ,
৪) নেতৃত্ব,
৫) প্রশংসা পাওয়া ও
৬) গর্ব-অহংকারের প্রতি আকর্ষণ ও ভালোবাসা।”

“এই দুনিয়াতে কল্যাণময় হচ্ছে জ্ঞানার্জন ও আল্লাহর ইবাদাত করা
এবং আখিরাতে কল্যাণময় হচ্ছে জান্নাত”।
— হাসান আল বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহর যিকরে, সলাতে এবং কুরআন তিলাওয়াতে যে ব্যক্তি সুখ খুঁজে পায় না, সে অন্য কোথাও তা খুঁজে পাবে না।”
— হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“বুদ্ধিমান ব্যক্তির জিহবা তার হৃদয়ের পেছনে থাকেঃ সে যখন কথা বলতে চায়, প্রথমে সে চিন্তা করে। যদি শব্দগুলো তার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে সে তা বলে। আর যদি কথাগুলো তার জন্য অকল্যাণকর হয় তাহলে সে চুপ থাকে।
একজন মূর্খ ব্যক্তির জিহবা তার হৃদয়ের সামনে থাকেঃ সে কথা বলার সময় খুব কমই চিন্তা করে এবং তার জন্য কল্যাণকর বা অকল্যাণকর যা-ই হোক সে বলে ফেলে।”
— প্রখ্যাত তাবিঈ ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“একজন মু’মিনের যত গুণাবলী রয়েছে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো ক্ষমাশীলতা।”
— আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম আল-হাসান আল-বাসরী বলেছিলেন:
“পৃথিবীর জীবনটা তিনটি দিনের–
গতকালের দিনটিতে যা করা হয়েছে সেগুলো নিয়ে সেটি চলে গেছে;
আগামীকালের দিনটিতে হয়ত আপনি না-ও পৌছতে পারেন;
কিন্তু আজকের দিনটি আপনার জন্য সুতরাং যা করার আজই করে নিন।”

আমি এমন মানুষ দেখেছি, যাদের জন্যে এই দুনিয়া তাদের পায়ের নিচের ধুলো থেকেও তুচ্ছ। আমি এমন মানুষ দেখেছি যারা দিনশেষে শুধুমাত্র তাদের নিজের অংশের খাবারটুকু জোগাড় করতে পারতেন, তবুও তারা বলতেন, “আমি এর সবটুকু দিয়ে নিজের উদরপূর্তি করব না। আমি অবশ্যই এর কিছু অংশ আল্লাহর ওয়াস্তে দান করব।” এরপর তারা তাদের খাবারের কিছু অংশ দান করে দিতেন যদিও গ্রহণকারীর চেয়ে ওই খাবারটুকু তাদেরই বেশি প্রয়োজন ছিল।
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“কম বয়সে কোন কিছু শেখার প্রভাব অনেকটা পাথরের উপরে খোদাই করে লেখার মতন।”
— ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“হায় আদম সন্তান! তোমরা কি আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করতে সক্ষম? যে আল্লাহকে অমান্য করে সে তো তাঁর সাথেই যুদ্ধ ঘোষণা করল! আল্লাহর শপথ! বদরের ৭০ জন যোদ্ধার সাথে আমার দেখা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগেরই পোষাক ছিল পশমের।”
​​তোমরা যদি তাদের দেখতে তাহলে তাদের উন্মাদ বলতে, আর তারা যদি তোমাদের মধ্যে উত্তমদের দেখতেন তাহলে বলতেন, “আখিরাতে তাদের জন্যে কিছু নেই।” তারা যদি তোমাদের মধ্যে অধমদের দেখতেন তাহলে তারা বলতেন, “তারা শেষ বিচারের দিন’-এ বিশ্বাস করে না।”
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“অন্তরমাঝে যেসব কুমন্ত্রণা সৃষ্টি হয় এবং দূর হয়ে যায় তা সব শয়তানের পক্ষ থেকে। এসব কুমন্ত্রণা দূর করার জন্য আল্লাহর যিকর ও কুরআন তিলাওয়াতের সাহায্য নেয়া উচিত। আর যেসব কুমন্ত্রণা স্থায়ী হয়ে যায়, বুঝতে হবে তা নফসের পক্ষ থেকে। আর তা দূর করার জন্য সলাত, সাওম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলনের সাহায্য নেয়া উচিত।”
— আল হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের জন্য বিক্রি করলে আপনি দুই জীবনেই জয়ী হবেন।
আখিরাতের জীবনকে দুনিয়ার জন্য বিক্রি করলে আপনি দুই জীবনেই পরাজিত হবেন।”
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

হাসান আল-বাসরীকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো,
“বান্দার কি লজ্জা পাওয়া উচিত না যে পাপ করার পর সে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে, তারপর আবার পাপ করে এবং আবারো অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে?”
তিনি বললেন, “শয়তান ঠিক সেটাই চায়, কখনো অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করা (ইস্তিগফার) থামিয়ে দিয়ো না।”

“মুমিন মুমিনের অংশ। সে তার ভাইয়ের জন্য আয়না স্বরূপ; সে তার ভাইয়ের মধ্যে অপছন্দনীয় কিছু দেখলে তাকে সংশোধন ও ঠিক-ঠাক করে দেবে এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে তার কল্যাণ কামনা করবে।”
— আল হাসান আল বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমি সেসব মানুষদের (সালাফদের) দেখেছিলাম তারা তাদের দিরহাম ও দিনারের (অর্থাৎ, তাদের টাকার) চেয়ে সময়ের প্রতি অনেক বেশি যত্নবান ছিলেন।”
— আল-হাসান আল-বাসরী (রহিমাহুল্লাহ)

এক ব্যক্তি ইমাম আল-হাসান আল-বাসরীর কাছে এসে বললো: “আমি আপনার সাথে ধর্ম নিয়ে বিতর্ক করতে চাই।”
তিনি উত্তর দিলেন: “আমি আমার ধর্ম সম্পর্কে জানি। আপনি যদি আপনার ধর্মকে হারিয়ে ফেলে থাকেন তাহলে বাইরে যান এবং খুঁজতে শুরু করুন।”
— আল-হাসান আল-বাসরি

“নিকৃষ্ট তো সেই মৃতব্যক্তির পরিবারের মানুষগুলো, যারা মৃত মানুষটির জন্য কান্নাকাটি করে অথচ তার রেখে যাওয়া ঋণ পরিশোধ করে না।”
— আল-হাসান আল-বাসরি

​”হে আদমের সন্তানেরা! পৃথিবীর মাটির উপরে যতক্ষণ ইচ্ছা করে হেঁটে নাও কেননা খুব শীঘ্রই সেটা তোমার কবরে পরিণত হয়ে যাবে। মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পর থেকে তো তোমার জীবনের আয়ু কমে যাওয়াকে তুমি ঠেকিয়ে রাখতে পারনি।”
— ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি যখন একদল তর্করত মানুষের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তিনি বলেনঃ
“এই লোকেরা ইবাদাত করার ব্যাপারে ক্লান্ত হয়ে গেছে, কথাবার্তা বলা এদের জন্য খুব সহজ হয়ে গেছে এবং এদের তাকওয়া কমে গেছে, আর তাই এত সহজেই কথাবার্তা বলে এবং তর্কাতর্কি করে।”

এক ব্যক্তি ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ) এর কাছে এসে বললোঃ ‘আপনার আশেপাশে কিছু মানুষ এসে বসে যেন তারা আপনার দোষ-ত্রুটি খুঁজে পায়।’
তিনি উত্তর দিলেন, “আমি আমার অন্তরকে জান্নাত চাইতে অনুপ্রাণিত করেছিলাম এবং তা জান্নাতের জন্য আকাঙ্খিত হয়েছে। এরপর আমি তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইতে অনুপ্রাণিত করেছি এবং তা সেই মুক্তির আকাঙ্খা করেছে। অতঃপর আমি চেয়েছি আমার অন্তর যেন মানুষের কাছ থেকে মুক্তি পায়, কিন্তু তার জন্য কোন উপায় খুঁজে পাইনি।
যেসব মানুষ তাদের সবকিছুর দাতা আল্লাহর উপরে সন্তুষ্ট হয়নি তারা কীভাবে তাদেরই মত অন্য একজন সৃষ্টির উপরে সন্তুষ্ট হতে পারে?”

“যদি তোমরা কোন ব্যক্তির সাথে শত্রুতা করতে চাও তাহলে প্রথমে তার উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখ। যদি সে আল্লাহর বাধ্য ও অনুগত হয় তাহলে এ কাজ থেকে দূরে থাক। কারণ, আল্লাহ কখনো তাকে তোমাদের আয়ত্ত্বে দেবেন না। আর যদি সে আল্লাহর নাফরমান বান্দা হয় তাহলে তোমাদের তার সাথে শত্রুতার কোন প্রয়োজনই নাই। কারণ, সে নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে। আল্লাহর সাথে শত্রুতাই তার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।”
— আল হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“যেসব মানুষ তার সৃষ্টিকর্তার উপরে সন্তুষ্ট হয়নি যদিও তিনি তাদের সবকিছুর দাতা,
তারা কীভাবে তাদের মত অন্য একজন সৃষ্টির উপরে সন্তুষ্ট হতে পারে?”
— আল হাসান আল-বাসরি

আমরা হাসি-ঠাট্টা করি, কিন্তু কে জানে– হয়তো আল্লাহ আমাদের কিছু কাজকর্ম দেখে বলছেন: “আমি তোমাদের কাছ থেকে কোনো আমলই গ্রহণ করব না।”
— হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

এক ব্যক্তি ইমাম আল-হাসান আল-বাসরীর (রাহিমাহুল্লাহ) কাছে এসে বললো, “হে আবু সা’ঈদ, আমি আপনার কাছে আমার অন্তরের কাঠিন্যের ব্যাপারে অভিযোগ করছি।”
তিনি উত্তর দিলেন, “যিকিরের (আল্লাহর স্মরণ) মাধ্যমে অন্তরকে নরম করো। অন্তরে আল্লাহর স্মরণ যত কম হয়, ততই তা কঠিন হয়ে যায়, কিন্তু কোন ব্যক্তি যখন আল্লাহকে স্মরণ করে তার হৃদয়ের কাঠিন্য বদলে নরম হয় যেমন করে আগুনে নরম হয়ে গলে যায় তামা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাকে স্মরণের (যিকির) মতন আর কোন কিছুই হৃদয়ের কাঠিন্য দূর করে তাকে নরম করতে পারে না। অন্তরের জন্য নিরাময় ও ঔষধ হলো আল্লাহর যিকির। ভুলে যাওয়া একটি রোগ এবং এই রোগের উপশম আল্লাহকে স্মরণ করা।”

আল-হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“তোমাদর আগে পৃথিবীতে যারা ছিলেন তারা মনে করতেন মৃত্যু তাদের সন্নিকটে। তাদের একেকজন পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি সংগ্রহ করে নিতেন, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতেন এবং তারপর ওযু করতেন আল্লাহর নির্দেশের (মৃত্যু) ভয়ে যেন তা এমন অবস্থায় না আসে যখন তিনি পবিত্র অবস্থায় নেই।"

“সালাফগণ রাতে সলাতে দাঁড়িয়ে কুরআন তিলাওয়াত করতেন এবং দিনের বেলা কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী আমল করতেন।”
— হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“পারস্পরিক হাত মেলানো (করমর্দন) বন্ধুত্ব বাড়ায়।”
–আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম আল-হাসান আল-বাসরি (রাহিমাহুল্লাহ) একদিন এক ব্যক্তির দাফনের সময় উপস্থিত হয়ে বলেছিলেনঃ
“আল্লাহর রাহমাত বর্ষিত হোক সেসব মানুষদের উপরে যারা আজকের দিনটির মতন দিনের জন্য পরিশ্রম করে; কেননা আজকে তোমরা এমন সব কাজ করতে পারছ যা কবরের বাসিন্দা তোমাদের এই ভাইয়েরা করতে পারছে না। তাই, হিসাব-নিকাশ শুরু হবার ভয়াবহ দিনটি আসার পূর্বেই তোমাদের স্বাস্থ্য এবং অবসর সময়ের পূর্ণ ব্যবহার করো।”

“আমি এমন মানুষদের (সাহাবা) সান্নিধ্য অর্জন করেছিলাম যারা তাদের কোন সৎকাজকে ছেড়ে দেয়া যতটা ভয় করতেন তা তোমরা তোমাদের পাপকাজের পরিণামকে যতটুকু ভয় কর তার চাইতেও বেশি।”
— আল-হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“দুনিয়ার জীবনের তুচ্ছ আর ক্ষণস্থায়ী ভোগবিলাস ও আনন্দগুলো যেন আপনাকে মোহগ্রস্ত ও বিভ্রান্ত করতে না পারে এবং সবসময় আগামীকালের কথা বলতে থাকবেন না, কেননা আপনি জানেন না যে কখন আপনাকে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যেতে হবে।”
— ইমাম আল-হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনি আসলে কতগুলো দিনের সমষ্টি ছাড়া আর কিছুই না। যখন একটি দিন পার হয়ে যায়, আপনার একটি অংশ ক্ষয় হয়ে যায়।”
— আল হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ)

এক ব্যক্তি হাসান আল বাসরীকে (রাহিমাহুল্লাহ) জিজ্ঞাসা করলো, “ইবলিশ কি কখনো ঘুমায়?”
তিনি বললেন, “সে যদি ঘুমাতো, তাহলে আমরা একটু অবসর পেতাম।”









উমার বিন আবদুল আজিজ

“তুমি যদি পারো তো একজন আলেম হও। যদি তা না পারো তবে দ্বীনের জ্ঞানের একজন ছাত্র হও। যদি তা না পারো, তাহলে তাদের প্রতি ভালোবাসা দেখাও। যদি তুমি তা-ও না পারো, তাহলে (অন্ততপক্ষে) তাদের ঘৃণা করো না।”
— উমার বিন আবদুল আজিজ (রাহিমাহুল্লাহ)

“নিজেকে আল্লাহর রাহমাতসমূহের কথা বেশি করে স্মরণ করিয়ে দিন, কেননা যিনি বেশি বেশি স্মরণ করেন তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।”
— উমার বিন আবদুল আজিজ

উমার বিন আব্দুল আযীযের (রহিমাহুল্লাহ) কাছে খবর পৌঁছল যে তাঁর ছেলে ১০০০ দিরহাম দিয়ে একটি আংটি কিনেছে। খলিফা উমার বিন আব্দুল আযীয সাথে সাথে ছেলের কাছে চিঠি লিখলেন–
“আমার কাছে খবর এসেছে তুমি ১০০০ দিরহাম দিয়ে একটি পাথরের টুকরা কিনেছ। তুমি যখনই আমার চিঠি পাবে, তখনই আংটিটি বিক্রি করে দিবে। বিক্রয়কৃত টাকা দিয়ে তুমি ১০০০ অভুক্ত মানুষকে পেট ভরে খাওয়াবে এবং তারপর ২ দিরহামের একটি লোহার আংটি কিনবে যাতে লিখবে–
“আল্লাহ যেন ঐ বান্দার প্রতি রহম করেন, যে তার নিজের মূল্যের ব্যাপারে খেয়াল রাখে”।

“যে ব্যক্তি জ্ঞান ছাড়াই আমল করে সে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে।”
— উমার বিন আবদিল-আযীয

“আমি কখনোই কামনা করিনি যে সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে মতানৈক্য না থাক। তাদের মতানৈক্য রহমতস্বরূপ।”
— উমার বিন আবদুল আজীজ (রাহিমাহুল্লাহ)

“কোন গাইর-মাহরাম নারীর সাথে কখনো একাকী অবস্থান করবেন না, আপনি যদি তাকে কেবল কুরআন শেখাতে যান, তবুও না।”
— উমার বিন আবদুল আজিজ

উমার বিন আবদুল আজীজ (রাহিমাহুল্লাহ) একবার উপদেশ পেয়েছিলেনঃ
“হে উমার! জনসম্মুখে আল্লাহর বন্ধু এবং লোকচক্ষুর আড়ালে আল্লাহর শত্রু হওয়া থেকে সাবধান হও। যদি কারো স্বভাব-চরিত্র প্রকাশ্যে এবং গোপনে সমান না হয়ে থাকে তাহলে সে একজন ধোঁকাবাজ (মুনাফিক) এবং মুনাফিকদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে।”

খলীফা উমার বিন আবদুল আযীযের (রাহিমাহুল্লাহ) সময়ে যখন ভূমিকম্প হয়েছিল তখন বিভিন্ন দেশে তার প্রতিনিধিদের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন মুসলিমদের বলে দিতে যেন তারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে তাওবা করে, তার কাছে বিনীত হয়ে নিজেদের সোপর্দ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য তার কাছে ইস্তিগফার করে।









ইমাম আবু হানিফা রঃ

একবার ইমাম আবু হানিফার সাথে একটি ব্যবসার অংশীদার ছিলেন বসরার জনৈক লোক । একবার ইমাম আবু হানিফা তাকে ৭০টি মূল্যবান কাপড় পাঠিয়েছিলেন এবং সেগুলোর সাথে আলাদা করে লিখে দিয়েছিলেন, “এই কাপড়গুলোর একটিতে খুঁত আছে, সেটি হলো অমুক কাপড়টি । সুতরাং, আপনি যখন কাপড়গুলো বিক্রি করবেন তখন ভালো করে খেয়াল রাখবেন যেন কাপড়ের সমস্যাটি ক্রেতাকে উল্লেখ করে দেয়া হয়।”
ইমাম আবু হানিফার ব্যবসার অংশীদার সেই লোকটি কাপড়গুলো ৩০ হাজার দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করেন এবং যখন তিনি টাকাসহ আবু হানিফার কাছে এলেন, তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, “আপনি কি কাপড়ের খুঁতগুলো বলে দিয়েছিলেন?” বসরার লোকটি উত্তর দিলেন,”আমি ভুলে গিয়েছিলাম।” আবু হানিফা সেই কাপড় বিক্রির মুনাফা থেকে কিছুই গ্রহণ করেননি বরং তার সবটুকুই সাদাকাহ করে দিয়েছিলেন।”

ইমাম আবু হানিফা তার ‘ইলম (জ্ঞান) এবং ‘আমালের জন্য তো বটেই, তিনি তার রসিকতাবোধের জন্যেও সুপরিচিত ছিলেন। একদিন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলো, “হে ইমাম! যখন আমি নদীতে গোসল করি, তখন কি আমি কিবলার দিকে মুখ করবো নাকি কিবলা থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখবো?
ইমাম আবু হানিফা গম্ভীরভাবে উত্তর দিলেন, “আমি যদি আপনার জায়গায় থাকতাম তাহলে আমি আমার কাপড়গুলোর দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকতাম যেন কেউ সেগুলো নিয়ে দৌড়ে পালাতে না পারে।”

ইমাম আবু হানিফা (রাহিমাহুল্লাহ) তার ছাত্র আবু ইউসুফকে বলেছিলেন:
“হায় ইয়াকুব! তুমি আমার কাছে যে কথাই শোনো, সে কথাই লিখে ফেলো না, কেননা এটা নিশ্চিত যে হয়ত আজ আমি যে মত ধারণ করছি আগামীকাল সেটা ত্যাগ করবো, হয়ত আগামীকাল আরেকটা মত ধারণ করবো যা তার পরের দিন ত্যাগ করবো।”









ইমাম শাফিঈ

“তাহাজ্জুদের সময়ে করা দু’আ হলো এমন একটি তীরের মতন যা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“দায়িত্ব বেড়ে যাবার আগেই তোমার ইবাদাতের পরিমাণ বাড়িয়ে দাও। কেননা একদিন এমন সময় আসবে যখন যথেষ্ট ইবাদাত করার মতন সময় পাবে না।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“তোমরা কি দেখ না সিংহ কেমন নিশ্চুপ হয়ে থাকে তবু সবাই তাকে ভয় করে, কুকুর তো সবসময় ঘেউ ঘেউ করে এবং সবাই তাকে ঘৃণা করে।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহকে যারা ভালোবাসেনা, তাদেরকে ভালোবাসবেন না।
তারা যদি আল্লাহকে ছেড়ে থাকতে পারে, তারা আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে।”
— ইমাম শাফিঈ (রহিমাহুল্লাহ)

“হাজার জন জ্ঞানীর সাথে যুক্তিতর্কে হয়তো আমি জিতে যাব, কিন্তু একজন মূর্খের সাথে আমি কখনোই পেরে উঠবো না।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“যেকথা ভেবে আমার অন্তর প্রশান্ত হয় তা হলো আমার জন্য যা নির্ধারিত আছে তা কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না এবং যা কিছু আমার পাওয়া হয়না তা কখনো আমার জন্য নির্ধারিত ছিলো না।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“কোন ব্যক্তি যদি জ্ঞানী হয় তাহলে নিজের পাপগুলোর ব্যাপারে উদ্বেগ তাকে অন্যদের দোষ-ত্রুটি ধরা থেকে বিরত রাখবে।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“কিছু মানুষ পৃথিবী থেকে চলে গেছেন কিন্তু তাদের চরিত্র তাদের আজো বাঁচিয়ে রেখেছে, আর কিছু মানুষ বেঁচে আছে কিন্তু তাদের চরিত্র তাদেরকে মেরে ফেলেছে।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“… আমি পিতৃহীন ছিলাম, আমার মায়ের পক্ষে আমাকে কাগজ কিনে দেয়ার সামর্থ্য ছিলো না। আমি যখন হাড় পেতাম, তাতে লিখতাম।”

“তিনিই জ্ঞানবান যার মন তাকে সকল বেইজ্জতি থেকে নিয়ন্ত্রিত রাখে।”
— ইমাম শাফিঈ

“যে আপনার জন্য অন্যদের নামে গীবত করে,
সে আপনার নামেও অন্যদের কাছে গীবত করবে।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“যাকে আল্লাহভীতি দান করে সম্মানিত করা হয়নি তার আর কোনো সম্মানই নেই।”
— ইমাম শাফিঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে ব্যক্তি দাবী করে যে, সে এই দুনিয়া ও তার স্রষ্টাকে একই সাথে ভালবাসে সে আসলে মিথ্যা কথা বলে।”
— ইমাম শাফি’ঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“একজন একনিষ্ঠ বন্ধু এবং নির্ভুল ঔষধ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যায়। খুঁজতে গিয়ে সময় নষ্ট করো না।”
— ইমাম শাফি’ঈ

“কেউ বন্ধু হওয়ার একটি প্রমাণ হচ্ছে তার বন্ধুটির যে বন্ধু থাকে তারও বন্ধু হওয়া।”
— ইমাম শাফি’ঈ (রাহিমাহুল্লাহ)










ইমাম মালিক রঃ

“ইলম (জ্ঞান) আপনার কাছে এগিয়ে আসার কথা নয়, বরং আপনারই ‘ইলমের (জ্ঞানের) দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।”
— ইমাম মালিক ইবনে আনাস

প্রচুর পরিমাণে আলোচনার মাঝে জ্ঞান নির্ভর করে না, বরং জ্ঞান হলো এমন আলো যা আল্লাহ অন্তরের মাঝে স্থাপন করে দেন।”
— ইমাম মালিক ইবনে আনাস (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
“নিশ্চয়ই আমি একজন মানুষ, আমি ভুলও করতে পারি এবং সঠিকও হতে পারি। সুতরাং, আমার মতামতের মধ্যে যা কিছু কুরআন এবং সুন্নাহর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় তা গ্রহণ করুন এবং যা কিছু কুরআন এবং সুন্নাহর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ হয় তা এড়িয়ে যান।”

“সুন্নাহ নূহ আলাইহিস সালামের জাহাজের মতন, যে এতে পা রাখল সে মাগফিরাত লাভ করলো, যে এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো সে ডুবে গেলো।”
— ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)

“ততদিন পর্যন্ত আমি ফাতওয়া দেয়া শুরু করিনি, যতদিন না পর্যন্ত ৭০ জন (আলেম) বলেছিলেন আমি সেই কাজের উপযুক্ত।”
— ইমাম মালিক ইবনে আনাস (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) ফাতওয়া প্রদানের ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক ছিলেন। তিনি বলেন:
“কাউকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তার জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত এবং জবাব দেয়ার আগে তার আখিরাতের মুক্তি সম্পর্কে ভাবা উচিত।”

“যে কাজটি আল্লাহর জন্য (আন্তরিকতার সাথে) করা হয় সেটিই রয়ে যায়।”
— ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ) আবু জাফরকে (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
“রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীরা বিভিন্ন দূরবর্তী অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিলেন, প্রত্যেকের কাছে জ্ঞান সঞ্চিত ছিলো। তুমি যদি একটি মত অনুসরণে জবরদস্তি করো তাহলে ফিতনা সৃষ্টি করবে।”

ইবনে আল কাসিম ইমাম মালিককে (রাহিমাহুল্লাহ) বলতে শুনেছেন, “আমি একটা বিষয়ে দশ বছর ধরে গবেষণা করছি কিন্তু এখনো মনস্থির করতে পরিনি।”

ইবনে আবু-হাসান বলেন,
“মালিককে ২১ টি বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তিনি মাত্র দু’টির ফাতওয়া দিয়েছিলেন। তারপর বার বার বলেন, আল্লাহ ছাড়া কোনো সাধ্য বা ক্ষমতা নেই।”








ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রঃ

“সমস্ত কিছুতেই একটি রাহমাত থাকে। অন্তরের উপর রাহমাত হলো সর্বশক্তিমান, সকল ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর উপরে খুশী থাকা।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)

“খাবার এবং পানির চাইতেও মানুষের জন্য জ্ঞান বেশি দরকার, কেননা খাবার এবং পানি তাদের দিনে একবার বা দুইবার প্রয়োজন হয়, কিন্তু জ্ঞান প্রয়োজন তাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসেই।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলকে একবার বলা হয়েছিলো, “আপনি ইসলামের জন্য যে ভালো কাজগুলো করেছেন তার উত্তম প্রতিদান আল্লাহ আপনাকে দান করুন।”
তিনি বললেন, “বরং আল্লাহ ইসলামের মাধ্যমে আমার কল্যাণ করেছেন। আমি আবার কে? আমি আবার কী?”

"জ্ঞানের ভিত্তি হলো মহান আল্লাহর প্রতি ভয় (তাকওয়া)।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমার সেরা দিনটি হলো যেদিন জেগে উঠে খাবারের তাকগুলোকে শূণ্য পাই,
সেই দিনটির জন্য আল্লাহর উপর আমার নির্ভরতা (তাওয়াক্কুল) পরিপূর্ণ থাকে।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) তার স্ত্রী উম্মু সালিহ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবার পর তার প্রশংসা করে বলেছিলেন, “ওয়াল্লাহি, আমরা ৩০ বছর একইসাথে ছিলাম কিন্তু একটি বারের জন্যও আমাদের মাঝে কোন তর্ক হয়নি।”
তাকে প্রশ্ন করা হলো, “এটা কীভাবে সম্ভব? মানে আমরা বলতে চাচ্ছি, আপনাদের দু’জনের এই শক্তিশালী বন্ধন ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের গোপন রহস্য কী ছিলো?”
তিনি খুব সুন্দর করে উত্তরটি দিলেন, “যখন আমার স্ত্রী আমার উপরে অসন্তুষ্ট হতো এবং আমার সাথে তর্ক করতে চাইত, আমি নিশ্চুপ থাকতাম। আবার যখন আমি তার উপরে অসন্তুষ্ট হতাম এবং তর্ক করতে যেতাম, সে নিশ্চুপ থাকত।”

ইবরাহিম আল-হারবি বলেন, “আমি আহমাদকে (আহমাদ ইবনে হাম্বল) বলতে শুনেছি:
“আপনি যদি আকাঙ্ক্ষা করেন আপনি যা ভালোবাসেন তার উপরে যেন আল্লাহ আপনাকে অধিষ্ঠিত রাখেন, তাহলে আল্লাহ যা ভালোবাসেন আপনি তার উপরে অধিষ্ঠিত থাকুন। আর ভালো তো রয়েছে সেই ব্যক্তির মাঝেই যিনি নিজের মাঝে কোন ভালো দেখতে পান না।”

ইমাম আহমাদ তার হাদিসের ছাত্রদেরকে তাদের কালির-দোয়াত হাতে আসতে দেখে বলেন,
“এগুলো হলো ইসলামের লণ্ঠন।”
“কোন মানুষ যদি নিজের সম্পর্কে জ্ঞান রাখে, তাহলে অন্যদের প্রশংসা তার কোন উপকারে আসবে না।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হানবল (রাহিমাহুল্লাহ)

একদিন ইমাম আহমাদকে তার ছেলে প্রশ্ন করলেন, “বাবা, আমরা কবে শান্তি পাবো?”
তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তর দিলেন, “জান্নাতে আমাদের প্রথম পদচিহ্নটি রাখার মূহুর্তটি থেকেই।”

একদিন ইমাম আহমাদের ছেলে আব্দুল্লাহ তাঁকে বললেন, “আব্বা, আমাকে উপদেশ দিন।”
তিনি উত্তর দিলেন, “বাবা, সবসময় ভালো নিয়্যাত রাখবে। তুমি যতক্ষণ ভালো কাজের নিয়্যাত রাখবে, ততক্ষণ ভালো অবস্থায় থাকবে।”

“আপনি যদি চান যে আপনি যা ভালবাসেন তা থেকে যেন আল্লাহ আপনাকে কখনো বঞ্চিত না করেন,তাহলে সবসময় সেগুলোর উপর কায়েম থাকুন যেগুলো আল্লাহ ভালবাসেন।”
— ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ)

​​ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল বলেন:
আশ-শাফিঈ একদিন আমাকে তার মজলিশে দেখতে পেলেন, আমার জামায় কালির দাগ ছিলো যা আমি তার কাছ থেকে লুকাতে চাইছিলাম।
তিনি বললেন, “যুবক, তুমি কী লুকাতে চাইছো? জামায় কালির দাগ তো একটি মহৎ ব্যাপার: সাধারণ দৃষ্টিতে এটি কালো, কিন্তু অন্তর্দৃষ্টিতে তা হলো সাদা (জ্ঞানের আলোময়)”

ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন: “কোন ব্যক্তি যদি আপনাকে অন্য কারো পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছে দেয়, তাহলে উত্তরে বলা উচিত : ‘আলাইকা ওয়া ‘আলাইহি সালাম।”









ইমাম বুখারী

ইমাম বুখারীকে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো, “কীসে একজন ব্যক্তির স্মৃতিকে প্রখর করে?”
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবিরত পড়তে থাকা।”
মুহাম্মাদ বিন আবু হাতিম ইমাম আল-বুখারীর ব্যাপারে বর্ণনা করেন এভাবেঃ

“মুহাম্মাদ বিন ইসমা’ঈলের (আল-বুখারী) অনেক প্রশংসনীয় গুণ ছিলো, কিন্তু তাদের মধ্যে তিনটি তার চরিত্রকে বিশেষায়িত করেছিলো : তিনি খুব কম কথা বলতেন; অন্যদের যা ছিলো তার প্রতি তিনি লোভ করতেন না; এবং তিনি অন্যদের বিষয়সমূহে নিজেকে জড়াতে দিতেন না, বরং তিনি তার সমস্ত সময় জ্ঞানার্জনের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন।”










সুফিয়ান আস-সাওরি

“তিনটি গুণাবলী সবরের (ধৈর্য) অন্তর্ভুক্ত: নিজের দুর্দশার ব্যাপারে কথা না বলা, নিজের কষ্ট (সম্পর্কে কথা না বলা) এবং নিজের প্রশংসা না করা।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি

“কোন কিছুকে সংশোধন করতে আমার এত বেশি সংগ্রাম করতে হয়নি, আমার আত্মাকে বশ করতে আমার যত বেশি কঠিন লেগেছে ; কখনো আমি জয়ী হই, কখনো হই পরাজিত।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি

“তোমরা কি আমাকে দারিদ্রতার কথা ভাবিয়ে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছ যখন যে একমাত্র বিষয় সুফিয়ান ভয় করে তা হলো এই দুনিয়ার সম্পদ তার উপরে ঢেলে দেয়া হবে!”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি

“জ্ঞানের সৌন্দর্য্য ও গুরুত্ব কেবলমাত্র এই কারণে যে, এটা একজন ব্যক্তিকে আল্লাহকে ভয় ও তাঁর আনুগত্য করতে শেখায়। তা না হলে এটা অন্যান্য স্বাভাবিক বিষয়ের মত।”
— সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“নিয়্যাতের চেয়ে অন্য কোন কিছুর প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা আমার কাছে বেশি কঠিন মনে হয়নি, কেননা নিয়্যাত তো সবসময় পরিবর্তন হতে থাকে।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“তাঁকে (অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) অনুসরণ করাই হলো তাকে ভালোবাসা।”
— সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“নেতৃত্বের পদটি ছেড়ে দেয়া এই দুনিয়াকে (এবং তার আনন্দগুলোকে) ছেড়ে দেয়ার চেয়েও বেশি কঠিন।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরিকে একবার আল্লাহর কুরআনের বাণী, “মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে” সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, “দুর্বল বলতে কী বুঝানো হয়েছে?”
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “কোন পুরুষের পাশ দিয়ে একজন নারী গেলে সে নারীটির দিকে তাকানো থেকে নিজেকে সামলাতে পারে না এবং এতে (নারীটির দিকে তাকানোর মাঝে) তার কোনই উপকার নেই। এর চেয়ে বেশি দুর্বল আর কোন কিছু আছে কি?”

ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ) একটি চিঠিতে লিখেছিলেন:
“তোমার ব্যক্তিগত ও গোপন জীবনকে উন্নত করো, আল্লাহ তোমার সামাজিক ও প্রকাশ্য জীবনে উন্নতি দান করবেন। তোমার এবং আল্লাহর মধ্যকার বিষয়গুলোকে ভালো করো, আল্লাহ তোমার সাথে মানুষের মধ্যকার বিষয়গুলোকে ভালো করবেন। আখিরাতের জন্য পরিশ্রম করো, আল্লাহ তোমার পার্থিব বিষয়গুলোর জন্য যথেষ্ট হবেন।”

“মানুষকে তার করা (ভালো) কাজগুলোর অনুপাতে ভালোবাসো। যখন তোমাকে কোন ভালো কাজ করার জন্য আহবান করা হয় তখন বিনয়ী এবং নমনীয় হও এবং যখন কোন পাপকাজ করতে ডাকা হয় তখন কঠোর এবং বেপরোয়া হও।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“ভরপেট খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হোন কেননা এটা অন্তরকে কঠিন করে দেয়। সেই সাথে রাগকে সংযত রাখুন এবং অতিরিক্ত হাসাহাসি করবেন না, কেননা মাত্রাতিরিক্ত হাসাহাসিতে অন্তর মরে যায়।”
— ইমাম সুফিয়ান আস সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আলেমগণের উদাহরণ হলো বৃষ্টির মতন, তারা যেখানেই গমন করেন সেখানেই কল্যাণ হয়।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি

“সেই ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকুন যে ভালোবাসে তার মতামত সবাই অনুসরণ করুক, যে পছন্দ করে তার অভিমত সবাই জানুক এবং তা ছড়িয়ে যাক।”
— ইমাম সুফিয়ান আস সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“জ্ঞান অর্জন করো। যখন তুমি জ্ঞানার্জন করবে, তখন তা দৃঢ়ভাবে ধরে রাখ এবং তাকে পালাতে দিয়ো না। হাসিঠাট্টা আর খেলার সাথে জ্ঞানকে মিশ্রিত করো না; নইলে তোমার হৃদয় তার ভেতর থেকে তোমার অর্জিত জ্ঞানকে উগড়ে ফেলে দেবে।”
— সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“কখনো কখনো কোন মানুষ আমার কাছে এসে এমন হাদিস বর্ণনা করে যা আমি তার মা তাকে জন্ম দেওয়ার আগে থেকে জানি। তবুও উত্তম আচরণ হিসেবে সে যা বলে তা আমি শুনি (যেন আমি আগে তা শুনিনি)।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে ব্যক্তি ভালোবাসে লোকে তার মতামত জানার জন্য তাকে প্রশ্ন করুক, সে মতামত জানতে চাওয়ার যোগ্য কোন ব্যক্তি নয়।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“তারা তো এই পৃথিবীতে যেসব দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণার মুখোমুখি হয় তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না; আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদের সমস্ত কষ্টের প্রতিদান হিসেবে দিবেন জান্নাত।”
— ইমাম সুফিয়ান আস সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“তোমার বিয়ের প্রস্তাব গ্রহণ হোক এমনটা চাইলে (যেই মেয়েকে বিয়ে করতে চাও তার) মাকে উপহার দাও।”
— সুফিয়ান আস-সাওরি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমাদের দৃষ্টিতে একজন মানুষের ততক্ষণ পর্যন্ত দ্বীন-ইসলামের গভীর জ্ঞান অর্জিত হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে দুঃখ-কষ্ট ও কঠিন সময়গুলোকে রাহমাত হিসেবে মনে না করে এবং আরাম-আয়েশ ও আভিজাত্যকে পরীক্ষা হিসেবে মনে না করে।”
— ইমাম সুফিয়ান আস-সাওরী (রাহিমাহুল্লাহ)










ইমাম আল-গাজ্জালী

“দুনিয়াতে সবচেয়ে বোকা ও নির্বোধ সে, যে নিজের পবিত্রতা দাবী করে এবং নিজেই নিজের প্রশংসা করে।”
— ইমাম আল-গাজ্জালী

“আজকালকার যুগের তথাকথিত পন্ডিতদের দেখা যায় যে, বাদানুবাদ ও যুক্তিতর্ক তাদের স্বভাবকে খুবই প্রভাবিত করে রেখেছে এবং নিশ্চুপ থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। কেননা, পান্ডিত্যের দাবীদার অসৎ বিদ্বানেরা তাদেরকে বুঝিয়েছে যে, এই বিতর্ক একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ এবং এর দ্বারা মানুষের নিকট মর্যাদা পাওয়া যায়। খবরদার! এমন লোকদের থেকে তুমি ছুটে পালাও যেমন সিংহ দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তুমি পালাবে। জেনে রাখো, বাদানুবাদ যেমন মানুষের মনে ঘৃণার উদ্রেক করে, তেমনি এটি আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও রোষেরও কারণ হয় বটে!”
— ইমাম আবু হামিদ আল-গাজ্জালী

“যখন কোনো শিশুকে দেখ, তখন বলবে–এই শিশু আল্লাহর কোন নাফরমানী করে নাই; কিন্তু আমি করেছি, অতএব, সে আমার চেয়ে ভাল। কোন বয়ঃবৃদ্ধ লোককে দেখে বলবে–এই ব্যক্তি আমার আগে থেকেই আল্লাহর বন্দেগী করে আসছে, অতএব, সে অবশ্যই আমার চেয়ে ভাল। যদি কোনো আলেম ব্যক্তিকে দেখ, তাহলে বলবে–সে যা কিছু পেয়েছে, আমি তা পাই নাই; সে যে মর্যাদায় পৌঁছেছে, আমি সেখানে পৌঁছাতে পারি নাই; সে বিদ্বান, আমি মূর্খ; তাহলে কি করে আমি তাঁর সমকক্ষ হতে পারি? যদি সে মূর্খ হয়, তাহলে বলবে–এই লোকটি না-ফরমানী করে থাকলে অজ্ঞতাবশতঃ করেছে, আর আমি আল্লাহর না-ফরমানী করেছি জেনে শুনে, সুতরাং আল্লাহর শাস্তি আমার ক্ষেত্রে অধিকতর প্রযোজ্য; আমি জানিনা, শেষ পরিণতি কার ভাল হয়; আমারই না তার। যদি তুমি কোন কাফির ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টিপাত কর, তাহলে বল; আমি জানিনা, হয়তো বা সে মুসলমান হয়ে যাবে এবং তার জীবনাবসান নেক আমলের মধ্য দিয়ে হবে এবং ইসলাম গ্রহণের ওসীলায় তার সকল পূর্ব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে… আর আমি–খোদা না করুন–গোমরাহ হয়ে যেতে পারি, যার ফলে কুফর-শিরক ও পাপে লিপ্ত হয়ে আমার মৃত্যু হতে পারে; সুতরাং পরিণামে সে হয়তঃ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে আর আমি শাস্তি ভোগকারীদের দলভুক্ত হয়ে যাব।”
— ইমাম আল-গাজ্জালি (রাহিমাহুল্লাহ)

“যদি কোন আলেমকে অন্য আলেমদের নামে মন্দ কথা বলতে দেখেন, তাকে এড়িয়ে চলুন।”
— ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালি (রাহিমাহুল্লাহ)

“লোকের প্রশংসায় আনন্দিত হতে এবং লোকের নিন্দায় দুঃখিত হতে আপনার অন্তরকে প্রশ্রয় দিবেন না।”
— ইমাম আল-গাজ্জালী

“একটি জলবিন্দুর সুখ নদীর পানিতে মিশে হারিয়ে যাওয়ায়।”
— ইমাম আল গাজ্জালি

“জেনে রাখো — যে কোন ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর কোন মাখলুকের তুলনায় উত্তম মনে করবে, সে-ই দাম্ভিক; অহংকারী। বস্তুতঃ তোমার এ কথা মনে রাখা উচিত, যে ব্যক্তি আখিরাতের জীবনে আল্লাহর কাছে ভালো, সে-ই প্রকৃত ভালো। আর এটা এমন এক বিষয়, যা অদৃশ্য এবং জীবনের শেষ মূহুর্তের উপর নির্ভরশীল। অতএব, তোমার নিজেকে অন্যের তুলনায় উত্তম মনে করা নিতান্ত মূর্খতা ছাড়া কিছু নয়।”
— ইমাম আবু হামিদ আল-গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে ব্যক্তি ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করে তার ধৈর্য, সহানুভূতি, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থাকতে হবে।”
— ইমাম গাজ্জালি (রাহিমাহুল্লাহ)

“দ্বীনি ইলমই হচ্ছে একমাত্র বিদ্যা যা তোমার অন্তরে খোদাভীতি সৃষ্টি করবে, নিজের দোষ-ত্রুটি উপলব্ধি করার জ্ঞান বাড়াবে, সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তার পরিচয় করিয়ে দিবে। দুনিয়ার মোহান্ধতা হ্রাস করে আখিরাতের প্রতি শওক ও আগ্রহ বৃদ্ধি করবে, পাপকার্যের কুফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করবে। ফলে, পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার মন-মানসিকতা গড়ে উঠবে, শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক করবে।”
— ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

“ইলম ও জ্ঞানচর্চার দ্বারা যদি তোমার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে আত্মগৌরব ও বড়াই-অহংকার করা, সমকালীন লোকদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করা, আপন প্রভাব ও প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্ববাসীর নিকট প্রিয়পাত্র অথবা ভক্তিভাজন হওয়া, পার্থিব গৌরব অর্জন করা এবং রকমারী ধন-সম্পদ কুক্ষিগত করা, তাহলে জেনে রাখো– এই জ্ঞান অর্জনের দ্বারা তুমি তোমার দ্বীন ও ঈমান ধ্বংস করছ, স্বীয় মূল্যবান জীবন বিনষ্ট করছ। নশ্বর এই পৃথিবীর বিনিময়ে আখিরাতের অনন্ত জীবনকে বিক্রয় করে দিচ্ছ। নিঃসন্দেহে এটা অত্যন্ত গর্হিত ও ক্ষতিকর কাজ। এই ব্যবসায় তোমার বৃহৎ লোকসান ছাড়া লাভের কিছু অবশিষ্ট থাকছে না।”
— ইমাম আল-গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

জনৈক ব্যক্তি হাজ্জাজের (বিখ্যাত জালেম) বিরূপ সমালোচনা করলে এক বুযুর্গ বলেছিলেন–
“আল্লাহ তা’আলা জুলুম-অত্যাচারের কারণে যেমন হাজ্জাজের প্রতিশোধ নিবেন, তেমনি হাজ্জাজের প্রতি কেউ জুলুম বা যবান-দরাযী করলে সেটারও বিচার করবেন।”

“উপকারী জ্ঞান তো সেটাই যা আপনার মাঝে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করবে, আপনার সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে আপনাকে সচেতন করবে, দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমিয়ে দিবে, আখিরাতের প্রতি আকাঙ্খা বাড়াবে এবং আপনার কাজের ত্রুটিগুলোর ব্যাপারে আপনার চোখকে উন্মুক্ত করে দিবে যেন আপনি সেগুলো সংশোধন করতে পারেন।”
— ইমাম গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনার অবশ্যই নিজেকে বুঝিয়ে সন্তুষ্ট রাখতে হবে এই বলে যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আপনার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন সেটাই আপনার সবচাইতে সঠিক এবং সর্বাধিক কল্যাণকর।”
— ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনি যা ভালোবাসেন তা অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার অপছন্দের বিষয়টিতে ধৈর্যধারণ করতে হবে।”
— ইমাম গাজ্জালী

“নরম-কোমল কথামালা পাথরের চাইতে কঠিন হৃদয়কেও কোমল করে দেয়,
কর্কশ-কঠিন কথাবার্তা রেশমের চাইতে কোমল হৃদয়কেও কঠিন করে দেয়।”
— ইমাম গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

“যদিও মানুষের হয়ত জ্ঞান রয়েছে, কিন্তু সেই জ্ঞান তাদের জন্য অর্থহীন যতক্ষণ তাতে বুদ্ধিমত্তার সংযোগ না ঘটবে।”
— ইমাম আবু হামিদ আল-গাজ্জালি

“যে ব্যক্তি অন্যের খারাপ চরিত্র নিয়ে অভিযোগ করলো,সে নিজের চরিত্রের খারাপ দিকটি প্রকাশ করে দিলো।”
— ইমাম আল-গাজ্জালী (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ নির্ভরশীলতা যেন সেই শিশুটির মতন যে খুব ভালো করে জানে সে যদি মাকে না-ও ডাকে তবু মা তার ব্যাপারে সম্পূর্ণ সচেতন এবং সঠিকভাবেই তার দেখাশোনা করছেন।”
— ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ নির্ভরশীলতা যেন সেই শিশুটির মতন যে খুব ভালো করে জানে সে যদি মাকে না-ও ডাকে তবু মা তার ব্যাপারে সম্পূর্ণ সচেতন এবং সঠিকভাবেই তার দেখাশোনা করছেন।”
— ইমাম আবু হামিদ আল গাজ্জালি (রাহিমাহুল্লাহ)








আব্দুল কাদির জিলানী (র)

“নিজের কল্যাণের স্বার্থে এবং আযাব থেকে রেহাই পেতে যথাসম্ভব কম কথা বল। তুমি তোমার আমলনামার পাতাগুলো আড্ডাবাজি দিয়ে পূর্ণ করো না। কেননা, চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশের দিনে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে তা হল তোমার জীবনে আল্লাহকে স্মরণ করার মুহূর্তগুলো।”
— আব্দুল কাদির জিলানী (র)

“আপনার বলা কথাগুলোই প্রকাশ দিবে আপনার অন্তরের গভীরে কী আছে।”
— আবদুল কাদির জিলানী (রাহিমাহুল্লাহ)

“যখন কোন বান্দা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সেটা আসলে কেবল মুখে উচ্চারিত কোন বিষয় থাকে না, বরং আল্লাহর করুণা ও রাহমাত প্রাপ্তির কৃতজ্ঞতা স্বীকার অন্তর থেকেও করা হয়।”
— আবদুল কাদির আল-জিলানি(র)










ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“কারো উপরে বেশি নির্ভরশীল হয়ে যেয়ো না। মনে রেখো,
অন্ধকারে তোমার নিজের ছায়াও তোমাকে ছেড়ে চলে যায়।”
– ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“লোকে অতীতে কী ধরণের কাজ করতো সেই দিকে তোমাদের খেয়াল করা উচিত নয়, বরং তারা আজকে কেমন মানুষ সেই বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। যে ব্যক্তি মানুষের অতীত নিয়ে লেগে থাকে, সে তো একদম ইবলিশের মতন যে আল্লাহকে বলেছিলো, “আপনি আমাকে আগুণ থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি থেকে।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“জ্ঞানার্জন ছাড়া দিক-নির্দেশনা অর্জন করা যায় না।
আর ধৈর্যধারণ ছাড়া সঠিক পথের দিশা অর্জন করা যায়না।”
– ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ)

“ইউসুফের (আলাইহিস সালাম) রবের প্রতি তার ইখলাসের (আন্তরিকতার) পরিমাণ তাকে যে প্রলোভিত করতে চেয়েছিলো তার সৌন্দর্যের চেয়েও অনেক বেশি ছিলো।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (র)

“পাপকাজগুলো মানুষের চেহারাকে কুৎসিত করে দেয়।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া

“পৃথিবীর মানুষের যত পথভ্রষ্টতা তার মূল নিহিত এই দুইটি জিনিসে: হয় আল্লাহ অনুমোদন দেননি এমন কিছুকে ধর্ম হিসেবে নেয়া, অথবা আল্লাহ নিষেধ করেননি এমন কিছুকে নিষিদ্ধ করা।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ

মিশরের এক কারাগারে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় থেকে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) তার মায়ের কাছে চিঠিতে লিখেছিলেনঃ
“প্রিয় মা আমার, আমাকে দেয়া সকল উপহারের জন্য আমি আল্লাহর সুবহানাহু ওয়া তা’আলার প্রশংসা করি এবং তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। আমি আপনার কাছ থেকে এতদূরে এখানে আসতে চাইনি। যদি আকাশের পাখিরা আমাকে সাথে করে নিয়ে যেত, আমি এক্ষুনি আপনার কাছে চলে যেতাম।
প্রিয়তম মা, কখনো মনে করবেন না আমার জীবনে আপনার সান্নিধ্যে থাকার চাইতে অন্য কোন কিছুর প্রতি বেশি আকাঙ্ক্ষা আমি রাখি।”
— ইবনে তাইমিয়া(র)

“একজন মানুষের অন্তর যদি রোগগ্রস্ত না হয় তাহলে সে কোনদিন, কোন অবস্থাতেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাবে না।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“আবু বকরের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মত কেউ কোনদিন রাসূলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভালোবাসেনি। সুতরাং যারা আবু বকরকে ঘৃণা করে তারা শ্রেষ্ঠ মুনাফিকদের দলভুক্ত।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া(র)

“তাঁর (আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার) পক্ষ থেকে আসা প্রতিটি শাস্তিই সম্পূর্ণরূপে ন্যায়বিচার এবং তাঁর পক্ষ থেকে আসা প্রতিটি কল্যাণ পরিপূর্ণভাবে তার দয়া (রাহমাত)।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া(র)

“যখন কোন ছেলে এবং মেয়ে মেলামেশা করে,
তখন তা হয় আগুন এবং কাঠ সংস্পর্শে রাখার মতন।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“একজন ব্যক্তির অনুমতি নেই আল্লাহকে অমান্য করার কাজে অন্য কাউকে সহায়তা করা। এমনকি সেই লোক যদি কাজটিকে পাপ মনে না-ও করে, তবুও তা করা উচিত নয়। যেমন, কোন অমুসলিমকে মদ ও শুকরের মাংস সংগ্রহ করতে সহায়তা করা।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্ললাহ)

“ঐক্যের কথা বিবেচনা করাই সঠিক পথ।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ)

“ঈমানদারদের জীবন ক্রমাগত বিভিন্ন কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি করানো হয় তাদের ঈমানকে বিশুদ্ধ এবং তাদের পাপকে মোচন করানোর জন্য। কারণ, ঈমানদারগণ তাদের জীবনের প্রতিটি কাজ করেন কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য; আর তাই জীবনে সহ্য করা এই দুঃখ-কষ্টগুলোর জন্য তাদের পুরষ্কার দেয়া আল্লাহর জন্য অপরিহার্য হয়ে যায়।”
- ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“পাপ হলো শেকলের মতন যা পাপকারীকে আটকে রাখে যেন সে তাওহীদের বিশাল বাগানে বিচরণ করতে এবং সেখানকার ফল সৎকর্মসমূহকে সংগ্রহ করতে না পারে।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“কেউ যখন আমাকে খেপিয়ে তোলে, আমি মনে করি আল্লাহর পক্ষ থেকে তা একটি উপহার। তিনি আমাকে নম্র হওয়া শেখাচ্ছেন।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র)

“ইলম (জ্ঞান) যে রোগ বয়ে আনে তা হলো দাম্ভিকতা,
ইবাদাত যে রোগ বয়ে আনে তা হলো রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা)।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“নিয়্যাহ-এর প্রকৃত স্থান হলো অন্তরে, জিহবায় নয়।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“আমার শত্রুরা আমার কীইবা করতে পারবে? আমার জান্নাত তো আমার অন্তরে। আমি যেখানেই যাই সেটা আমার সাথে সাথেই থাকে, আমার থেকে কখনো বিচ্ছিন্ন হয়না। কারাগার আমার ইবাদতের জন্য নির্জন আশ্রয়স্থল, মৃত্যুদন্ড আমার জন্য শাহাদাতের সুযোগ, আর দেশ থেকে নির্বাসন হচ্ছে আমার জন্য এক আধ্যাত্মিক ভ্রমণ।”
– ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (রহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহ ভালোবাসা পেতে ভালোবাসেন।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“ঈমানদার কখনো আগ বাড়িয়ে ঝগড়া করতে যায়না বা প্রতিশোধ নিতে যায়না, এমনকি অন্যের খুঁত ধরতে এবং তাদের নিন্দা করতেও যায় না।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণ জাতিকে সাহায্য করেন যদি তারা কাফিরও হয় এবং তিনি অন্যায়কারী জাতিকে সাহায্য করেন না যদি তারা মুসলিমও হয়। ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই মানুষকে আল্লাহ সম্মান ও আভিজাত্য প্রদান করেন এবং সম্পদে প্রাচুর্য দেন।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“আরবি ভাষা নিজেই ইসলামের একটি অংশ, এবং আরবি ভাষা শেখা হচ্ছে একটি আবশ্যক দায়িত্ব। যদি কুরআন এবং সুন্নাহ জানা দায়িত্ব হয় এবং আরবির জ্ঞান না থাকলে যদি তাদের বোঝা না যায়, তাহলে তার অর্থ দাঁড়ায় যে আরবি শেখাও একটি আবশ্যক কর্তব্য।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা(র)

“মাছের জন্য পানি যেমন, বান্দার অন্তরের জন্যে আল্লাহর স্মরণও (যিকির) ঠিক তেমন।
আর মাছকে যখন পানি থেকে আলাদা করা হয় তখন মাছের অবস্থা কেমন হয়?”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র)

“বান্দা তার রব আল্লাহকে যত বেশি ভালোবাসবে অন্যান্য জিনিসকে ততই কম ভালোবাসবে এবং তাদের সংখ্যাও কমে যাবে। বান্দা তার রব আল্লাহকে যত কম ভালোবাসবে অন্যান্য জিনিসকে ততই বেশি ভালোবাসবে এবং তাদের সংখ্যাও বেড়ে যাবে।”
— শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা (র)

“যে বিপদ-আপদ ও মুসিবত আপনাকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেয়, তা সেই রাহমাতের চাইতে উত্তম যা আপনাকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ করে দেয়।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“সুন্দর বিদায় হলো ক্ষতি না করে বিদায় নেয়া, সুন্দর ক্ষমা হলো বকা না দিয়ে ক্ষমা করা, সুন্দর ধৈর্য হলো অভিযোগ না রেখে ধৈর্য্ধারণ করা।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“যখন মানুষ পাপকাজে এবং সীমালঙ্ঘনে একে অপরকে সাহায্য করে, তখন তাদের সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটে পরস্পরের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ পোষণে।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনি যদি লোকের অলক্ষ্যে ভালো কাজ করেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা প্রকাশ্যে আপনার উপরে তার রাহমাত বর্ষণ করবেন।”
— ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ)










ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ

“আমাদের পুর্ব প্রজন্মের একজন মানুষ বলেছিলেন,
খারাপ কাজের একটি শাস্তি হলো আরো খারাপ কাজ হওয়া এবং ভালো কাজের একটি পুরষ্কার হলো আরো ভালো কাজ হওয়া।”
- ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ

“আমাদের চোখ এবং অন্তরের মাঝে একটা সম্পর্ক রয়েছে যার ফলে একটির কারণে অন্যটি প্রভাবিত হয়। এদের একটি যদি ভালো থাকে তাহলে অন্যটিও ভালো থাকে, আবার একটি যদি ভ্রষ্ট হয় তাহলে অপরটিও ভ্রষ্ট হয়ে যায়। যদি অন্তর ভ্রষ্ট হয়, চোখের দৃষ্টিও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে, আবার যদি চোখের দৃষ্টি ভ্রষ্ট হয় তাহলে অন্তরও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। একইভাবে, যদি এদের একটি প্রশান্ত থাকে, অপরটিও প্রশান্ত থাকবে।
— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম বলেন:
আপনার নিজ অন্তরকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করুন তিনটি স্থানে–
১) যখন কুর’আন তিলাওয়াত শুনবেন,
২) যেসব মজলিশে (আল্লাহর) যিকির হয়,
৩) এবং যখন (একাকী) গোপনে থাকবেন।
এই জায়গাগুলোতে যদি আপনি তা খুঁজে না পান, তাহলে আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন তিনি আপনাকে একটি অন্তর দান করেন, কেননা আপনার আসলে সেটি নেই।

“আত্মার বিরুদ্ধে জিহাদ হলো কাফির এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদের ভিত্তি।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম(র)

“জুমু’আর দিনে নিজের সবচাইতে উত্তম পোশাকটি পরা হলো সুন্নাহ।”
— ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“প্রতিটি পাপ আরো অনেক পাপের জন্ম দেয়, একটি পাপ আরেকটি পাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই পাপরাশি মানুষটিকে এমনভাবে কাবু করে ফেলে যে কৃত পাপগুলোর জন্য তাওবা করাকে তার কাছে কঠিন বলে মনে হয়।”
— — ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনি যখন কোন সৃষ্টিকে ভয় করবেন তখন তার থেকে দূরে পালাতে চেষ্টা করবেন। আপনি যখন আল্লাহকে ভয় করবেন তখন তাকে ভালোবাসবেন এবং তার সাথে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে ব্যক্তি জ্ঞানবিহীন আমল করে সে তো ঐ ব্যক্তির মত যে কোন পথপ্রদর্শক (গাইড) ছাড়াই ভ্রমণ করে। আর এটা জানা কথা যে এমন লোক সম্ভবত রক্ষা পাবে না বরং ধ্বংস হবে।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ

“আপনি যদি কুরআন থেকে উপকৃত হতে চান তাহলে তিলাওয়াতের সময় সম্পূর্ণ অন্তর দিন (কী বলা হচ্ছে বুঝতে চেষ্টা করুন), শোনার ব্যাপারে মনোযোগী হোন এবং কল্পনা করুন আল্লাহ আপনার সাথে সরাসরি কথা বলছেন।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম(র)

“সে-ই মানুষ যে তার অন্তরের মৃত্যুকে ভয় করে, শরীরের মৃত্যুকে নয়।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“লক্ষ্যপূরণের ব্যাপারে নিষ্ঠাবান থাকলে দেখবেন আল্লাহর সাহায্য আপনাকে চারপাশ থেকে ঘিরে আছে।”
— — ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহর কাছে আপনি প্রার্থনা করা বন্ধ করে দিলে তিনি রাগান্বিত হন।
অথচ আদম সন্তানের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সে রেগে যায়।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“নিজের জন্য কেনাকাটা করুন (ভালো কাজ করার মাধ্যমে) যতদিন আপনার জন্য বাজার রয়েছে এবং আপনার কেনাকাটার সামর্থ্য আছে।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম(র)

“সবর (ধৈর্য) তো সেটাই যখন কারো তাকদীরে যা নির্ধারিত হয়েছে তাতে অন্তর কোন রাগ অনুভব করেনা এবং মুখ সে ব্যাপারে কোন অভিযোগ করে না।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“একজন পাপাচারী লোক তার পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়না। কারণ তার অন্তর ইতোমধ্যেই মরে গেছে।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)

‘বান্দা আল্লাহর সামনে দু’বার হাজির হয় : প্রথমবার, যখন সে সালাতে দাঁড়ায়। আর দ্বিতীয়বার, যখন কিয়ামতে হাশরের ময়দানে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি প্রথমবার দাঁড়ানোর হক যথাযথভাবে আদায় করতে পারবে, তার জন্য দ্বিতীয়বার দাঁড়ানো সহজ হবে । আর যে ব্যক্তি প্রথমবারেরটা সহজ ভেবে পূর্ণ গুরুত্ব দিবে না, তার জন্য দ্বিতীয়বারের দাঁড়ানোটা কঠিন হবে।’
— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)

“অন্য কোন কিছুই একজন বান্দার অতটা বেশি প্রয়োজন নেই, যতটা বেশি প্রয়োজন সরল সঠিক পথের নির্দেশনা।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

একবার একজন আবিদ মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, “কীভাবে আল্লাহকে ভালোবাসতে হয় আমাকে শেখান।”
তিনি উত্তরে বলেছিলেন, “শিখিয়ে কারো মাঝে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা যায় না।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে রাতের বেলায় কোন ব্যক্তি সলাতে দাঁড়িয়ে নিজের উপরে মুগ্ধ হয়ে ঘুম থেকে জাগে তার চেয়ে যে রাতে কোন ব্যক্তি অনুশোচনায় বারবার ঘুম থেকে জেগে ওঠে তা উত্তম।”
— ইমাম ইবনে আল-কাইয়্যিম (র)

“আল্লাহকে ভয় করা এবং উত্তম চরিত্রের মাঝে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, কেননা আল্লাহভীতি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটায় এবং উত্তম চরিত্র একজন ব্যক্তির সাথে অন্যান্যদের সম্পর্ককে উন্নত করে। তাই একজন ব্যক্তির আল্লাহর প্রতি ভয় তার প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়াকে সম্ভাবনাময় করে এবং সুন্দর আচরণ একজন ব্যক্তির প্রতি অন্যদের ভালোবাসা প্রাপ্তিকে সম্ভাবনাময় করে তোলে।
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“সকল গতি, স্থিতি, মুখনিঃসৃত বাণী এবং কাজ সংঘটিত হয় আল্লাহর অনুমতি এবং ইচ্ছার ফলেই। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ নড়াচড়াও করতে পারে না, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কেউ কোন কাজ করতে পারে না।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“যারা আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রাখে তাদের জন্য কষ্টকর সকল কাজগুলোই সহজ হয় যায় যখন তারা জানেন যে আল্লাহ তাদেরকে শুনছেন।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আয-জাওযিয়্যাহ

“যে ভালো কাজের ফলে অন্তরে অহংকার সৃষ্টি হয় তার চাইতে যে পাপের জন্য কোন ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তার আত্মাকে সমর্পিত করে সেটি আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দের।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“সময় নষ্ট করা মৃত্যুর চেয়েও নিকৃষ্টতর। যখন কেউ মারা যায় পৃথিবীর অধিবাসী ও দুনিয়ার সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়; কিন্তু যখন কেউ সময় নষ্ট করে তখন আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“একজন প্রকৃত আন্তরিক উপদেশদাতার উপদেশ আপনি গ্রহণ না করলেও তিনি কখনো আপনার প্রতি শত্রুতা পোষণ করবেন না।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম(র)

“সমগ্র দ্বীন হলো উত্তম চরিত্রের। সুতরাং যে তার চরিত্রে আপনার চেয়ে উত্তম হতে পেরেছে, সে দ্বীনদারীতেও আপনার চেয়ে উত্তম হয়েছে।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আয-জাওযিয়াহ

“জেনে রাখুন আপনি যাকে দান করছেন তার দানটি যতটুকু প্রয়োজন তার চাইতে অকল্পনীয় রকমের বেশি প্রয়োজনীয় বিষয় হলো আপনার এই দানটি আল্লাহর কাছে কবুল হওয়া।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“যখন আদম (আলাইহিস সালাম) জান্নাত থেকে নেমে এসেছিলেন তখন শয়তান আনন্দে উৎফুল্ল হয়েছিলো, কিন্তু সে জানতো না একজন ডুবুরি যখন সাগরে ডুব দেয়, সে মণি-মুক্তা সংগ্রহ করে আবার ভেসে ওঠে।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“পাপকাজের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো তা আপনার কাছ থেকে জ্ঞান ছিনিয়ে নেবে।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম(র)

“তুমি আখিরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার জীবনের সন্তান হয়ো না, নিশ্চয়ই সন্তান তার মা-কে অনুসরণ করে।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম(র)
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম বলেনঃ

“ইবনে তাইমিয়া অত্যন্ত দরিদ্র জীবনযাপন করতেন। তাকে কারাগারে অন্তরীণ রাখা হয়েছিল এবং তিনি অনেক হুমকির মুখে ছিলেন। কিন্তু তার মতন এত সুখী মানুষ আর কখনো কাউকে আমি দেখিনি।”

“কোন ভালো কাজ করার পর যদি আপনি অন্তরে মিষ্টতা অনুভব না করেন এবং হৃদয় প্রশান্ত না হয় তাহলে আপনার অন্তরকে সন্দেহ করুন।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম(র)

“কুফর এবং ঈমান কখনো একসাথে থাকতে পারেনাঃ যখন এদের একটি উপস্থিত থাকে, তখন অন্যটি হারিয়ে যায়।”
— ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“আন্তরিকতাবিহীন আমল হচ্ছে পরিষ্কার পানিতে ময়লা মিশিয়ে বয়ে নিয়ে যাবার মত। এটা বহনকারীকে শুধু ভার অনুভব করাবে আর কোন উপকারে আসবে না।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমাদের হৃদয় একটা পাখির মতন, মাথাটি যার ভালোবাসা এবং পাখা দু’টি হলো আশা ও ভয়।”
— ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)

“দু’টি অংশের সমন্বয়ে ঈমান; একটি অংশ ধৈর্য (সবর) এবং অপরটি কৃতজ্ঞ হওয়া (শোকর)।”
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ)











আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক(রাহিমাহুল্লাহ)

“ততক্ষণ পর্যন্ত যেকোন জ্ঞানের মাধ্যমে কেউ উন্নত হতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সুন্দর আচরণের মাধ্যমে সে তার জ্ঞানকে সৌন্দর্যময় করে।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক(রাহিমাহুল্লাহ)

“কোন ব্যক্তি যতক্ষণ জ্ঞানার্জনের পথে থাকে ততক্ষণ সে জ্ঞানী, যখনই সে নিজেকে আলেম বলে মনে করে তখনই সে জাহেল হয়ে যায়।”
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

"যদি কোন ব্যক্তি তার ভাইয়ের মাঝে এমন কিছু দেখে যা সে অপছন্দ করে, সে​ গোপনে ​ভাইটিকে নির্দেশনা দিবে এবং​ একান্তেই ​তাকে নিষেধ করবে। অন্যদিকে, তার কারণে সে পুরষ্কৃত হবে ভাইয়ের দোষ লুকিয়ে রাখার জন্য এবং মন্দ কাজ থেকে তাকে নিষেধ করার জন্য। কিন্তু এখনকার দিনে, যখন কোন ব্যক্তি তার ভাইকে এমন কিছু করতে দেখে যা সে অপছন্দ করে, সে তাকে রাগিয়ে দেয় এবং তার দোষ প্রকাশ করে দেয়।”
— ইমাম আবদুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমাদের অন্তরগুলো যদি শুদ্ধ হতো, তাহলে আল্লাহর স্মরণে (যিকিরে) কখনো আমরা ক্লান্তিবোধ করতাম না।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমি তিরিশ বছর ব্যয় করেছি আদব শিখতে এবং বিশ বছর ব্যয় করেছি জ্ঞানার্জনে।”
— আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাকের (রাহিমাহুল্লাহ) প্রতিবেশী ছিলো একজন ইহুদি। ইমাম নিজের সন্তানদেরকে খাওয়ানোর পূর্বেই সর্বদা সে ইহুদিকে খাওয়াতেন এবং প্রথমে তাকে কাপড় দেয়ার পর সন্তানদের কাপড়-চোপড় দিতেন।
এক সময় কিছু লোক ইহুদি লোকটিকে বলেছিলো, “আমাদের কাছে তোমার বাড়িটি বিক্রি করে দাও।” সে উত্তর দিয়েছিলো, “আমার বাড়ির দাম দু’হাজার দিনার, এক হাজার বাড়ির মূল্য এবং আরেক হাজার ইবনে মুবারাক প্রতিবেশী হবার কারণে।”
একথা শুনে আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক পরমানন্দে চিৎকার দিয়ে বলেন, “হে আল্লাহ! তাকে ইসলামের পথ দেখান।” তারপর সেই ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছায় ইসলাম কবুল করেছিলো।

“আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করার চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জ্ঞানার্জন করলে তিনি যেমন ঘৃণা করেন তা অন্য কিছুতে করেন না।
— আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমি সিরিয়াতে একটি কলম ধার নিয়েছিলাম এবং কলমটি যার তাকে ফেরত দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। যখন আমি মারভেতে (ইরানে অবস্থিত) এসে পড়েছিলাম, তখন খেয়াল করলাম কলমটি আমার সাথেই রয়ে গেছে। তাই আমি সিরিয়ায় ফিরে গিয়ে যার কলম তাকে ফেরত দিয়েছিলাম।”
— ইমাম আবদুল্লাহ বিন মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহ নবী সুলাইমানকে (আলাইহিস সালাম) জ্ঞান এবং ক্ষমতা থেকে যেকোন একটি বেছে নিতে বলেছিলেন। তিনি ক্ষমতার চাইতে জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে তা বেছে নিয়েছিলেন। যেহেতু সুলাইমান (আ) জ্ঞান চেয়েছিলেন, আল্লাহ তাকে ক্ষমতাও দান করেছিলেন।”
— আব্দুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

নু’আইম ইবন হাম্মাদ বলেনঃ
আবদুল্লাহ ইবন মুবারাককে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো, “হে আবু আবদ আর-রাহমান, আপনি প্রায়ই ঘরে একা একা কেন বসে থাকেন?”
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “আমি কি একা থাকি? আমি তো থাকি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তার সাহাবাদের সাথে।” (অর্থাৎ তিনি হাদিস অধ্যয়ন করতেন)

“হয়ত একটি ক্ষুদ্র কাজ অনেক বিশাল হয়ে যায় কাজটির পেছনে করা নিয়্যাতের কারণে এবং হয়ত অনেক বড় একটা কাজ একদমই তুচ্ছ হয়ে যায় কাজটির পেছনে করা নিয়্যাতের কারণে।”
— আবদুল্লাহ ইবনে মুবারাক (রাহিমাহুল্লাহ)

আবদুল্লাহ ইবনে আল-মুবারাক বলেন:
“কাপড়ের উপরে কালি হলো আলেমদের জন্য সুগন্ধির ন্যায়।”








ইমাম ইবনে আল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“পাপ করার পরে যদি আপনার অন্তরের মাঝে আঁধার খুঁজে পান, তাহলে বুঝে নিবেন আপনার অন্তরে আলো রয়েছে। সেই আলোর কারণেই আপনি আঁধারকে অনুভব করেছেন।”
— ইমাম ইবনে আল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে এক ফোঁটা চোখের পানি মু’মিনের গাল বেয়ে নেমে যায় তা পৃথিবীর জমিনে ঝরে পড়া হাজার ফোঁটা বৃষ্টির পানির চাইতে বেশি কল্যাণময়।”
— ইবনে আল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“যখন আমি বিয়ে এবং সন্তানলাভের মাহাত্ম্য সম্পর্কে শিখেছিলাম, আমি গোটা কুরআন পাঠ করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে দু’আ করেছিলাম যেন তিনি আমাকে দশটি সন্তান দান করেন। তিনি আমার দু’আ কবুল করেছিলেন এবং আমাকে পাঁচটি ছেলে এবং পাঁচটি কন্যা সন্তান দিয়েছিলেন।”
— ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“তোমার করা ভুল কাজগুলোর জন্য রাতের অন্ধকারে ঝরে যাওয়া অশ্রুরাশিকে সুপারিশকারী করতে চেষ্টা করো।”
— ইমাম ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

ইমাম ইবনে আল জাওযিকে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলোঃ
তাসবীহ (আল্লাহর প্রশংসা) পড়া নাকি ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) করা, কোনটা
বেশি উত্তম?
তিনি উত্তর দিলেনঃ একটি নোংরা পোশাকের জন্য সুগন্ধির চাইতে সাবানের প্রয়োজনীয় অনেক বেশি।

“তিনি (আবু বকর) ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ‘কুরআনকে একত্রিত করেছিলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের আগে জাহিলিয়্যাতের সময়েও কোনদিন মদ (অ্যালকোহল) পান করেননি, পরেও তা করেননি।”
— ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“বই পড়ে আমি কখনো পরিতৃপ্ত হই না। আমি যখন কোন বই প্রথমবারের মতন দেখি, আমার কাছে মনে হয় আমি যেন সম্পদের একটি ভান্ডার দেখছি। আমি ২০ হাজারটির চেয়েও বেশি ভলিউম পড়েছি এবং আমি এখনো পড়ছি।”
— ইমাম ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমি এমন কোন কিছু দেখিনি বা এমন কোন কিছুর কথা শুনিনি যা নির্জনতার সমান শান্তি, সম্মান ও মর্যাদা এনে দিতে পারে। নির্জনতা বান্দাকে পাপ কাজ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে, তার সম্মান রক্ষা করে এবং সময় বাঁচায়। নির্জনতা আপনাকে হিংসুকদের থেকে দূরে রাখবে এবং যারা আপনার বিপদে খুশি হয় তাদের থেকেও আপনাকে দূরে রাখবে। এটা আখিরাতের স্মরণকে বাড়িয়ে দেয় এবং বান্দাকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের কথা ভাবায়। নির্জনবাসের সময় বান্দার চিন্তাগুলো যা কল্যাণকর এবং যাতে হিকমাহ বা প্রজ্ঞা আছে তাতে ঘুরে বেড়াতে পারে।”
— ইমাম ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“প্রতিটি ঘন্টা কীভাবে অতিক্রান্ত হচ্ছে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সম্ভাব্য শ্রেষ্ঠ উপায়ে তাকে ব্যয় করুন, নিজেকে অবহেলা করবেন না। সময়গুলোকে সম্মানজনক এবং শ্রেষ্ঠ কাজে পরিণত করাকে রপ্ত করুন। কাজগুলোকে পাঠিয়ে দিন কবরে যা আপনি সেখানে পৌঁছানোর পরে আপনাকে আনন্দিত করবে।”
— ইমাম ইবনে আল-জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“মানুষের অনেক সময় এমন হয় যে স্বাস্থ্য ভালো থাকলেও সে অবসর সময় খুঁজে পায়না কারণ জীবিকা অর্জনের জন্য তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়; অথবা সে ধনী হলেও তার স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। সুতরাং, যদি এই দুটো জিনিস (সুস্বাস্থ্য এবং অবসর) কেউ একসাথে পেয়েও যদি নিজের আলসেমিতে কর্তব্য পালন করতে না পারে, তাহলে সে একজন হতভাগা ব্যর্থ। (জেনে রাখো) এই দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র; এর মাঝেই ব্যবসা রয়েছে যার মুনাফা পরকালে দেখা যাবে। তাই যে মানুষ তার অবসর সময় এবং সুস্বাস্থ্যের সঠিক ব্যবহার করলো আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে, সে-ই সৌভাগ্যবান। আর যে তাদেরকে ব্যবহার করলো আল্লাহর নাফরমানীতে, সে নিজের উপরে জুলুম করে, কেননা যে কোন সময় অবসর ব্যস্ততায় পরিণত হতে পারে এবং সুস্থতা বিঘ্ন হতে পারে রোগের কারণে।”
— ইবনে আল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ)

“যদি আপনি লোকেদের প্রিয় পাত্র হোন, তাহলে জেনে রাখুন যে,
তারা আসলে আল্লাহর সেই সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন যা দ্বারা তিনি আপনার গুনাহকে ঢেকে রেখেছেন।”
-ইবনে আল জাওযি (রহ)







সুলতান সালাহ আদ-দ্বীন ইউসুফ আইয়ুবী

“আপনি যদি একটি জাতিকে কোনরকম যুদ্ধ ছাড়াই ধ্বংস করে দিতে চান, তাহলে তাদের তরুণ প্রজন্মের মাঝে অশ্লীলতা আর ব্যাভিচারের প্রচলনের ব্যবস্থা করে দিন।”
— সুলতান সালাহ আদ-দ্বীন ইউসুফ আইয়ুবী (রহিমাহুল্লাহ)

“নেতারা যে অধীনস্তদের নেতৃত্বে থাকে, সেই মানুষদের চেয়ে যখন নিজেদেরকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়, তারা সেই পদের জন্য তখন আর যোগ্য থাকে না।”
— সুলতান সালাহ আদ-দ্বীন আল-আইয়ুবি (রাহিমাহুল্লাহ)








রাবেয়া বসরী

এক ব্যক্তি একবার উচ্ছ্বসিত হয়ে রাবেয়া আল-আদাবিয়্যাহকে (রাবেয়া বসরী) জানালো, “আমি এমন এক হাজারটি বিষয় আবিষ্কার করেছি যা থেকে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়!”
রাবেয়া বসরী আলাপটি থামিয়েই দিলেন যে কথা জানিয়ে তা হলো তার কাছে একটি প্রমাণ আছে যেটাই তার জন্য যথেষ্ট। লোকটি প্রশ্ন করলো, “কোনটি?”
তিনি উত্তর দিলেন, “আপনি যদি বিশাল মরুভূমিতে একা থাকেন এবং এমন সময় কোন গভীর কূপে পড়ে যান, তাহলে কাকে ডাকবেন? সে উত্তর দিলো, “আল্লাহকে।”
রাবেয়া বসরী বললেন, “এই প্রমাণটিই আমার জন্য যথেষ্ট।”






ইমাম হাসান আল-বান্না

“সেই বৃক্ষের মতন হও, যখন লোকে তাকে পাথর ছুঁড়ে দেয়, সে তার বিনিময়ে দেয় সুস্বাদু ফল।”
— ইমাম হাসান আল-বান্না (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমাদের এমন প্রজন্ম প্রয়োজন যারা ইসলামকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ইসলাম তাদেরকে ধরে রাখবে এমন নয়।”
— ইমাম হাসান আল-বান্না (রাহিমাহুল্লাহ)

আমরা শাইখ আল-আলবানীর কাছে ইমাম হাসান আল-বান্নার বলা একটি কথা শিখেছিলাম —
“আপনাদের অন্তরের জগতে ইসলামের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করুন, তাহলে আল্লাহ সারা পৃথিবীতে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন।”









উস্তায সাইয়্যিদ কুতুব (র)

“কোরআনের ছায়াতলে জীবন অতিবাহিত করতে পারাটা এক বিশাল অনুগ্রহ। এ ব্যাপারটি কেবল তাদের দ্বারাই উপলব্ধি করা সম্ভব যারা এর অভিজ্ঞতা লাভ করতে পেরেছে। এ এক এমন সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা যা জীবনকে উদ্দেশ্যমন্ডিত করে এবং তাকে বাঁচার উপযোগী করে তোলে।”
— উস্তায সাইয়্যিদ কুতুব (র)

মু’মিন প্রকৃতপক্ষেই শ্রেষ্ঠ। কারণ তারা যেমন শ্রেষ্ঠ, তেমনি শ্রেষ্ঠ তাঁর আকীদা-বিশ্বাসের উৎস। বিশাল সাম্রাজ্য তার দৃষ্টিতে নগণ্য মাত্র। বিপুল শক্তির অধিকারী ব্যক্তিবর্গ তার নিকট তুচ্ছ। সমাজে প্রচলিত জনপ্রিয় সংখ্যক মানুষকে কোন বিষয় পছন্দ করতে দেখেই মু’মিন সে বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যায় না। এদিক থেকে মু’মিনের স্থান সকলের শীর্ষে। সে সকল জ্ঞানের উৎস একমাত্র আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে পথের সন্ধান লাভ করেছে। প্রতিটি বিষয়ে সে মহান আল্লাহর নির্দেশ জানতে চায় এবং সেখান থেকে যখন যে বিষয়ে যেরূপ হেদায়াত লাভ করে, তা-ই সে মেনে চলে।
— উস্তায সাইয়েদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে সমাজে মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রাধান্য থাকে সে সমাজই সভ্য সমাজ। মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতা রহস্যময় এবং ব্যাখ্যাতীত কোন বিষয় নয়, না তো তারা ইতিহাসের বস্তুতান্ত্রিক ব্যাখ্যাদানকারী বা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের দাবী অনুযায়ী ‘প্রগতিশীল’ এবং সদা পরিবর্তনশীল এমন কোন বিষয় যার কোন মূল এবং স্থিতিশীলতা নেই। এই মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা মানুষের মধ্যে সেসব গুণাবলীর জন্ম দেয় যা তাকে পশু থেকে আলাদা করে এবং মানুষের সেদিকের উপর বেশী জোর দেয় যা তাকে পশুত্বের উর্ধ্বে নিয়ে যায়। এই মানবীয় মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা এমন কোন বিষয় নয় যা মানুষের পাশবিক দিকগুলোর বিকাশ সাধন করে এবং সেগুলোর উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে”
— উস্তায সাইয়্যেদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)

“একমাত্র ইসলামী সমাজই আকীদা-বিশ্বাসের ভিত্তিতে মানুষকে পরস্পরের সাথে অটুট ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে এবং ঐ আকীদা-বিশ্বাসের সূত্র ধরেই কালো ও সাদা, আরব ও গ্রীক, পারসী ও নিগ্রো এবং পৃথিবীতে বিদ্যমান শতধাবিভক্ত জাতিগুলোকে একই সারিতে দাঁড় করিয়ে একই উম্মাতে শামিল করে নেয়। এ সমাজের সর্বময় কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর এবং মানুষ শুধু তাঁরই সমীপে মাথা নত করে, অন্য কারো নিকট নয়। যে ব্যক্তির চরিত্র যত উন্নত এ সমাজে তার মর্যাদা ততই উচ্চ। আল্লাহ প্রদত্ত আইনের চোখে সমাজের সকল মানুষই সমান।
যে সমাজে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দেয়া হয় এবং যেখানে মানুষের চারিত্রিক উৎকর্ষ সাধনই প্রাধান্য লাভ করে, সে সমাজই সত্যিকার অর্থে সভ্য সমাজ। অন্যান্য সমাজে প্রাধান্য লাভ করে বস্তুবাদ। অবশ্য বস্তুবাদ বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপে আত্মপ্রকাশ করে।.. ”
— উস্তাদ সাইয়্যেদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)

প্রভাত বেলার মৃদু সমীরণ ও গোধুলি বেলার স্নিগ্ধতা বয়ে আনে সৃষ্টিকর্তার স্নেহের পরশ,সুদূর নীল আকাশে তারকারাজির লুকোচুরি খেলে এবং স্থল ও পানি ভাগের অন্ধকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা গোপন রহস্য, মানুষের প্রয়োজন মেটানোর জন্যে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ এবং মুষলধারে বৃষ্টি সিষ্ণিত ফসলের সমারোহ,গাছগাছালি ও পাকা পাকা ফলের দৃশ্য এসব কিছু লা শরীক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর একত্বের ঘোষনা দেয়,জানায় নিঃসন্দেহে তিনিই এগুলোর সৃষ্টিকারী।
— ওস্তাদ সাইয়েদ কুতুব (রহিমাহুল্লাহ)

“মতপার্থক্য কখনো বিতর্ক উস্কে দেয় না। অহং-ই (ইগো) মূলত কোন মতবাদে বিশ্বাসী এমন প্রত্যেকেকে বিতর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে যখন তার সামনে পরিস্কার হয়ে যায়, সত্য তার মতবাদে নিহিত নয়। আসলে, সে যখন দাঁড়িপাল্লায় নিজের অহং আর সত্যকে স্থাপন করে শুরুতেই নিজের অহং-এর (ইগো) পাল্লায় ভার বেশী দিয়ে দেয়।”
— উস্তায সাইয়্যেদ কুতুব (রাহিমাহুল্লাহ)






আমরা জানি,এই সামান্য একটি কালিমাই তো এক সময় গর্দান বিসর্জন দেয়ার মত শক্তি রাখতো!এই কালিমাই তো এক সময় আল্লাহর পথে সন্তান-সন্ততি অকাতরে বিলিয়ে দেবার হিম্মত ও মনোবল রাখতো। এই কালিমা এক সময় স্বীয় মাতৃভূমি ছাড়ার শক্তি যোগাত, ফাঁসির মঞ্চে তুলে ধরতো তার বাহককে অকুন্ঠচিত্তে। আর আজ!
আজ সেই কালিমা সামান্য শীতের মৌসুমে নামাযের জন্য গরম বিছানা থেকে তুলে আনতে পারেনা। যে কালিমা সারা জীবনের অকৃত্রিম বন্ধু শরাবকে শরীয়তের একটি নির্দেশের ইশারায় মুহূর্তে দূরে সরিয়ে দিয়েছে,পরিনত করেছে শত্রুতে,আর আজ একান্ত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে এই কালিমা আপনাকে আপনার একটি সামান্য শখের আয়োজন থেকেও সরিয়ে আনতে পারেনা।
— ওস্তাদ আবুল হাসান আলী নদভী (রঃ)










ইবনু আতা’আল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)

“সে কী পেলো যে আল্লাহকে হারালো ?
সে কী হারালো যে আল্লাহকে পেলো?”
— ইবনু আতা’আল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনার রব আল্লাহর উপরে নির্ভর করে আপনি যা-ই করবেন তা কখনই কঠিন হবে না,
এবং আপনার নিজের উপরে নির্ভর করে আপনি যা-ই করবেন তা কখনই সহজ হবে না।”
— ইবনু আতা’ইল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)

হে আমার রব! আমি কতশত ভ্রান্তিতে থাকার পরও আপনি আমার প্রতি এতো সহৃদয়! আমি অনেক গুনাহগার হওয়ার পরও আপনি আমার প্রতি কতই না ক্ষমাশীল।
— ইবনু আতা’ইল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)

“আল্লাহ যখন আপনার জিহবাকে কিছু চাইতে উৎসাহিত করেন,
জেনে নিন তিনি আপনাকে কিছু দিতে চাইছেন।”
— ইবনু আতা’আল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)

“নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা ভুল-ত্রুটিগুলোর দিকে খেয়াল রাখা আপনার থেকে আড়াল করে রাখা অদেখা জগতসমূহের দিকে খেয়াল করতে যাওয়ার চাইতে উত্তম।”
— ইবনু আতা’ইল্লাহ আল ইসকান্দারি (রাহিমাহুল্লাহ)

“তিনি যখন অপ্রাপ্তির বুঝটি আপনার জন্য উন্মুক্ত করে দেন, তখন অপ্রাপ্তিটাও প্রাপ্তির সমান হয়ে যায়।”
— ইবনু আতা’ইল্লাহ আল ইসকান্দারী (রাহিমাহুল্লাহ)









শাইখ সালিহ আল-উসাইমিন (রহিমাহুল্লাহ)

“আপনার নিজের মেয়ের প্রতি যেমন ব্যবহার করা হোক বলে আশা করেন, আপনার স্ত্রীর প্রতি আপনি তেমন ব্যবহার করুন।”
— শাইখ সালিহ আল-উসাইমিন (রহিমাহুল্লাহ)

“যদি সুন্নাহ পালন করাকে আপনার ভার (কঠিন) মনে হয়, তাহলে বুঝবেন অন্তর রোগাক্রান্ত হয়েছে।”
— শাইখ উসাইমিন

“কোন পাপ করার জন্য আপনার কামনা যত বড় হবে, সেই পাপকে এড়িয়ে গেলে আপনার ঈমান তত বড় হবে।”
— শাইখ মুহাম্মাদ বিন আল-উসাইমিন (রাহিমাহুল্লাহ)
“যদি আকাঙ্ক্ষা করেন আপনার সম্পদ বৃদ্ধি হোক এবং আপনার পাপগুলো ক্ষমা হোক, তাহলে আপনার সাদাকাহ (দান) করা উচিত।”
— শাইখ ইবনে আল-উসাইমিন

“একজন ব্যক্তি তার অন্তরের পরিশুদ্ধির জন্য সবসময় আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে, এটা যথাযথ একটি কাজ। অন্তরের কাজকর্মের দিকে তার মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। কোন ব্যক্তি তার শরীরের কাজগুলোর প্রতি যতটা যত্ন নেয় তার চেয়ে অবশ্যই অনেক বেশি যত্ন নেয়া উচিত তার অন্তরের কাজগুলোর প্রতি, কেননা শরীরের কাজগুলো ঈমানদার এবং মুনাফিক সকলেই করে।”
— শাইখ ইবনে উসাইমিন

“সে (পুরুষ লোকটি) যদি সুখী জীবন যাপন করতে চায়, তাকে প্রশস্ত হৃদয় নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে সামর্থ্যের সর্বোচ্চ উত্তম আচরণ করতে হবে।”
— শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন

“সালাফদের কেউ একজন বলেছিলেন: ‘আমার স্ত্রীর জন্য আমি নিজেকে সুন্দর করে প্রস্তুত করতে ভালোবাসি ঠিক যেমনটা ভালোবাসি আমার স্ত্রী আমার জন্য সুন্দর করে সাজলে।’ এটা তো সেই হাদিসটির আওতায় পড়তে পারে: তোমাদের কেউই পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ না করবে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।”
— শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ বিন উসাইমিন








ইবনে রজব আল-হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনার ভালো কাজ কবুল হয়েছে কিনা তা বোঝার একটি উপায় হলো কাজটির পরে যখন আপনি আরো বেশি বেশি ভালো কাজ করেন।”
— ইবনে রজব আল-হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ)

“কিছু মানুষ অন্যদের সামনে নিজেদেরকে বিনয়ী করে রাখার অভিনয় করে যেন লোকে তাদেরকে বিনয়ী মনে করে এবং এতে তারা প্রশংসিত হতে পারে।
— ইবনে রজব আল-হাম্বলী (রাহিমাহুল্লাহ)

“ঈদের দিনগুলো কৃতজ্ঞ হবার, ক্ষমাপ্রার্থনা করার এবং অন্যদের মাফ করে দেয়ার দিন।”
— ইমাম ইবনে রজব আল হাম্বলি (রাহিমাহুল্লাহ)

“শীতকালটি মুমিনদের জন্য বসন্তকাল যখন সে আল্লাহর আনুগত্যের বাগানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। দিনগুলো থাকে ছোট এবং শীতল যেন সহজেই রোজা রাখা যায় এবং রাতগুলো থাকে দীর্ঘ যেন একজন ব্যক্তি ভালো করে ঘুমাতে পারে এবং রাতে নামাজ আদায়ও করতে পারে।”
— ইমাম ইবনে রজব (রাহিমাহুল্লাহ)

“তাদের (সাহাবাদের) অন্তরে দুনিয়ার উপস্থিতি ছিলো শূণ্য এবং তাতে আখিরাত ছিলো পরিপূর্ণ।”
— ইবনে রজব আল হানবলী

“আল্লাহ এবং মানবজাতির মধ্যবর্তী মর্যাদাপূর্ণ যে অবস্থানটি নবী-রাসূলদের, তা ধারণ করেন আলেমগণ।”
— ইমাম ইবনে রাজাব আল-হানবলী







ইমাম আল-আউজা’ঈ

“যারা রাতের বেলা নামাজে দাঁড়িয়ে থাকে, কিয়ামতের দিন তাদের দাঁড়িয়ে থাকাকে আল্লাহ সহজ করে দিবেন।”
— ইমাম আল-আউজা’ঈ

ইমাম আল-আউজা’ঈ বলেন, আমি বিলাল ইবনে সা’দকে বলতে শুনেছিঃ
“গোপনে আল্লাহর শত্রু হয়ে জনসম্মুখে আল্লাহর বন্ধু হবার ভান করো না।”

ইমাম আবদুর রহমান আল-আউযা’ঈকে (রাহিমাহুল্লাহ) একবার প্রশ্ন করা হয়েছিলো যে, ঈমান কি বৃদ্ধি পায় কিনা। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন: “হ্যাঁ, যতক্ষণ না পর্যন্ত তা পর্বতসম হয়।”
এরপর তাকে প্রশ্ন করা হলো ঈমান হ্রাস পায় কিনা এবং তিনি বলেছিলেন:
“হ্যাঁ, যতক্ষণ না পর্যন্ত তা একদম শূণ্য না হয়।”

​”কোন লোক ​যখন পাপ করে, অতঃপর সেগুলোকে তুচ্ছ মনে করে এবং অবজ্ঞা করে, সে পাপগুলো বড় পাপের অন্তর্ভুক্ত।”
— ইমাম আল-আউজা’ঈ

“কাউকে কোন কিছু দেয়ার ইচ্ছা না থাকলেও মুখে ইনশা-আল্লাহ বলাটা হলো কপটতা (মুনাফিকি)।”
— আবদ আল-রাহমান আল-আউজা’ঈ







আবদুর রহমান আস-সাদী

“যে ব্যক্তি অন্যদেরকে নিয়ে হাসি-তামাশা করে সে তাদের চাইতেও খারাপ। মানুষকে নিয়ে হাসি-তামাশা কেবল সে অন্তরেই আনন্দ যোগায় যে অন্তর খারাপ চরিত্রে ভরপুর।”
— শাইখ আস-সাদী

“আল্লাহ আদমের শ্রেষ্ঠত্বের প্রকাশ করেছিলেন ‘ইলমের (জ্ঞানের) মাধ্যমে। বান্দা যেসব মহৎ গুণাবলী ধারণ করতে পারে সেগুলোর মধ্যে ‘ইলম অন্যতম।”

“আল্লাহর বান্দার উচিত সবসময় আল্লাহর আদেশ মেনে চলা এমনকি যদি কোন লোক তার প্রতি অন্যায়ও করে। কেউ তার ব্যাপারে মিথ্যা বললেও ঐ লোকের ব্যাপারে মিথ্যা বলার এবং কেউ তাকে প্রতারিত করলেও ঐ ব্যক্তির সাথে প্রতারণা করার অনুমতি তার নেই।”
— শাইখ আস-সা’দী

“বিবাহিত দম্পতিরা তাদের আনন্দ, কল্যাণ খুঁজে পায় তাদের সন্তানদের মাঝে, সন্তানদের গড়ে তোলা ও তাদের সাথে মধুর সম্পর্ক বজায় রাখার মাঝে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মাঝে যে ভালোবাসা এবং রাহমাহ (দয়াশীলতা) বিরাজ করে তা সাধারণত আর কোথাও পাওয়া যায় না।”
— শাইখ আবদুর-রহমান আস-সা’দী

"আপনার হৃদয় যে আল্লাহর জন্য আকর্ষণ অনুভব করে না তার একটি চিহ্ন হলো নামাজের প্রতি আপনার অলসতা।”
— আবদুর রহমান আস-সাদী








আল-ফুদাইল ইবনে ইয়্যাদ (রাহিমাহুল্লাহ)

“একজন বান্দার জ্ঞানের গভীরতা যত বেশি হয় আল্লাহভীতিও তত বেশি হয়, আখিরাতের প্রতি তার মনোযোগ যত বেশি হয় দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তিও তত বেশি হয়।”
— আল-ফুদাইল ইবনে ইয়্যাদ (রাহিমাহুল্লাহ)

“যখন পারস্পরিক গীবত চালু হয়ে যায়, তখন আল্লাহর জন্য ভ্রাতৃত্ব উধাও হয়ে যায়; সেই সময়ে তোমরা হয়ে যাবে সেই বস্তুগুলোর মতন যার বাইরে সোনা এবং রূপার আবরণ থাকলেও ভেতরে থাকে কাঠ, যার নিছক বাহিরটাই দেখতে ভালো।”
— আল-ফুদাইল ইবনে ইয়্যাদ (রাহিমাহুল্লাহ)

“অল্প সংখ্যক মানুষ হেদায়াতের পথে চলে বলে সেই পথে চলার সময় একাকীত্ববোধ করবেন না, এবং বিপুল সংখ্যক ধ্বংসপ্রাপ্ত পথিকদের (পথভ্রষ্টতার পথে) দেখে বিভ্রান্ত হবেন না।”
— আল-ফুদাইল ইবনে ইয়াদ (রাহিমাহুল্লাহ)

পাঁচটি বিষয় জীবনের প্রতিবন্ধকতার সাথে সম্পর্কিত:
১) হৃদয় কঠিন থাকা,
২) চোখ থেকে যখন অশ্রুপাত না হওয়া,
৩) হায়া (লজ্জাশীলতা) সীমিত পরিমাণ থাকা,
৪) জাগতিক জীবনের প্রতি আসক্তি,
৫) জীবনের দীর্ঘমেয়াদি আশা/আকাঙ্খা।
— আল-ফুদাইল ইবনে ইয়্যাদ (রাহিমাহুল্লাহ)

“যে ব্যক্তি এমন একজন ভাইকে খুঁজে যে ত্রুটিমুক্ত হবে, সে কোনদিন কোন ভাইকে তার বন্ধু হিসেবে পাবে না।”
— ফুদাইল ইবনে ইয়্যাদ (রাহিমাহুল্লাহ)

“জীবনের যে সময়টুকু বাকী আছে সেটুকু ত্রুটিমুক্ত রাখুন, আপনার অতীতে যা হয়ে গেছে তা আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন।”
— আল-ফুদাইল ইবন ইয়্যাদ (রাহিমাহুল্লাহ)

“উত্তম চরিত্রের মানুষ ছাড়া অন্যদের সাথে মেলামেশা করবেন না; কেননা যার চরিত্র উত্তম তিনি যা কিছু বয়ে আনেন তা শুধুই উত্তম, অন্যদিকে যার চরিত্র খারাপ সে যা বয়ে আনে তা শুধুই খারাপ।”
— আল-ফুদাইল ইবনে ইয়াদ (রাহিমাহুল্লাহ)









ওমর সুলাইমান

“যারা আপনাকে ঘৃণা করে তারা আপনার নামে লোকে যা বলে তা বিশ্বাস করে। যারা আপনাকে ভালোবাসে তারা আপনাকে বিশ্বাস করে।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“লোকে আপনার ব্যাপারে কী মন্তব্য করে সে বিষয়ে যদি আপনি অতিরিক্ত মনোযোগ দেন, তাহলে এর ফলে আপনি যে শুধু আত্মবিশ্বাস হারাবেন তা নয়, বরং আপনার আন্তরিকতাও হারিয়ে ফেলবেন।”
— ওমর সুলাইমান

“আল্লাহর কাছে অভিযোগ করা মু’মিনের কাজ,
আল্লাহর নামে অভিযোগ করা শয়তানী কাজ”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

যখন পাপকাজ করার প্রতি ইচ্ছা জাগবে, তখন নিজেকে বলুন, “জান্নাতে যা দেয়া হবে তা এর চেয়ে অনেক বেশি উত্তম এবং এই কাজটা করে আমি তা পাওয়াকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছি।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“যখন আপনি কোন মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার করবেন, সেই মানুষটি ঠিক একই রকম ব্যবহার আপনার সাথে না-ও করতে পারে। কিন্তু আপনি মন দিয়ে খেয়াল করলে দেখবেন, আল্লাহ আপনার কাছে *অন্য কাউকে* পাঠিয়েছেন যিনি তার চাইতেও উত্তম ব্যবহার করেন।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“একজন সুন্দর মানুষের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সে সবসময় অন্যদের মাঝে সৌন্দর্য দেখতে পায়।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“যারা সচেতন কেবল তারাই রক্ষা পায়।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“কোন ব্যক্তির তাকওয়া (আল্লাহভীতি) না থাকলে সে যদি বিবাহিত হয় তবুও দৃষ্টিকে সংযত করে না। তাকওয়াসম্পন্ন মানুষ যদি অবিবাহিতও থাকে, সে তার দৃষ্টিকে সংযত করে।”
— ওমর সুলাইমান

“সে-ই প্রকৃত পুরুষ যে আল্লাহর জন্য কাঁদে।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“তাদেরকেই ভালোবাসুন যাদের সাথে আখিরাতে একসাথে থাকতে চান”
— ইমাম ওমর সুলাইমান

“আমি এমন অবিবাহিতদের কথা জানি যারা বিবাহিতদের হিংসা করেন কেননা তারা মনে করেন বিয়ে যেন কোন এক রূপকথার গল্প, আবার এমন বিবাহিতদের কথা জানি যারা অবিবাহিতদের হিংসা করেন কেননা তারা এখন উপলব্ধি করছেন বিয়ে কোন রূপকথার গল্প নয়।”
— ইমাম ওমর সুলাইমান









উস্তাদ নুমান আলী খান

“আপনি যখন কুরআন তিলাওয়াতের স্বাদ হৃদয়ে আস্বাদন করতে শুরু করবেন, তখন বুঝবেন কোন সঙ্গীত আপনাকে সেই অসাধারণ অনুভূতি দিতে পারবে না। গান-বাদ্য হালাল নাকি হারাম এমন ফাতওয়া আপনি তখন আর খুঁজতে যাবেন না, গান-বাজনা আপনার কাছে স্রেফ অপ্রয়োজনীয় বাজে ব্যাপার বলে মনে হবে।”
— উস্তাদ নুমান আলী খান

“আপনার পাপগুলো আল্লাহর দয়ার চেয়ে বড় নয়।”
— নু’মান আলী খান

“আপনি যখন কাউকে সাহায্য করার সুযোগ পেয়ে থাকেন, তখন আনন্দিত হোন এইজন্য যে আল্লাহ ঐ ব্যক্তির দোয়ার সাড়া আপনার মাধ্যমেই দিচ্ছেন।”
— নু’মান আলী খান

“অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আপনাকে দাম্ভিক ও উদ্ধত করে তুলতে পারে এবং অতিরিক্ত নম্রতা আপনাকে এমন অযোগ্য করে তুলতে পারে যে আপনি কোন কাজই পূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন না। ইসলাম এই দুটোর মধ্যবর্তী একটি পথ।”
— উস্তাদ নু’মান আলী খান

“নোংরা ও বাজে ভাষা ব্যবহার করে সেসব লোকেরাই কথা বলে যাদের সুন্দর ভাষা ব্যবহার করে কথা বলার মতন যথেষ্ট জ্ঞান হয়নি অথবা বয়সের পরিপক্কতা আসেনি।”
— উস্তাদ নু’মান আলী খান

“আপনি যদি ন্যায় বিচারে বিশ্বাসী হোন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আখিরাতকে বিশ্বাস করতে হবে। কারণ, কেবলমাত্র এই দুনিয়াটা ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।”
— উস্তাদ নোমান আলী খান

“কুরআন আমাকে কী শেখায় জানেন? কুরআন আমাকে শেখায়, বিপুল ঐশ্বর্যশালী ব্যক্তি (ফেরাউন) জীবনে চরমভাবে ব্যর্থ হতে পারে এবং একজন গৃহহীন ব্যক্তি (ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম) পেতে পারেন মহাসাফল্য। কুরআন আমাকে শেখায় সাফল্যের সাথে ধন-সম্পদের এবং ব্যর্থতার সাথে দারিদ্রের কোনই সম্পর্ক নেই”।
— নু’মান আলী খান

“জোর করে দেয়া বিয়েগুলো যে কতটা অ-ইসলামিক এবং নিষ্ঠুর সেই বিষয়ে আমাদের উচিত সমাজের মাঝে সশ্রদ্ধ ও উন্মুক্ত আলাপ-আলোচনা শুরু করা।”
— উস্তায নু’মান আলী খান

​​”​ইসলাম সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে দূর করার নির্দেশ দেয় না, বরং সংস্কৃতিকে অন্যায় ও অনৈতিক চর্চাগুলো থেকে মুক্ত রাখতে চায়।”
— উস্তাদ নু’মান আলী খান

​”আপনি যেসব জিনিস দেখছেন, যা শুনছেন এবং যেসব জায়গায় যাচ্ছেন তা আপনার চরিত্রের উপরে প্রভাব রাখবে না –এটা আপনি কিছুতেই ধরে নিতে পারেন না। এগুলো অবশ্যই আপনার চরিত্রকে প্রভাবিত করবে।​”
​– উস্তাদ নু’মান আলী খান ​

“দ্বীনের নামে অন্যদেরকে অপদস্ত করা সেই ব্যক্তির অভ্যাস যে দ্বীনের প্রথম ফলটির স্বাদ আস্বাদন থেকে বঞ্চিত যা হলো বিনয়।”
— উস্তাদ নু’মান আলী খান










শাইখ হামজা ইউসুফ

“আমরা ভুলে যাই কলম খুব শক্তিশালী হলেও জিহবা তার চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“ভালোবাসার ব্যাপারটায় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশি ভালো। তাই আল্লাহ তাদের মা বানিয়েছেন।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

সবচেয়ে বড় মিথ্যাগুলোর একটি হলো, “আমার তেমন কোন সময় নেই।”
প্রকৃত কথাটি যা হওয়া উচিত তা হলো, “আমি আমার সময়কে এতটা বুদ্ধির সাথে ব্যবহার করিনা যে সময় পাব।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“আপনি যখন দরজায় দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ছেন, তখন সেই কাজটিও দরজা খুলে যাওয়ার একটি অংশ; আপনি যখন কোন যাত্রাপথে তখন রওয়ানা হওয়ার মাঝেই আপনার যাত্রা শুরু হয়ে গেছে, যদি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে না-ও পারেন তবু চিন্তিত হবেন না। সময় নষ্ট করা বন্ধ করুন, মৃত্যু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এটাই ছিলো ইমাম গাজ্জালীর মূল বার্তা।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“যাদের হৃদয় ভেঙ্গে যায় তাদের সাথে আল্লাহ থাকেন। আপনার হৃদয় ভেঙ্গে যাওয়া একটা ভালো ঘটনা, কেননা ভেঙ্গে যাওয়া হৃদয়টি তার মাঝে আল্লাহর আলো প্রবেশের পথ প্রশস্ত করে দেয়। দুনিয়া তো সাজানোই হয়েছে এমন করে যা আপনার হৃদয়কে ভাঙ্গবে, চুরমার করে দিবে।”
— হামজা ইউসুফ

ভালোকাজের মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরে। যখন সময় হয় কেবল তখনই তার বর্ষণ হয়। আল্লাহ বৃষ্টি বর্ষণ করেন শুকনো মৃত মাটির উপরে; একদম সঠিক সময়েই। যখন পথ অবারিত হবার সময় হবে, তখনই সেই পথটি প্রশস্ত হবে। আল্লাহ তার সময় অনুযায়ীই সেই কাজটি করেন, আমাদের সময়ের হিসেবে নয়। আর এটা আমাদের ক্বাদরের ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকার একটি অংশ; যা হয়েছে তা আপনার জন্য নির্ধারিত ছিলো বলেই হয়েছে।
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“নিজেকে জোর করে বিনয়ী করুন যতক্ষণ না পর্যন্ত তা আপনার সহজাত স্বভাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর আপনি অবচেতনভাবেই বিনয়ী হয়ে যাবেন।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“আপনি যা কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করেন তার সবকিছুই আল্লাহর কাছে আছে। সুতরাং, আপনি যদি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলাকে পেয়ে থাকেন তাহলে আপনার আকাঙ্খিত সবকিছুই আপনার কাছে আছে। আপনি যদি আল্লাহকে না পেয়ে থাকেন, তাহলে আপনার আকাঙ্ক্ষার কোন কিছুই আপনাকে সুখী করতে পারবে না।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“ইসলামের ব্যাপারে আমাদের সংশয় নেই, কিন্তু দাম্ভিকতা এড়ানোর জন্য আমাদের উচিত ইসলামকে আমরা কীভাবে বুঝি তা নিয়ে সংশয়ে থাকা।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ

“আমি আগে ভাবতাম মুসলিম বিশ্বের সংকটটা আধ্যাত্মিক। মুসলিম বিশ্বের যে সংকট রয়েছে তা হলো জ্ঞানের, তা হলো বুদ্ধিমত্তার।”
— শাইখ হামজা ইউসুফ








 ড. বিলাল ফিলিপস

“আপনি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোন কিছুকে ত্যাগ করেন, তাহলে আল্লাহ তার পরিবর্তে আপনাকে এমন কিছু দান করবেন যা পাওয়ার কথা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“এই পৃথিবীর অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যেত যদি আমরা নিজেদের ব্যাপারে অন্যদের সাথে কথা না বলে নিজেরা পরস্পর কথা বলতাম।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“আল্লাহর আনুগত্য আর ইবাদাত করা জীবনের কঠিন সময়ে বেশ সহজ হয়, কিন্তু ভালো সময়ে তা খুব কঠিন। আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের শ্রেষ্ঠ সময়গুলোতে বিশেষভাবে আল্লাহর আদেশ মেনে চলতে হবে এবং তার ইবাদাত করতে হবে।”
— ড বিলাল ফিলিপস

​”​একজন মুসলিম স্বামীর প্রথম কর্তব্য হলো তার স্ত্রীকে আধ্যাত্মিক পথের নির্দেশনা দেয়া।​”​
— ড. বিলাল ফিলিপস

“প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক হলেই ঐশ্বর্যবান হওয়া যায় না বরং হৃদয় যার সম্পদে পরিপূর্ণ তিনিই প্রকৃত ঐশ্বর্যবান। আর হৃদয়ের সম্পদ কোনটি তা জানেন কি? হৃদয়ের সম্পদ হলো সন্তুষ্টি।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“পরিবর্তন খুব তাড়াতাড়িই হয়। যে ব্যাপারটিতে দেরি হয় তা হলো পরিবর্তিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া।”
— ড বিলাল ফিলিপস

“একজন মানুষ যখন বুঝতে পারেন তার জীবনে আল্লাহর রাহমাতের সংখ্যা এতই বেশি যে তা গুণে শেষ করা সম্ভব নয়, তখন তার কাছে দুনিয়ার জীবনের পরীক্ষাগুলোকে আল্লাহর নি’আমাতের সমুদ্রের তুলনায় বৃষ্টির ফোঁটার মতন মনে হয় এবং ধৈর্যধারণ (সবর) করা তখন তার জন্য সহজ হয়ে যায়।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“কোন সৃষ্টির প্রতি মানুষের ভালোবাসা, বিশ্বাস ও ভয় যখন আল্লাহর চাইতে বেশি হয়, তখন তা শিরক।”
— ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস

“আপনার পছন্দের সবকিছু থাকার মাঝে সত্যিকারের সুখ নেই, বরং আপনার যা কিছু আছে তা পছন্দ করার মাঝেই রয়েছে প্রকৃত সুখ। এটিই হলো ঈমানের ৬ষ্ঠ স্তম্ভটি, তাকদীরে (ভাগ্যে) বিশ্বাস করা।”
— ড বিলাল ফিলিপস

“আপনি যেদিন উপলব্ধি করবেন ইসলামের জন্য কী বিশাল পরিমাণ কাজ করা প্রয়োজন অথচ হাতে কতটা কম সময় রয়েছে, সেদিন বুঝতে পারবেন ছুটির দিন কাটানোর মতো কোন সময় নেই।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“কোন মানুষের জীবনে বস্তুগত প্রয়োজন যতটা কম, তার জীবন ততটাই উত্তম।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“আমরা যা শিখছি তা যদি আমাদের বিশ্বাসের উপর কোন প্রভাব ফেলতে না পারে, আমাদেরকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যেতে না পারে, আমাদের বিশ্বাসকে আরো মজবুত করতে না পারে… তাহলে এর অর্থ হচ্ছে আমাদের উদ্দেশ্যে, নিয়্যতে ভুল আছে”
— ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস

“দ্বীনদার স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে তাদের দ্বীনকে মজবুত রাখার জন্য সহায়তা করে, সমর্থন করে এবং উপদেশ প্রদান করে যা তাদেরকে আল্লাহর আদেশ মেনে চলতে এবং পাপকাজ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।”
— ড. বিলাল ফিলিপস

“জীবনের যেসব বাধা-বিপত্তি সামলানো আমাদের সামর্থ্যের বাইরে তাদের যখন আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীরের অংশ মনে করে ধৈর্যের (সবর) সাথে গ্রহণ করব কেবলমাত্র তখনই অন্তরের প্রশান্তি অর্জন করা সম্ভব হবে।”
— ড. বিলাল ফিলিপস










তারিক রমাদান

“আপনার ভালো কাজগুলো আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। আপনার করা ভালো কাজগুলো আপনার নিজেরই প্রয়োজন।”
— ড. তারিক রমাদান

“সবসময় ইতিবাচক থাকুন। আপনার জীবনের সবকিছুরই একটা অর্থ আছে যদিও এখন আপনার জীবনে যা কিছু ঘটছে তার অর্থ হয়ত আপনি জানেন না।”
— তারিক রমাদান

“মানুষকে খুশি করা খুবই কঠিন, আল্লাহকে খুশি করা সবচেয়ে সহজ।”
— তারিক রমাদান

“আপনি যদি খুব ভালো একটা জীবন পেতে চান, কখনো ভুলবেন না যে আপনি একদিন মৃত্যুবরণ করবেন।”
— তারিক রমাদান

“অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত। হৃদয়ের জন্য কোন সময়ের সীমা নেই, সে তার আপন সময়টুকুই নেয়… ভালোবাসতে, ক্ষমা করতে, ভুলে যেতে।”
— ড. তারিক রমাদান

“আপনার মনের শক্তি হলো জ্ঞান; আপনার হৃদয়ের শক্তি হলো ভালোবাসা।”
— তারিক রমাদান

উত্তম চরিত্র সবসময় একটি প্রশ্ন দিয়ে শুরু হয়, “আমি কাজটি কেন করছি?”
— তারিক রামাদান

“আমি যতই জ্ঞান অর্জন করি, আমার বিশ্বাস ততই দৃঢ় হয়। আমি যতই শিখি, আমি ততই সুন্দর করে আল্লাহর ইবাদাত করতে পারি। কারণ, প্রকৃতপক্ষে সমস্ত জ্ঞানের মহাজ্ঞানী আল্লাহ। আমি জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে যা করতে চাই তা হলো — তাঁর কাছে যাওয়া।”
-– ড. তারিক রমাদান

“আপনি আজকে যা করছেন তা হয়ত আমি পছন্দ করিনা, কিন্তু তাই বলে আমি আপনাকে ছোট করবো না। কারণ, আগামীকালের আপনি হয়ত আজকের আমার চেয়ে ভালো হবেন।”
-– তারিক রামাদান

জ্ঞান অর্জন করতে না পারলে বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাবেন না। কেননা অজ্ঞতা তো আপনার প্রথম কারাগার।
— তারিক রমাদান

“সহানুভূতির ব্যাপারটা সবসময় আপনার কাছ থেকেই শুরু হয়। আপনি নিজেকে যতই ভালো করে খেয়াল করবেন এবং আপনার দুর্বলতাগুলোকে দেখতে পাবেন, অন্যদের ব্যাপারে আপনি ততই কম বিচারপ্রবণ হবেন।”
— তারিক রমাদান

“আপনার পথচলা যে সত্যিই আল্লাহর দিকে তার একটি ইঙ্গিত হলো, তখন আপনি ভয়ের উর্ধে থাকবেন। এটাই চুড়ান্ত মুক্তি।”
— তারিক রমাদান

“প্রতিবন্ধকতাগুলো আপনার ঈমানকে দৃঢ় করে এবং আপনাকে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে।”
— তারিক রমাদান

“ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম। সুতরাং, জেগে উঠুন এবং নামাজে দাঁড়িয়ে যান। এর মাধ্যমে আপনি আপনার অহং (ইগো) থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন।”
-– তারিক রমাদান

“সবচেয়ে ভয়াবহ কারাগার সেটি যার শিকগুলো অদৃশ্য।”
— তারিক রমাদান

“মুক্তি কী তা আপনি বুঝতে পারবেন না যদি শৃংখলা কী তা বুঝতে না পারেন।”
– তারিক রমাদান

“একটা কথা প্রচলিত আছে, যা রটে তার কিছু তো বটে। এটি একটি বাস্তব সত্য। কিন্তু একজন লোকের খুঁজে দেখা উচিত যে রটনার ঘটনাটাতে কী ঘটেছে এবং কে সেটা ঘটিয়েছে।”
-– তারিক রামাদান

“মুসলিম হিসেবে গর্বিত হওয়াটা কোন স্ট্যাম্প নয় যা আপনার বুকের উপরে লাগানো থাকে, বরং এমন একটি আলো যা আপনার অন্তরকে আলোকিত করে রাখে।”
-– তারিক রমাদান

“ইসলামে কোন সংস্কারের প্রয়োজন নেই। সংস্কার প্রয়োজন আমাদের মুসলিমদের মন-মানসিকতায়।”
– তারিক রামাদান

“আধ্যাত্মিকতা অর্জনের ব্যাপারটাই হলো নিজের নফসের সাথে ক্রমাগত জিহাদ করা।”
— তারিক রমাদান

“হৃদয় আপনার বিনয়ের কেন্দ্র, মন হতে পারে আপনার দাম্ভিকতার উৎস।”
— তারিক রামাদান








মুফতি ইসমাইল মেংক

“একটি প্রোফাইল পিকচার আমাদের সম্পর্কে অনেক কথা বলে দেয়, বুঝিয়ে দেয় আমরা কীসের পক্ষে এবং কোন জিনিসের প্রচার করি। খুব খেয়াল করে ছবি বাছাই করুন।”
— মুফতি ইসমাইল মেংক

“সুখ খুঁজে বেড়াচ্ছেন? বলুন আপনার কী কী অভাব?
পৃথিবীতে তো তারাই সবচাইতে বেশি প্রশান্ত হৃদয়ের যাদের সাথে তাদের স্রষ্টা আল্লাহর সম্পর্ক সবচাইতে ভালো।”
— মুফতি ইসমাইল মেংক

“সবাই আপনার দুঃখ দেখে দুঃখী হবেনা এবং সবাই আপনার সুখ দেখে সুখী হবেনা। সুতরাং খেয়াল রাখুন কার কাছে আপনি আপনার ব্যক্তিগত কথাগুলো বলছেন।”
— মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক

“যদি সম্মানিত হতে চান, অন্যদেরকে সম্মান করতে শিখুন।”
— মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক

“যে কিছুই অর্জন করেনি তার প্রতি কেউ ঈর্ষান্বিত হয় না। যদি আপনার চারপাশে ঈর্ষার পরিমাণ বেশি হওয়া টের পান, বড় একটা হাসি দিন এবং আল্লাহকে ধন্যবাদ জানান যে আপনার এমন কিছু আছে যা অন্যদের নেই।”
— মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক

“রাগ থেকে দূরে থাকুন, এটা কেবল আপনাকেই যন্ত্রণা দেয়!
আপনি যদি সঠিকই হোন, তবে রাগ করার কোন প্রয়োজন নেই। আর আপনি যদি ভুল হন, তাহলে রাগ করার কোন অধিকারই আপনার নেই।”
— মুফতি ইসমাইল মেনক

বিনয়ী হোন। আপনার অধিকারে যা আছে সেগুলো যেন আপনাকে এমন কথা না ভাবায় যে তারা চিরকাল আপনার কাছে রয়ে যাবে। আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ছিলো এমন অনেক মানুষেরই এখন কিছুই নেই। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।
— মুফতি ইসমাইল মেংক

“আল্লাহ যদি তার অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হওয়াকে নিষিদ্ধ করেই থাকেন, তাহলে যেসব মানুষ আপনার মাঝে হতাশা সৃষ্টি করে তাদের দ্বারা আক্রান্ত হতে নিজেকে প্রশ্রয় দিবেন না।”
— মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক

“আপনি যখন একাকীত্ব অনুভব করবেন তখন নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিবেন, আল্লাহ অন্য সবাইকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন যেন তখন আপনার অন্তরে শুধু তিনি থাকতে পারেন।”
— মুফতি ইসমাইল মেনক

“সন্তানদের জন্য বিয়েকে সহজ করে দেয়া আমাদের জন্য ইবাদাত স্বরূপ। আর তাদের জন্য বিয়েকে কঠিন করে ফেলা একটি পাপ, যা অন্যান্য আরো অনেক পাপের জন্ম দেয়।”
— মুফতি ইসমাইল মেঙ্ক

“কখনো কখনো কোন ক্ষত সৃষ্টির সময়ে আমাদের যে কষ্ট হয়, তার চেয়েও বেশি কষ্ট হয় তার ক্ষমা করতে গিয়ে। কিন্তু তবুও, সেই ক্ষমাশীলতা ছাড়া আসলে কোন শান্তি পাওয়া যায় না।”
— মুফতি ইসমাইল মেংক

“অন্যদেরকে অপমান করাটা কখনই তাদের সংশোধন করার উপায় নয়, বরং এতে আরো বেশি ক্ষতি হয় এবং এই ব্যাপারটি প্রমাণ করে দেয় যে আমাদের নিজেদের দিকেই খেয়াল করা প্রয়োজন।”
— মুফতি ইসমাইল মেংক

“জীবনের প্রতিটি পরীক্ষা আমাদের জন্য হয় নির্মম অথবা উত্তম হয়, প্রতিটি সমস্যা আমাদেরকে হয় হয় গড়ে তোলে অথবা ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলে। আমাদেরকেই বেছে নিতে হবে আমরা কি ক্ষতিগ্রস্তদের দলে ​নাকি জয়ীদের দলে অন্তর্ভুক্ত হতে চাই।”
— মুফতি ইসমাইল ​মেংক​








“কুর’আন থেকে যারা দূরে সরে যায় তাদের অস্থিরতা বেড়ে যায়, তাদের জীবনটা অগোছালো হয়ে যায়, এলোমেলো হয়ে যায়।”
— শাইখ আব্দুর রহমান মাদানী

”একজন পুরুষের সাথে দ্বীনদার নারী হলেন রাজার মাথায় স্বর্ণখচিত ​মুকুটের মতন, অন্যদিকে একজন পুরুষের সাথে খারাপ নারী হলো বৃদ্ধ ব্যক্তির মাথায় চাপানো ভারী বোঝার মতন।”
— আব্দুল-রাহমান ইবনে আবজা​

“তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো যাদের দ্বীনদারী তোমার চাইতে বেশি এবং দুনিয়াদারী তোমার চাইতে কম।”
— উসমান ইবনে হাকিম

কাসিম আল-জুয়ী বলেছিলেন,
আমি তোমাকে পাঁচটি কথা দিয়ে উপদেশ দিচ্ছি:
(১) তোমার সাথে কেউ অন্যায় করলে, তুমি অন্যায় ব্যবহার করবেন না।
(২) তোমার প্রশংসা করা হলে খুশি হবে না।
(৩) সমালোচিত হলে বিচলিত হয়ে যাবে না।
(৪) তোমাকে অবিশ্বাস করা হলে রাগ করবে না।
(৫) লোকে যদি তোমার সাথে প্রতারণা করে, তুমি তাদের সাথে প্রতারণা করবে না।
[ইবনে আল জাওযী, সিফাতুস সাফওয়া, ২/২০০]

“একজন বান্দার জন্য সবচেয়ে জঘন্য পাপগুলোর একটি হলো তার নিজের পাপকাজগুলোকে ছোট করে দেখা।”
— মুহাম্মাদ বিন আবু-বকর আস-সিদ্দিক

“মুনাফিকের জ্ঞান তার কথাবার্তার মাঝে, মু’মিনের জ্ঞান তার কাজের মাঝে।”
— আবদুল্লাহ ইবনে আল-মু’তাজ

“একজন মা হলো প্রথম শিক্ষালয়। মা যদি দ্বীনদার হন তবে সেই বংশের সন্তানরা দ্বীনদার হয়।”
— আন-নাজমী

“আল্লাহর প্রতি (কোন ব্যক্তির) ভালোবাসা থাকার প্রমাণ হলো তাকে (আল্লাহকে) স্মরণ করা (যিকির) বাড়িয়ে দেয়া। নিশ্চয়ই তোমরা এমন কিছুকে ভালোবাসো না যা তোমরা বেশি বেশি করে স্মরণ করো না।”
— রাবী ইবনে আনাস

“হে আমার সন্তান! নারী হলো পুরুষের প্রশান্তিস্বরূপ। কিন্তু পুরুষ তার সাথে থাকতে পারে না যদি তারা দু’জন একই মতের না হয়। তুমি যদি কোন নারীকে বিয়ে করতে চাও, তাহলে তার পরিবার সম্পর্কে জেনে নাও। যে গাছের শেকড় দৃঢ় তার ফল ভালো হয়।”
— আল-খাত্তাব আল-মাখজুমি

হুযাইফা ইবনে আল-ইয়ামান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ
“এখনকার সময়ে তোমাদের মাঝে যারা মুনাফিক আছে তারা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সময়ের মুনাফিকদের চাইতেও বেশি নিকৃষ্ট।”
তাকে প্রশ্ন করা হলো, “হে আবু আব্দুল্লাহ, সেটা কীভাবে সম্ভব”?
তিনি উত্তর দিলেন, “সেই সময়ের (রাসূলুল্লাহর সময়ের) মুনাফিকরা তাদের নিফাক (ভন্ডামি) সবার কাছ থেকে লুকানোর চেষ্টা করতো। অথচ এখনকার সময়ে যারা মুনাফিক তারা নিফাক (ভন্ডামি) করে প্রকাশ্যে।”
[আল-বুখারী, ৭১১৩]

“যখন তোমার বাল্যকাল তখন তুমি অন্য বালক/বালিকদের সাথে খেলাধূলাতে ব্যস্ত থাকো।
যখন তোমার যৌবনকাল তখন তুমি আমোদপ্রমোদে ডুবে থেকে অবহেলায় জীবন কাটাও।
যখন তুমি বার্ধক্যে পৌঁছে যাও তখন তুমি শক্তিহীন দুর্বল হয়ে পড়ো।
তাহলে তুমি কবে কেবল আল্লাহর জন্য তোমার কাজগুলো করবে?”
— আবু আল-লাইস আস-সামারকান্দী

আপনি যদি বিয়ে করতে আগ্রহী হন, তাহলে সম্ভাব্য জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর মধ্যে যেন তিনটি বিষয় থাকে তা চেয়ে আল্লাহর কাছে দু’আ করুন:
১) হে আল্লাহ! এমন একজন সঙ্গী দান করুন যে আমাকে আপনার কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।
২) হে আল্লাহ! এমন একজন সঙ্গী দান করুন যে জান্নাতে আমার হাত ধরে ঘুরে বেড়াবে।
৩) হে আল্লাহ! এমন একজন সঙ্গী দান করুন যে আমার ঈমানকে বাড়িয়ে দিবে।
— শাইখ মুসলেহ খান

“নিয়াতের ব্যাপারে শিখুন কেননা এটা কাজের চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
— ইয়াহইয়া ইবনে আবি কাসির

“যখন একজন জ্ঞানী ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে থাকে, তখন তার উচিত তার সম্মানিত ‘আলেমসুলভ জ্ঞান-বুদ্ধি কোন একটি কোণায় রেখে দিয়ে খুনসুঁটি, হাসিঠাট্টা ও কৌতুক (শুরু) করা যেন তার স্ত্রীর নিজ প্রাপ্যগুলো পেতে পারে।”
— ইবনে আকীল

সা’ঈদ আস সা’ইবকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, “আজ আপনি কেমন আছেন ?”
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “পূর্বঘোষণা ছাড়াই যে হাজির হয়, সে মৃত্যুর জন্য আজ আমি অপেক্ষা করছি ।”

একজন সালাফ বলেছিলেন:
“যারা সবকিছু থেকে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর দিকে ঘুরিয়ে নেয়, আল্লাহও তাদের দিকে পুরোপুরিভাবে ঘুরে যান। যারা আল্লাহর কাছ থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে সরে যায়, আল্লাহও তাদের কাছ থেকে পুরোপুরিভাবে দূরে সরে যান।”

আসমা বিনতু আবু বকরের (রাদিয়াল্লাহু আনহা)মধ্যে সততা, দানশীলতা, মহত্ব ও প্রখর বুদ্ধিমত্তার মত এমন সব সুষম চারিত্রিক গুণাবলীর সমন্বয় ঘটেছিল যা ছিল বিরল। তার দানশীলতা তো একটি প্রবাদে পরিণত হয়েছিল। তার ছেলে আবদুল্লাহ বলেন:
“আমি আমার মা আসমা ও খালা আয়িশা থেকে অধিক দানশীলা কোন নারী দেখিনি। তবে তাঁদের দু’জনের দান প্রকৃতির মধ্যে প্রভেদ ছিল। আমার খালার স্বভাব ছিল, প্রথমতঃ তিনি বিভিন্ন জিনিস একত্র করতেন। যখন দেখতেন, যে যথেষ্ট পরিমাণ জমা হয়ে গেছে, তখন হঠাৎ করে একদিন তা সবই গরীব মিসকীনদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন। কিন্তু আমার মা’র স্বভাব ছিল ভিন্নরূপ। তিনি আগামীকাল পর্যন্ত কোন জিনিস নিজের কাছে জমা করে রাখতেন না।”

“আমাদের সমস্যা আধ্যাত্মিকতায়। যদি একজন মানুষ আমার সাথে মুসলিম বিশ্বে কী কী পুনর্গঠন করা প্রয়োজন সেই বিষয়ে কথা বলতে আসেন, অথবা রাজনৈতিক কৌশল সম্পর্কে এবং অনেক বড় কোন ভৌগলিক কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে আসেন, তার প্রতি আমার প্রথম প্রশ্ন হবে তিনি ফজরের নামায সময়মত আদায় করেছেন কিনা।”
— সাইদ রমাদান

আল-ওয়াকি বিন আল-জাররাহ বর্ণনা করেনঃ
আমরা ঈদের দিন সুফিয়ান আস-সাওরির সাথে বাইরে বের হয়েছিলাম এবং তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘আজকের দিনে আমরা প্রথম যে কাজটি করবো তা হলো আমরা আমাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখবো।”

"মানুষের সাথে সুন্দর ও অমায়িক ব্যবহার করো এবং তাদের দুর্ব্যবহারে কোন কষ্ট পেলে নিজেকে রক্ষা করার জন্য চরম ধৈর্যধারণ করো যেন তুমি বধির, মূক ও অন্ধ; তাদের অসদাচরণকে তুমি অনুভবই করতে পারো নাই।”
— হেলাল ইবনে আলা’ রক্কী

“একজন মু’মিন কথা কম বলেন এবং আ’মল বেশি করেন, কিন্তু একজন মুনাফিক আ’মল কম করে এবং বেশি কথা বলে।”
— আল-আউজা’ই

“আমার কাছে রাজা-বাদশাহদের প্রাসাদের চেয়ে বই অনেক বেশি উত্তম।”
— শাইখ হামাদ আল-আনসারি

আবু হাফস আল-ফাল্লাস বলেনঃ
“আমি ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ কে তার অসুস্থতার সময় বলেছিলামঃ “আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা দান করুন। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কাছে যা পছন্দের, আমার কাছেও তা পছন্দের’। ”

ইবরাহীম আত-তামিমি বলেছিলেনঃ
“কেউ যখন আমার প্রতি অন্যায় করে, আমি তার প্রতিদান দেই দয়ার মাধ্যমে।”

“এই জীবনটাকে এমনভাবে গ্রহণ করো যেন তুমি সারাটি দিনভর রোজা রাখলে এবং ইফতার করলে মৃত্যুকে আলিঙ্গনের মাধ্যমে।”
— দাউদ আত-তা’ঈ (রাহিমাহুল্লাহ)

“আপনি যদি কোন ভালো কিছু করতে চান, তবে তা আগামীকালের জন্য রেখে দিবেন না; আপনি যদি এমন কিছু করেন যা আখিরাতের সাথে সম্পর্কযুক্ত, তবে যত বেশি সময় ধরে সম্ভব তা করতে থাকুন; যদি নামাজ আদায় করার সময় শয়তান আপনাকে ওয়াসওয়াসা দেয় যে আপনি (নামাজ দীর্ঘ করার মাধ্যমে) লোক দেখানো কাজ (রিয়া) করছেন, তাহলে সে নামাজকে দীর্ঘায়িত করুন।”
— আল-হারিথ ইবনে ওয়াইস

হযরত উসমানের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মুক্ত করে দেয়া দাস হানী বলেনঃ
“উসমান যখন কোন কবরের পাশে দাঁড়াতেন, তিনি এতটা কাঁদতেন যে তার দাড়ি ভিজে যেত।”

আল-খাতীব তার​ আল-জামী(২/৩৮৭) গ্রন্থে ​বর্ণনা করেন যে ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া বলেন:
“এক ব্যক্তি মালিক ইবনে আনাসকে প্রশ্ন করেছিলেন, “হে আবদ-আল্লাহ, আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কোন কিছু কি আছে? তিনি বলেন, যদি কোন কিছু স্মৃতিকে শক্তিশালী করতে পারে তা হলো পাপ করা ছেড়ে দেয়া।” ​

“কোনও ব্যক্তি যদি মানুষের সামনে কথা বলতে গিয়ে দেখে যে মানুষকে শোনাতে খুব ভালো লাগছে, তবে যেন সে চুপ করে। আর যদি দেখে মানুষের সামনে চুপ করে থাকতে খুব ভালো লাগছে, তাহলে যেন বলা আরম্ভ করে।”
— উবাইদুল্লাহ বিন আবী জা’ফার

“যার আত্মসম্মানবোধ আছে সে কোনদিন দুনিয়াবী জীবনকে কোন মূল্য দেয় না।”
— মুহাম্মাদ বিন আল-হানাফিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ)

আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর নাতি, আল-কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ বলেন:
“আমাদের সময়ে মানুষ মুখের কথা শুনে মুগ্ধ হতো না, বরং তারা মানুষের কাজ দেখে মুগ্ধ হতো। কেননা যেকোন ব্যক্তি তো যা ইচ্ছা তা বলতেই পারে।”

“তোমাদের পূর্বে যারা ছিলেন তারা আখিরাতের জীবনের জন্য সাধনা করার পর বাকি চেষ্টাটুকু করতেন দুনিয়ার কাজকর্মের জন্য। কিন্তু আজ তোমরা দুনিয়াবী কাজ শেষ করার পর অবশিষ্ট চেষ্টা করো আখিরাতের জন্য।”
— আওন বিন আবদিল্লাহ

“নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি একাই একটি শহর দখল করে ফেলে তার চেয়েও শক্তিশালী সেই ব্যক্তি যে নিজের কামনাকে জয় করে।”
— সুলাইমান বিন দাউদ (আ)

“যে ব্যক্তি তার নিজের দোষ-ত্রুটিগুলো দেখতে পায়না সে একটা বোকা।”
— ইয়াস বিন মুয়াবিয়াহ

“নিশ্চয়ই একজন বান্দা যতটুকু কর্তব্য পালন করতে পারে তার চাইতে অনেক বেশি পাওয়ার অধিকার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার রয়েছে এবং আমাদের প্রতি তার রাহমাত এতটাই বেশি যে তা গুণে শেষ করা সম্ভব নয়। সুতরাং, সকাল এবং সন্ধ্যায় (অর্থাৎ, সারাটা দিন জুড়ে) অনুতাপকারী হোন (ইস্তিগফার করুন)।”
— তালক ইবনে হাবীব

“আমি আশ্চর্য হয়ে যাই সেই চোখগুলোর কথা ভেবে যা কবরের গহন অন্ধকারে ঘুমানোর সময়ের দৈর্ঘ্য জেনেও ঘুমিয়ে থাকে।”
— মু’আযাহ বিনতে আবদিল্লাহ আল-বাসরিয়্যাহ

“বিনম্র হওয়া মু’মিনদের আচরণের একটি অংশ। নম্রতা হলো মানুষের প্রতি বিনয়ের ডানা নামিয়ে দেয়া, কোমলভাবে কথা বলা এবং তাদের সাথে রূঢ়ভাবে কথা না বলা — এগুলো পারস্পারিক একতা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ উপায়।”
— ইবনে বাত্তাল (রাহিমাহুল্লাহ)

“আমি সেই মানুষগুলোকে দেখে বিস্মিত হই যারা মৃত্যুকে ভয় পেয়ে তা থেকে রক্ষা পেতে খাবার খায়। অথচ জাহান্নামের আগুনের ভয়ে তা থেকে রক্ষা পেতে নিজেদেরকে পাপসমূহ থেকে বিরত রাখে না।”
— ইবনে শুবরুমাহ

আবু হুরায়রা একদিন দু’জন মানুষকে একসাথে দেখতে পেলেন এবং তাদের একজনকে জিজ্ঞাসা করলেন,
‘লোকটি সম্পর্কে আপনার কী হন?’
তিনি উত্তর দিলেন, ‘উনি আমার আব্বা।’
আবু হুরায়রা বললেন, “উনাকে কখনো নাম ধরে ডাকবেন না, তার থেকে সামনা এগিয়ে হাঁটবেন না এবং তার আগেই বসে পড়বেন না।”

ইমাম আবুল ফারাজ ইবনে আল-জাওযি বলেন:
“ইবনে আউন কখনো রাগতেন না। কেউ যদি তাকে রাগিয়ে তুলতো তাহলে তিনি তাকে বলতেন, “আল্লাহ তোমাকে রহম করুক।”

“যখন একজন খুব সম্মানিত মানুষের সাথে আপনি কোথাও বসেন, তখন আপনি খুব সতর্ক থাকেন যাতে আপনি কোন ভুল কথা বলে না ফেলেন। অথচ আপনি জানেন আপনার কথাগুলোতে আল্লাহ নজর রাখছেন এবং তা সত্ত্বেও আপনি যে কথাগুলো বলেন সেগুলো খেয়াল করে বলেন না!”
— হাতিম বিন আল-আ’সিম

বর্ণিত আছে, আল-শাফি’ই (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:
“আমি (আমার শাইখ) ওয়াকীকে আমার খারাপ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপকাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি।
তিনি বলেন, আল্লাহর জ্ঞান হলো একটি আলো এবং আল্লাহর আলো কোন পাপচারীকে দান করা হয় না।”

“হে আদমের সন্তানেরা! তোমরা যদি জানতে চাও আল্লাহর কী বিপুল পরিমাণ রাহমাত তোমাদের উপরে রয়েছে তাহলে শুধু তোমাদের চোখগুলো বন্ধ করো।”
— বকর বিন আবদিল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ)

ভাইদের মধ্যে তো তারাই শ্রেষ্ঠ যারা বলে, “এসো আমরা মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রোজা রাখি”, এবং ভাইদের মধ্যে তারাই নিকৃষ্ট যারা বলে, “এসো আমরা মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া করি এবং পান করি।”
— ইয়াহইয়া ইবনে কাসির

“কোন ব্যক্তিকে তার প্রতিটি ভুলের জন্য বকাবকি করলে, এমনকি ছোটখাটো বিষয়ে অনবরত বকা দিলে তা ভালোবাসা কমে যাবার কারণ হবে।”
— ইমাম আবু হাতিম

“শিক্ষকদের হিংস্র ব্যবহার করার অনুমতি নেই এবং ছাত্রদের অনুমতি নেই উদ্ধত আচরণ করার।”
— মুহাম্মাদ বিন আবদিল-বাকি আল-হাম্বলি

আমারাহ বিন যাদান বর্ণনা করেন, কাহমাস বিন আল-হাসান আমাকে বলেছিলেন, “আমি একটি পাপ করেছিলাম যার অনুশোচনায় আমি চল্লিশটি বছর ধরে কাঁদছি।” আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "সেটি কী ছিলো?”
তিনি বলেন, “আমার এক বন্ধু একবার আমার বাড়িতে অতিথি হয়ে এসেছিলো, তাই (তাকে খাওয়ানোর জন্য) আমি একটি মাছ নিয়ে আসলাম। তার খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমি দাঁড়িয়ে গিয়ে আমার প্রতিবেশির বাড়ির দেয়ালের এক টুকরো মাটি তুলে নিয়েছিলাম যেন আমার অতিথি তার হাত মুছে নিতে পারে। এই সেই পাপ (প্রতিবেশির অনুমুতি ছাড়াই দেয়ালের এক টুকরো মাটি তুলে নেয়া) যার কারণে আমি চল্লিশটি বছর ধরে কাঁদছি।”

“যে স্থানে থাকা আল্লাহ নিষিদ্ধ করেছেন সেখানে আপনার উপস্থিতি এবং যেখানে থাকতে আল্লাহ আদেশ করেছেন সেখানে আপনার অনুপস্থিতির ব্যাপারে সাবধান হোন।”
— আবু হাজিম

“ছেলেদের নৈতিক অধঃপতনের একটি মূল কারণ হলো ছেলেরা একে​ অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়।”
— ইব্রাহিম আল-হারবি

“কোন মুসলিমের অন্তরের জন্য একজন মু’মিনের সাথে মেলামেশা করা এবং তার কাজগুলো খেয়াল করে দেখার মত বেশি কল্যাণকর আর কিছু নেই। অন্যদিকে সে অন্তরের জন্য পাপাচারীদের সাথে মেলামেশা করা এবং তাদের কাজগুলোকে খেয়াল করে দেখার মতন ক্ষতিকর আর কিছু নেই।”
— আহমাদ ইবনে হারব (রাহিমাহুল্লাহ)

“নিজের দোষ-ত্রুটি যে অন্যদের চেয়ে ভালো জানে তার জন্য রয়েছে সুসংবাদ।”
— ইবনে হাজম (রাহিমাহুল্লাহ)

ইবনে আবি মুলাইকাহ বর্ণনা করেন, ইকরিমা বিন আবি জাহল তার মুখে মুসহাফ চেপে ধরতেন আর কাঁদতেন এই বলে যে, “এ আমার রবের গ্রন্থ! আমার মালিকের বলা শব্দগুচ্ছ!”

“আমি এখনকার সময়ের মতন আর কোন সময়ের কথা জানিনা যখন মানুষের এই (হাদিসের) জ্ঞান থাকা এতটা বেশি প্রয়োজন ছিলো।”
— আবু ইসহাক আল-হুওয়াইনি


“আমাদের এমন প্রজন্ম প্রয়োজন যারা ইসলামকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ইসলাম তাদেরকে ধরে রাখবে এমন নয়।”
— ইমাম হাসান আল-বান্না (রাহিমাহুল্লাহ)


আমরা শাইখ আল-আলবানীর কাছে ইমাম হাসান আল-বান্নার বলা একটি কথা শিখেছিলাম — “আপনাদের অন্তরের জগতে ইসলামের শাসনকে প্রতিষ্ঠা করুন, তাহলে আল্লাহ সারা পৃথিবীতে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন।”


সোর্স : https://play.google.com/store/apps/details?id=com.usefulappsbd.islamic_quotes_bangla #ইসলামিক_উক্তি #islamic_quotes

No comments:

Post a Comment